সচিবালয়ের সামনে আন্দোলনরত আনসার সদস্যদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় সচিবালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, পুলিশের কাজে ফেরাসহ নানা প্রশ্ন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে ছুড়ে দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম।
সোমবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে নিজের ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি এসব প্রশ্ন ছুড়ে দেন। একই সঙ্গে গতকাল রোববার সচিবালয়ের সামনে ঘটে যাওয়া ঘটনার ব্যখ্যা তুলে ধরেন।
সারজিস আলম ফেসবুক পোস্টে লিখেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করতে চাই- পুলিশ কবে পুরোদমে মাঠে নামবে? সচিবালয়ে নিরাপত্তার এই অবস্থা কেন? ছাত্র-জনতাকে কেন যেতে হবে? আমার ভাইদের ওপর গুলি কেন চললো? এই আর্মস আনসার পেলো কোথায়?
তিনি লিখেন, বিগত ১ সপ্তাহ ধরে ঢাকার সরকারি ও প্রাইভেট অন্তত ২০টির অধিক হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে আমরা আমাদের আহত ভাইদের দেখেছি। ডাক্তার, রোগী, স্টাফদের সঙ্গে কথা বলেছি। এই দুর্নীতিগ্রস্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ভেতর ও বাইরের নানা গল্প জেনেছি। সেগুলো আমরা স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে জানাতে চাই। তিনি আমাদের কথাগুলো শুনতে আমাদের ডাকেন।
তিনি আরও লিখেন, আমাদের ত্রাণ নিয়ে বন্যাদুর্গত এলাকায় যাওয়া ট্রাকগুলো কিংবা যে গাড়িগুলোতে ত্রাণ বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্যাম্পাসে আসছিল সেগুলোও ক্যাম্পাসে পৌঁছাতে পারছিল না। তাছাড়া বন্যাকবলিত এলাকার নানা প্রত্যন্ত প্রান্ত থেকে কল-ম্যাসেজ আসছিল ত্রাণের জন্য। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা, কার্যক্রম ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলতে যাই।
এই দুই বিষয় নিয়ে কথা বলতে যাওয়ার সময় সচিবালয়ের চারপাশের রাস্তাগুলো অবরুদ্ধ করে আনসারদের আন্দোলন দেখতে পাই আমরা। পরে বিষয়টিও আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে জানাই। আমরা জানতে পারি আমাদের পূর্বেই আমাদের অন্য দুই উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলে যৌক্তিক সমাধানের আহ্বান জানান।
তিনি আরও লিখেন, পরে আমাদের দুই উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ তাদের সঙ্গে কথা বলে তখনই আলোচনার আহ্বান জানায় এবং ৭ সদস্যের একটি টিম নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ একাধিকবার আলোচনায় বসে। তাদের অনেক দাবি মেনে নেওয়া হয় এবং বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বাকি দাবিগুলোর বিষয়ে ধৈর্য ধরে যৌক্তিক সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়।
সারজিস অভিযোগ করেন, একটা গোষ্ঠী এসব আলোচনা মানতে চাচ্ছিল না। তাদের কথা ও কাজের ধরনই প্রকাশ করছিল তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন। না হলে সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত আলোচনার পরও সচিবালয়ে সবাইকে অবরুদ্ধ করে রাখার যৌক্তিকতা কি ? অথচ তখন তাদের প্রতিনিধি দল সচিবালয়ের ভেতরেই ছিল। যখন দেশের ২টি বিভাগে প্রায় ১০টি জেলায় লাখ লাখ মানুষ বন্যা কবলিত তখন সেখানে সর্বোচ্চ সহযোগিতা না করে রাষ্ট্রকে এভাবে অস্থিতিশীল করার কারণ কি ?
তিনি আরও লিখেন, পরিশেষে দেশের মানুষের উদ্দেশ্যে একটা কথাই বলবো। ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট সরকারের অত্যাচারতো মুখ বুজে অনেক সহ্য করেছেন। এবার রাষ্ট্র গঠনের জন্য অন্তত কয়েক মাস ধৈর্য ধরুন। একটা সিস্টেম কয়েকদিনে পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।
তিনি লিখেন, ব্যক্তিগত জায়গা থেকে পরিবর্তন হোন, পরামর্শ দিন, ধৈর্য ধরুন অতঃপর প্রশ্ন করুন। আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ আমরা গড়বোই ইনশা আল্লাহ।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ