বাংলা৭১নিউজ, শামছুর রহমান শিশির, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সাধারণ অর্থে সাগর বলতে বিস্তৃর্ণ জলসীমাকে বোঝায়। ‘সেই সাগরে পানি নেই !’- এমন কথা শুনতে বেশ বেমানান লাগাটাই স্বাভাবিক। অবিশ্বাস্য হলেও এটাই সত্য যে, হুরাসাগরে পানি নেই !
প্রলয়ঙ্কারী, প্রবলা, প্রমত্তা, প্রগলভা, উত্তাল, ভয়াল, বিপদসংকূল, সমুদ্রের যোগ্য সহচরী যমুনার শাখা নদী এক সময়ের অারেক রাক্ষুসী নদী হুরাসাগর বর্তমানে ভারতের মরুকরণ প্রক্রিয়ার কু-প্রভাবে শুকিয়ে মরে গেছে। ষাঁটের দশকেও হুরাসাগরে বিজলী বাতি জ্বলা জাহাজ চলাচল করলেও সেই প্রলয়ঙ্কারী পানিবিহীন হুরাসাগরে বর্তমানে বিরাজ করছে শুনশান নিরবতা। ভারত ও ভূটান থেকে বাংলাদেশে আগত নদ-নদী, উপনদীগুলোর উজানে বাঁধ, ক্রসবাঁধ, ড্যাম, রাবার ড্যাম নির্মাণ করে প্রতিবেশী দেশ ভারত একতরফা ভাবে পানি প্রত্যাহার করে নেয়ায় হুরাসাগরের বক্ষে বর্তমানে কোথাও বা চলছে ফসলের চাষাবাদ, আবার কোথাও বা শিশুদের ক্রিকেট খেলার মাঠে পরিণত হয়েছে নদীটি।
তাছাড়া ফারাক্কা বাঁধও বাংলাদেশের জন্য মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। ভারত নদ-নদীগুলোর স্বাভাবিক গতিপথ রূদ্ধ করে দেওয়ায় সুজলা-সুফলা, শষ্য-শ্যামলা বাংলাদেশ ক্রমান্বয়ে মিনি মরু অঞ্চলে পরিণত হতে চলেছে। ভারতের মরুকরণের কু-প্রভাব এ দেশের কৃষিখাত ছাড়াও প্রাকৃতিক পরিবেশকে করছে ভারসাম্যহীন। এসব কারণে দেশের নদীগুলোর গতি প্রকৃতির দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে। আমরা হারাতে বসেছি আমাদের অনেক গ্রামীন ঐহিত্য।
আবহমান কাল থেকে গ্রামীন জনপদের মানুষের প্রিয় সুস্বাদু দেশী মাছ এখন সোনার হরিণের মতো। এখন আর দেখা যায় না গ্রামীন ঐহিত্যের অনুসঙ্গ নৌকা বাইচ, খরা জাল, সূতি ফাঁদ, সেঁচের মাধ্যম দাঁড়। মৎসভান্ডার সংকুচিত বা শুকানোর ফলে অনেক মৎসজীবী আজ বেকার।
পর্যাপ্ত পানির অভাবে কৃষি খাতের পাশাপাশি মৎস্য খাতসহ বিভিন্ন খাতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হচ্ছে যা জাতীয় অর্থনীতিকেও ক্ষতিগ্রস্থ করছে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস