বাংলা৭১নিউজ,চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: পিচঢালাই সড়কের দেখা নেই। গাড়ি-ঘোড়ার চলছেনা। রিকশা আছে, তবে তাতে চড়ে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যাওয়া কম ঝামেলার নয়। ভরসা কেবল একটি মাত্র বাহন নৌকা। চট্টগ্রাম শহরের বর্তমান চিত্র এখন এমনই।
শহরের কেন্দ্রে আগ্রাবাদের অধিবাসী রাশেদ রেজা। সাধারণত রিকশায় কর্মস্থলে আসা যাওয়া করেন। কিন্তু গত কয়েক দিনের দৃশ্য আলাদা। প্রবল বর্ষণ আর উত্তাল সাগরের প্রভাবে তীব্র জলাবদ্ধতায় কার্যত গত দু’দিনে অচল হয়ে পড়েছিলো তার এলাকা। এখন তাকে অফিসে আসা যাওয়া করতে হচ্ছে নৌকায়।
তিনি জানিয়েছেন, শুধু যাতায়াত নয়, সংকট দেখা দিয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য পাওয়ার ক্ষেত্রেও। তার ভাষায়, ‘জরুরি জিনিসপত্র পাওয়া যায় না। ফার্মেসি পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গেছে।’
রাশেদ রেজা একাই নন, কর্মস্থলে যাতায়তের ক্ষেত্রে চট্টগ্রামে অনেকেরই এখন ভরসা কেবল নৌকা। এমনকি চট্টগ্রামের কর অঞ্চল-৪ এর কর্মকর্তাদের নৌকা কেনার খবরও সংবাদ মাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয়েছে। বলা হচ্ছে, সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা যাতে অফিসে যাতায়াত করতে পারেন সেজন্যে সরকারি খরচে এই অফিসের জন্যে দুটো নৌকাও কেনা হয়েছে।
পানিবদ্ধতার কারণে প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে শহরের ব্যবসায়িক কার্যক্রমও। আবার দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল বাজার খাতুনগঞ্জে পণ্য রাখার গোডাউনেও ঢুকে পড়েছে পানি, তাতে করে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন খাতুনগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এহসানুল্লাহ জাহেদী।
তিনি বলেছেন, ‘খুবই বাজে অবস্থা। পানি রেকর্ড করেছে। বড় গোডাউনে পানি উঠেছে। অনেক ব্যবসায়ী কান্নাকাটি করছেন।’
কিন্তু এমন দুর্ভোগ আর কান্নার জন্য যে জলাবদ্ধতা দায়ী সেটি চট্টগ্রামে গত কয়েক বছরের পরিচিতি এক দৃশ্য।
চট্টগ্রামের বেসরকারি সংগঠন পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের নেতা প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদারের মতে, অনেক দিক থেকেই কার্যত অকার্যকর হয়ে গেছে চট্টগ্রাম শহর।
তিনি বলেছেন, ‘আগ্রাবাদ, হালিশহর, বহদ্দারহাট এলাকার অনেকে বাড়িঘর ছেড়েছে। বিভিন্ন বিভাগ আলাদা করে প্রজেক্ট নিচ্ছে, যার কারণে ভবিষ্যতে সঙ্কট আরও বাড়বে।’
বাংলা৭১নিউজ/জেএস