পায়রা বন্দর ২০৩৫ সালে দেশের অর্থনীতিতে সহায়ক শক্তি হিসাবে কাজ করবে। পদ্মা সেতু ও পায়রা বন্দরের কার্যক্রম সমগ্র বাংলাদেশে বিস্তৃত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। ২০৪১ সালের আগেই উন্নত দেশে পদার্পণ করবে। এমন মন্তব্য করেছে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
শনিবার (১৬ জানুয়ারি) নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী পটুয়াখালীতে পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলে জরুরি রক্ষনাবেক্ষণ ড্রেজিং কাজের উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন।
পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলে ৬ দশমিক ৩ মিটার গভীরতা বজায় রাখার লক্ষ্যে জরুরি রক্ষণাবেক্ষণ ড্রেজিং প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং বেলজিয়ামভিত্তিক ড্রেজিং কোম্পানী জান ডে নুল এর মধ্যে ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর এক চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়।
পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের গভীরতা ৬ দশমিক ৩ মিটার বজায় রাখার মাধ্যমে দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের গতিশীলতা ধরে রাখার লক্ষ্যে রাবনাবাদ চ্যানেলের (ইনার ও আউটার চ্যানেল) জরুরি মেইনটেনেন্স (রক্ষনাবেক্ষণ) ড্রেজিং কাজ শুরু হয়েছে।
ড্রেজিংয়ের ফলে বাণিজ্যিক জাহাজের গমনাগমন অব্যাহত থাকবে, কর্মসংস্থান ও রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে এবং দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে। ৭৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১০০-১২৫ মিটার প্রস্থবিশিষ্ট চ্যানেলের (ইনার ও আউটার চ্যানেল) প্রায় ৯ দশমিক ৭৫ মিলিয়ন ঘনমিটার পলি অপসারণ করা হবে। ১৮ মাস সময়ের মধ্যে ড্রেজিং প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত করতে প্রায় ৪৩৭ দশমিক ৩০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। প্রকল্পটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অনুদানে গঠিত পায়রা বন্দরের নিজস্ব তহবিল হতে সংকুলান করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পায়রা বন্দর নির্মাণ প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর একটি স্বপ্নের প্রকল্প। পায়রা বন্দরকে ঘিরে দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেগবান হবে। পায়রা বন্দরকে গতিশীল করতে ড্রেজিং কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। জরুরি রক্ষণাবেক্ষণ ড্রেজিংয়ের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ক্যাপিটাল ড্রেজিং শুরু করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, ক্যাপিটাল ড্রেজিং এর মাধ্যমে রাবনাবাদ চ্যানেলের নাব্যতা বৃদ্ধি করা হবে যার ফলে ১০ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফট বিশিষ্ট বাণিজ্যিক জাহাজ বন্দরে ভিড়তে পারবে। এর ফলে বিপুল সংখ্যক বিদেশি জাহাজ বন্দরে আগমন করবে এবং দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে নতুন মাত্রা সংযোজিত হবে। পায়রা ছিল দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের এক আজন্ম স্বপ্ন।
তিনি বলেন, আমাদের রিজার্ভের পরিমাণ ৪২ বিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। ক্যাপিটাল ড্রেজিং এর কাজটি নিজস্ব অর্থায়নে করতে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ নেতৃত্বে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করতে সক্ষম হয়েছি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্ব দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করতে পারছেন বলেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও চিন্তাগুলো বাস্তবায়ন করতে পারছেন।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, পায়রা বন্দর আমাদের সরকারের একটি জাতীয় অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্প। এই বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ইতোমধ্যে এই বন্দরের প্রথম টার্মিনাল নির্মাণের কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলেছে। এছাড়া বন্দরের সার্ভিস জেটি নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে এবং সংযোগ সড়ক ও আন্দারমানিক নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণ কাজ অল্প সময়ের মধ্যে শুরু হবে।
এসময় অন্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর হুমায়ুন কল্লোল, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কমান্ডার এম রাফিউল হাসান, সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমডোর এম মামুনুর রশীদ, সদস্য (প্রকৌশল ও উন্নয়ন) কমডোর রাজীব ত্রিপুরা এবং ড্রেজিং কোম্পানী জান ডে নুল এর প্রতিনিধি।
বাংলা৭১নিউজ/এমএন