বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: মানব ও অর্থপাচারের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম পাপুলকে রিমান্ডে নিয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কুয়েতের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী।
গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার রাতে মুশরেফ এলাকা থেকে আটক করে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি পাপুলকে। রোববার কুয়েতের রেসিডেন্স ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পাবলিক প্রসিকিউশন তাকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে। সোমবার দ্বিতীয় দিনের মতো তাকে কুয়েতের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বলে জানিয়েছেন কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা।
এদিকে, এমপি পাপুলকে আটক করার কারণ এবং তার অবস্থান সম্পর্কে জানতে চেয়ে কুয়েত সরকারকে কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাস চিঠি লিখেছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালাম।
গালফ নিউজ লিখেছে, পাঁচ বাংলাদেশির স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পাপুলের বিরুদ্ধে মানবপাচার, অর্থপাচার ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শোষণের অভিযোগ এনেছে প্রসিকিউশন। ওই ব্যক্তিরা প্রসিকিউশনকে জানিয়েছিল, তিন হাজার কুয়েতি দিনার খরচ করে পাপুলের মাধ্যমে সেদেশে গেছে তারা। শুধু তাই নয়, প্রতিবছর ভিসা নবায়নের জন্যও তাকে টাকা দিতে হতো।
এর আগে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, কুয়েতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তাকে এমপির গ্রেফতারের খবর জানিয়েছেন। সেখানে ব্যবসার কারণে একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ শাহরিয়ার আলম বলেছেন, ‘আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানি না। আমাদের দূতাবাস স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সাথে খোঁজখবর রাখছে। এমনকি একজন দোষী আইনিভাবে নিজের দেশ থেকে কনস্যুলার সহায়তা পাওয়ার অধিকার রাখে।’
সন্দেহভাজন বাংলাদেশি এমপির বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, কুয়েতে শহিদের প্রতিষ্ঠান কাজ পাওয়ার জন্য সেখানকার সরকারি কর্মকর্তাদেরকে ঘুষ হিসেবে পাঁচটি বিলাসবহুল গাড়ি দিয়েছিলেন।
গত ফেব্রুয়ারিতে শহিদ তার বিরুদ্ধে কুয়েতে মানবপাচারের অভিযোগ, ভিত্তিহীন ও মনগড়া বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। কুয়েতের সংবাদমাধ্যমে শহিদের বিরুদ্ধে ভিসা বাণিজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে অর্থ পাচারের অভিযোগও এসেছিল। তবে এসব অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে শহিদ দাবি করেছিলেন, তিনি জনশক্তি রপ্তানিতেও জড়িত নন, মানবপাচার তো দূরের কথা।
কুয়েতের দৈনিক আল কাবাসে বাংলাদেশি এক এমপিসহ মোট তিনজনের বিরুদ্ধে মানবপাচারের অভিযোগে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনের বলা হয়েছিল, তিনটি বড় কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে তারা বাংলাদেশ থেকে ২০ হাজারের বেশি কর্মী নিয়ে গিয়েছে এবং এ থেকে ১৬ কোটি ডলারের বেশি তারা অবৈধ আয় করেছে। ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়, অভিযুক্ত এমপি যুক্তরাষ্ট্রে একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠার জন্য এই পুরো অর্থ পাচার করেন। শহিদ ইসলাম জানিয়েছিল, কুয়েতে গ্রেপ্তার হওয়া ওই ব্যক্তির সাথে তার কোনও যোগসূত্র নেই।
শহিদ ইসলাম, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান একইসঙ্গে এনআরবি সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কোম্পানির চেয়ারম্যান এবং ক্রিস্টাল এনার্জি লিমিটেডের পরিচালক। এছাড়া, তিনি দ্য মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী। প্রতিষ্ঠানটি কুয়েত, ওমান এবং জর্ডানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিচ্ছন্নতা, নিরাপত্তা থেকে শুরু করে ভারী সরঞ্জামাদি ভাড়া দেয়।
বাংলা৭১নিউজ/এবি