বাংলা৭১নিউজ,(কক্সবাজার)প্রতিনিধি: কক্সবাজারের উখিয়া জালিয়াপালং সোনাইছড়িতে পুলিশের সামনে প্রতিপক্ষের হামলায় ছাত্রলীগ নেতার মা নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নুরুল আবছার নান্নু। হামলায় তিনি, তার বাবা সাবেক যুবলীগ নেতা আলী হোসেনসহ ৭ জন আহত হয়েছেন বলেও জানা গেছে। এ ঘটনায় পুলিশ উল্টো নিহতের আরেক ছেলেকে আটক করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে হার্ট অ্যাটাকেই ছাত্রলীগ নেতার মায়ের মৃত্যু হয়েছে এবং এ সময় পুলিশ সেখানে ছিল না বলে দাবি করেছেন উখিয়া থানার ওসি মর্জিনা আকতার।
নিহত নুর নাহার উখিয়া জালিয়াপালং সোনাইছড়ির আলী হোসেনের স্ত্রী।
সূত্র জানায়, তিন দিন আগে ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় দু’পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয় মোবারক হোসেন বাদী হয়ে ছাত্রলীগ নেতা নান্নুসহ ৫ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় মামলার আসামিরা বাড়িতে আছে এ খবরে তাদের ধরতে পুলিশ নিয়ে স্থানীয় মেম্বার শামশুল আলমের নেতৃত্বে ২৫-৩০ জন যুবক ছাত্রলীগ নেতা নান্নুর বাড়িতে যায়। এসময় তারা দা, ছুরি, হন্তি, লাঠিসোটাসহ দেশীয় ভারি অস্ত্র নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা নান্নু, নান্নুর ভাই আহমেদ শরীফ, বাবা আলী হোসেনের ওপর হামলা করে।
স্বামী, সন্তানদের মারধর করতে দেখে এগিয়ে আসেন নান্নুর মা নুর নাহার। হামলাকারীরা তাকেও প্রহার করতে ছাড়েননি। এক পর্যায়ে নান্নুর ভাই আহমেদ শরীফকে ধরে পুলিশের কাছে সোপার্দ করে হামলাকারীরা। ঘটনার সময় স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা তাদের উপরও চড়াও হন। তাদের এলোপাতাড়ি দা, কিরিচের কোপ ও লাঠির আঘাতে স্থানীয় মো. উল্লাহ, ছানা উল্লাহ এবং আলী হোসেনসহ আরো বেশ কয়েকজন আহত হন।
এদিকে হামলাকারীদের মারধর ও ঘটনার নির্মমতা সইতে না পেরে ঘটনাস্থলে অজ্ঞান হয়ে পড়েন নান্নুর মা নুর নাহার। তাকে দ্রুত কোটবাজার অরজিন হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আশংকাজনক অবস্থায় যুবলীগ নেতা আলী হোসেনকে উখিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা চলছে।
হামলায় আহত জালিয়াপালং ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নুরুল আবছার নান্নু বলেন, গত কয়েক দিন আগে করোনা প্রতিরোধে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জীবাণুনাশক স্প্রে করে সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড চালাই। এটি সহ্য করতে না পেরে স্থানীয় জামায়াত-শিবিরের নেতারা আমার ওপর হামলা চালায়। এতে আমি আহত হই। এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। এ থেকে বাঁচতে এলাকার ক্রিকেট খেলার ঘটনায় হওয়া মামলায় আমাকে আসামি করে চক্রটি। এর জেরে ১০-১২ জন পুলিশ নিয়ে প্রভাবশালী মেম্বার গ্রুপ আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। হামলায় আমি কোনো রকম প্রাণে বেঁচে গেছি। আমার মা মৃত্যু বরণ করেছেন। আমি মাকেও দেখতে যেতে পারছি না। আমার বড়ভাইকে মারধর করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে। আমি মায়ের হত্যাকারীদের বিচার চাই। করোনার এ চরম মূহূর্তে পুলিশের উপস্থিতিতে এ ঘটনা আমাদের হতবাক করেছে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে উখিয়া থানার ওসি মর্জিনা আকতার মুঠোফোনে বলেন, এটি মিথ্যা কথা। তারা নিয়মিত মামলার আসামি। তাদের ধরতে আমাদের অভিযানের সময় কোনো হামলা হয়নি। হামলার সময় আমরা ঘটনাস্থলে ছিলাম না। হাসপাতালে খবর নিয়ে জেনেছি হার্ট অ্যাটাকে ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে। ওই দু’গ্রুপের মাঝে আগে থেকে বিরোধ চলে আসছে। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করতে ওই নারীর মৃত্যুকে হত্যা হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা চালাচ্ছে ছাত্রলীগের সাবেক নেতার পরিবার।
বাংলা৭১নিউজ/এইচএ