বাংলা৭১নিউজ,(বেনাপোল)প্রতিনিধি: পেয়াজ চাষিদের জন্য সুখবর নিয়ে এলেন যশোর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা। এখন থেকে কৃষককে আর বীজ হিসেবে পেঁয়াজের বাল্ব বা কন্দ ব্যবহার করতে হবে না। সরাসরি বীজ বপন করেই অল্প খরচে মানসম্মত পেঁয়াজ উৎপাদন করতে পারবেন তারা। এ জন্য বিজ্ঞানীরা বিপুল পরিমাণ বীজ উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছেন।
আগামী মৌসুমে সহজ শর্তে কৃষকদের মাঝে এসব পেঁয়াজ সরবরাহ করা হবে বলে গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা জানান।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্র মতে, প্রতিবছরই দেশে পেঁয়াজের সংকট দেখা দেয়। এর সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে পেঁয়াজের বীজ সংকট ও সংরক্ষণের অভাব। যে কারণে বিঘাপ্রতি জমিতে ২০০ কেজি বীজ হিসেবে বাল্ব বা কন্দ ব্যবহার হয়ে থাকে। যার বর্তমান বাজার মূল্যে যদি ২০০ টাকা কেজি ধরা হয় তাহলে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়। ফলে কৃষকের ইচ্ছা থাকলেও খরচের ভয়ে বিপুল পরিমাণ জমিতে পেঁয়াজ চাষ করতে চান না তারা।
কৃষি বিজ্ঞানীরা জানান, এ পদ্ধতিতে পেঁয়াজ চাষ করতে গিয়ে একদিকে কৃষককে যেমন বাড়তি খরচ গুণতে হয় তেমনি ফলনও কম হয়। তাছাড়া পেঁয়াজ ক্ষেত ছত্রাকজনিত নানা রোগ আক্রান্ত হয়। এ অবস্থায় পেঁয়াজ চাষকে সহজলভ্য করতে বিজ্ঞানীরা নানা গবেষণা শুরু করেন। বিশেষ করে পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন করে কৃষক পর্যায়ে সরবরাহ করার উদ্যোগ নেয়া হয়।
কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান জানান, এক বিঘা জমিতে যেখানে ৫ থেকে ৬ মণ পেঁয়াজের বাল্ব বা কন্দ লাগে সেখানে কৃষক যদি পেঁয়াজের বীজ পান তাহলে তারা এক কেজি বীজে ৫ থেকে ৬ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ করতে পারবেন। তাতে কৃষকের বিঘাপ্রতি পেঁয়াজের বীজের খরচ ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা গুণতে হবে না। মাত্র ৫ থেকে ৬ শ টাকা খরচ পড়বে।
আমাদের দেশে যে পেঁয়াজ উৎপাদন হয় তা দিয়ে দেশের মোট চাহিদার ৫৭.১৪ শতাংশ মেটানো সম্ভব। এ ঘাটতি পূরণে সরকারকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করে ৭.৬৩ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়।
এসব দিক বিবেচনা করেই পেঁয়াজ চাষকে সহজলভ্য করার জন্য আমরা বীজ উৎপাদন করে কৃষকের কাছে সরবরাহ করার উদ্যোগ নিয়েছি। উন্নতজাতের বারি-১ জাতের এ পেঁয়াজের বীজ খুব অল্প সময়ের মধ্যে কৃষি বিভাগের মাধ্যমে যশোরসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ