বাংলা৭১নিউজ, আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি: আদমদীঘি উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের গৃহবধূ শাকিলা (২৪) কে শারীরিক নির্যাতন ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ১১ ফেব্রুয়ারী বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থানা পুলিশ মামলা না নিয়ে ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা করছে। থানায় মামলা না নেয়ায় নিহতের পরিবার বিচারের আশায় দারে দারে ঘুরছেন। অবশেষে নিহতের মা সালমা বিবি মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার কাউন্সিল, ঢাকা বরাবর একটি অভিযোগ করেছেন। সেই সাথে খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছেন নিহতের মা। নিহত শাকিলা নওগাঁর রানীনগর উপজেলার মধুপুর গ্রামের প্রবাসী সাইফুল ইসলামের মেয়ে।
জানা যায়, গত ৮/৯ বছর পূর্বে আদমদীঘির বাহাদুরপুর গ্রামের আলেফের ছেলে মিঠু (২৮) এর সঙ্গে প্রবাসী সাইফুল ইসলামের মেয়ে শাকিলার বিয়ে হয়। তাদের সংসার জীবনে ওমর ফারুক নামে এক ছেলে সন্তান আছে। বিয়ের পর থেকে শাকিলাকে যৌতুকের জন্য বিভিন্ন ভাবে চাপ দিত স্বামী মিঠু। এ নিয়ে একাধিকবার পারিবারিক ভাবে বৈঠকও হয়। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে প্রথমে এক লাখ ২০ হাজার টাকা দেয়া হয়। বছর যেতে না যেতেই মিঠু বিদেশ যাবে বলে আবার শাকিলার বাবা-মার কাছে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা দাবি করে বসে। শেষ সম্বল জমি বিক্রি করে মিঠুকে ‘ওমান’ যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয় শাকিলার বাবা সাইফুল ইসলাম। বিদেশ যাওয়ার এক বছর পর মিঠু দেশে ফিরে আসে। এরপর মিঠু তৃতীয় দফায় আবারো ২ লাখ টাকা দাবী করে শাকিলার কাছে। টাকা দিতে না পারায় মানষিক ও শারীরিক ভাবে অত্যাচার শুরু হয় শাকিলার উপর। কারণে-অকারণে মিঠু ও তার পরিবারের সদস্যরা নির্যাতন করত শাকিলাকে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি’ মিঠু ও তার পরিবারের লোকজন শাকিলাকে শারীরিক নির্যাতন করে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পরে শাকিলা গ্যাসের ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে তার মাকে সংবাদ দেয়া হয়। সংবাদ পেয়ে শাকিলার মা লোকজন নিয়ে জামাই মিঠুর বাড়িতে গিয়ে দেখেন কেউ নাই। মেয়ে শাকিলার মরদেহ মাটিতে পড়ে আছে। শাকিলার মা সালমা ও অন্যান্য লোকজন শাকিলার শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান। তার মেয়েকে নির্যাতন ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে বুঝতে পারেন। বিষয়টি নিয়ে আদমদীঘি থানায় নিহতে মা সালমা বিবি মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করে একটি ইউডি মামলা হিসাবে গ্রহণ করে বিষয়টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় তাকে। শাকিলার মা সুবিচারের আশায় বিভিন্ন মহলে ধর্ণা দিচ্ছেন।
আদমদীঘি থানার অফিসার ইনর্চাজ আবু সায়িদ মো: ওয়াহেদুজ্জামান বলেন, মিঠু বিদেশ থাকা অবস্থায় শাকিলা পরকিয়ায় জড়িয়ে পরে। দীর্ঘদিনের সম্পর্কে বাড়ি থেকে প্রেমিকের সাথে একবার চলেও গিয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হয় পরকিয়ার সম্পর্কে গ্যাসের ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। যদি শাকিলাকে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয় তাহলে ময়নাতদন্তের রির্পোট হাতে পাওয়ার প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস