বঙ্গোপসাগরের নোনা জলে পূণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে সানতন ধর্মাবলম্বীদের তিন দিনব্যাপী ঐতিহাসিক রাস উৎসব। পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের সাগর মোহনা দুবলার চরের আলোরকোলে শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) ভোরের সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সনাতন ধর্মের পাঁচ সহাস্রাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু পাপ মোচনের আশায় জোয়ার জলে পূণ্যস্নান করেন। নানা রকম বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে সাগর পারে যান তারা। এ সময় আলোরকোলজুড়ে এক আনন্দমুখর ও ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশ সৃষ্টি হয় সেখানে। স্নান শেষেই পূণ্যার্থীরা যে যার গন্তব্যে ফিরতে শুরু করেন।
বনবিভাগ জানিয়েছে, অন্যান্য বছরের মতো এবার আলোরকোলের ২০০ বছরের ঐতিহাসিক সেই ‘রাস মেলা’ উদযাপন হয়নি। হিন্দু ধর্মের লোক ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম বা দর্শনার্থীদের রাস উৎসবে যাওয়ার অনুমোতি দেওয়া হয়নি। নির্দিষ্ট পাঁচটি রুটে শুধুমাত্র পূণ্যার্থীরা প্রবেশ করেছেন রাসপূজাস্থলে। সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের স্বার্থে রাস মেলা এবং দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বন প্রশাসন থেকে।
বনবিভাগের দুবলা জেলে পল্লী টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রহ্লাদ চন্দ্র রায় বলেন, ভোরের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী পূণ্যার্থীরা সাগরের জোয়ারের নোনা জলে স্নান করেন। স্নান শেষে তারা আলোরকোলের অস্থায়ী মন্দিরে পূজা-আর্চনা করেন। পরে সকাল ১০টার পর থেকেই পূণ্যার্থীরা তাদের বাড়ি ফিরতে শুরু করেন।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, পূণ্যস্নানের মধ্যদিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের তিন দিনের রাস উৎসব শেষ হয়েছে। বনবিভাগের বেধে দেওয়া পাঁচ রুটেই আবার তারা যে যার গন্তব্যে ফিরে যাবেন। গত দুই বছর ধরে উৎসব আয়োজন সীমিত করা হয়েছে এবং জমকালো রাস মেলার অনুমোতি দেওয়া হয়নি। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের স্বার্থে পরবর্তীতে আর মেলার অনুমোতি দেওয়া হবে না।
ডিএফও বেলায়েত হোসেন জানান, এবার রাস উৎসব ঘিরে সুন্দরবনে কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়। অন্যান্য বছর পূণ্যার্থীর ছদ্মবেশে হরিণ শিকারীরা প্রবেশ করতো। কিন্তু এবার সেধরণের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তাছাড়া, পূজারীদের নিরাপত্তায় র্যাব, পুলিশ, কোস্টগার্ড এবং বনবিভাগের কর্মীরা নিয়োজিত ছিলেন।
বাংলা৭১নিউজ/আরকে