বাংলা৭১নিউজ, জাহেদুল হক, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের আনোয়ারায় পারকি সমুদ্র সৈকত সড়কের বুড়ির জালের পুলটি ভেঙ্গে মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পুলটির বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হলেও সংস্কার না করায় যান চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এরপরও ব্যস্ততম এই সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করছে। ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
জানা যায়,উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর মধ্যে পারকি সমুদ্র সৈকত সড়কটি অন্যতম। কারণ পর্যটকদের পারকি সৈকতে আসা-যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম এটি। এছাড়া উপকূলীয় দুই ইউনিয়ন রায়পুর ও বারশতবাসির যাতায়াতও এ সড়ক দিয়ে। শুধু তাই নয়,জেলেদের আহরিত সামুদ্রিক মৎস্য পরিবহণও এ সড়ক পথে যাতায়াত করে থাকে।
ব্যস্ততম এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে বিভিন্ন প্রকারের শত শত যানবাহন। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় মোরার প্রভাবে সড়কটির বুড়ির জালের পুলটি ভেঙ্গে যাওয়ায় যানবাহন চলাচলে বিঘœ ঘটছে। এতে করে সেখানে ছোটখাটো দুর্ঘটনাসহ নিত্য দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে দুর-দুরান্ত থেকে আগত পারকি সৈকতের পর্যটকরা এক্ষেত্রে বেশি ভুক্তভোগী। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির এ অবস্থার সৃষ্টি হলেও কোন ধরণের পদক্ষেপ না নেওয়ায় এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী মানুষেরা ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে।
অপরদিকে সড়কটির নাজুক পরিস্থিতির কারণে অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে ওই সড়কের যাত্রী সাধারণকে। বটতলী শাহ্ মোহছেন আউলিয়া ডিগ্রি কলেজের ছাত্র সালাহ উদ্দিন বলেন,বন্দর কমিউনিটি সেন্টার থেকে পারকি সৈকতে আসতে ২৫ টাকার ভাড়া ৩৫ টাকা দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। কারণ সড়কের বেহাল অবস্থার জন্যেই এমনটি হচ্ছে। জনদুর্ভোগ লাঘবে কোন ধরণের উদ্যোগ না নেওয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এদিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) সূত্র বলেছে, পুলটির সংস্কারের জন্য জরুরী ভিত্তিক ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জসিম এন্ড ব্রাদার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি পেয়ে সংস্কার কাজ শুরু করেছে। তবে স্থানীয়রা বলছেন এখনো পর্যন্ত কাজে হাত দেয়নি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।
এ ব্যাপারে বারশত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম শাহ্ ওমরা হজ্জ পালনে দেশের বাইরে থাকায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। সরেজমিন সিইউএফএল কলোনীর দক্ষিণ পাশে গিয়ে দেখা গেছে,সড়কটির বুড়ির জাল নামক পুলটি দেবে গিয়ে মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। সড়কের বেশিরভাগ অংশ ভেঙ্গে অন্তত ১৫ ফুট গভীর হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা সেখানে ইটের স্তুপ ও লাল পতাকার সংকেত দিয়ে রেখেছে। তারপরও ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে অসংখ্য হালকা ও ভারী যানবাহন। যার কারণে যে কোন মুহুর্তে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটার আশংকা করা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা এম ওয়াহেদ শাহ্ জানান, এ পুল দিয়ে সিইউএফএল কলোনীসহ দুধকুমড়া,গোবাদিয়া ও রাঙ্গাদিয়া গ্রামের পানি সমুদ্রে প্রবাহিত হয়। ঘুর্ণিঝড় মোরার প্রভাবে এটি ভেঙ্গে পড়ে। এখনো পর্যন্ত পুলটির সংস্কারে কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। নগরীর আগ্রবাদ থেকে পারকি সৈকতে আসা পর্যটক প্রকাশ পাল বলেন,এ রোডে নতুন হওয়ায় অসাবধানতাবশত গাড়িটি পুলের কিনারায় আটকে পড়ে। ভাগ্যক্রমে বড় ধরণের দুর্ঘটনা থেকে রেহায় পেয়েছি। জানতে চাইলে আনোয়ারা উপজেলা প্রকৌশলী তসলিমা জাহান জানান,পুলটির সংস্কারের জন্য ৬ লাখ টাকা জরুরী ভিত্তিক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন পেয়ে জসিম এন্ড ব্রাদার্স কাজটি শুরু করেছে। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস