বাংলা৭১নিউজ, নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের লালপুর উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সাবেক সভাপতি ফিরোজ আল হক ভূঁইয়া (৪৫) কে চাঁদাবাজীর মামলায় গ্রেপ্তার করা নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুটি পক্ষ পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছে।
শুক্র ও শনিবার এ দুটি সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সম্মেলনে তাঁকে মুক্তি দেয়ার দাবি এক পক্ষের, আরেক পক্ষের প্রশ্ন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর নির্দেশে গ্রেপ্তারকৃত সভাপতির মুক্তি দাবি করে কিভাবে?
শনিবার বিকেলে নাটোর শহরের একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে লালপুরের চংধুপইল ইউনিয়ন কৃষকলীগের আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ কমিটির সাবেক সহ সম্পাদক শামীম আহমেদ (প্রয়াত সাংসদ মমতাজ উদ্দিন ও সংরক্ষিত আসনের সাবেক সাংসদ শেফালী মমতাজের ছেলে) উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল বাকি, উপজেলা কৃষক লীগের সদস্য তিতুমীর আহমেদ প্রমুখ। সভায় শামীম আহমেদ বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, ৫ আগষ্ট বিকেলে লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও দলিল লেখক সমিতির সাবেক সভাপতি ফিরোজ আল হক ভুঁইয়া আলমগীর হোসেনকে দলিল লেখক সমিতির কার্যালয়ে আটকে রেখে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে তাঁকে বেদম মারপিট করা হয়। এ ঘটনায় ফিরোজের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে লালপুর থানা মামলা নেয় না। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে মামলা নিয়ে ফিরোজকে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠায়। পরের দিন লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে দেয়া লিখিত বক্তব্যে ফিরোজের মুক্তি দাবি করেন।
শামীম আহমেদ বলেন, ফিরোজ ২০১৫ সালে গোপালপুর পৌর যুবদলের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে আওয়ামী লীগে যোগদেন। তিনি পেশায় একজন দলিল লেখক। দলবদলের পর তিনি লালপুর দলিল লেখক সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। তখন থেকে তিনি প্রতিদিন অন্যায়ভাবে দলিল সম্পাদনকারিদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করে আসছেন। দলীয় নেতাদের চাঁদার ভাগ দিয়ে তিনি অল্প সময়ের মধ্যে সাবরেজিস্ট্রি অফিসে একচ্ছত্র ক্ষমতাবান হয়ে ওঠেন। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জমা পড়ে। নির্যাতনের শিকার আলমগীর হোসেন সাংবাদিকদের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন,যে অনুপ্রবেশকারীকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁর মুক্তি চেয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা আফতাব হোসেন কিভাবে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেন। তিনি সমাজে শান্তি ও শৃংক্ষলার স্বার্থে ফিরোজকে মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আটক রাখার দাবি জানান। তিনি আরও দাবি করেন, ফিরোজের দলিল লেখক লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। তিনি ওই সমিতির এখন কেউ নন, তাই আওয়ামী লীগ নেতার তার পক্ষে অবস্থান নেওয়ার সুযোগ নাই।
এদিকে লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ফিরোজ আল হক ভুঁইয়াকে আওয়ামী লীগের একজন একনিষ্ঠ নেতা আখ্যায়িত করে তাঁর মুক্তি দাবি করা হয়েছে। একইসাথে মামলার বাদীকে একজন মাদক ব্যবসায়ী ও চাঁদাবাজ হিসাবে দাবি করা হয়েছে। ফিরোজকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে বলেও দাবি করা হয়।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস