চলতি মৌসুমি মৌসুমে রেকর্ড বৃষ্টিপাতের কারণে দেশ জুড়ে তৈরি হয়েছে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি।
বন্যায় বিধ্বস্ত পাকিস্তানে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে দেশের সরকার। পাকিস্তানে অবিরাম বৃষ্টিপাতকে ‘জলবায়ু-প্রবর্তিত মহাকাব্যিক মানবিক সংকট’ বলে অভিহিত করে পাকিস্তান সরকার বৃহস্পতিবার, ২৫ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে ‘জাতীয় জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করে। খবর সংবাদমাধ্যম সূত্রের।
আজ, শুক্রবার, ২৬ আগস্ট স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে বলা হয়েছে, এমন দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে পাকিস্তান সরকারের প্রয়োজন ‘৭২ বিলিয়ন রুপি’। সাহায্যের জন্য দেশটি ইতিমধ্যে দাতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, প্রবল বৃষ্টির জেরে সৃষ্ট বন্যায় পাকিস্তানে এখনও পর্যন্ত ৯৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৩৪৩ জন শিশু।
এছাড়া বন্যায় বাড়ি-ঘর হারিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন অন্তত ৩ কোটি মানুষ। পাকিস্তানের জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শেরি রেহমান জানিয়েছেন, দেশটিতে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য ইতোমধ্যে ‘ওয়ার রুম’ স্থাপন করা হয়েছে। তিনি জানান, অবিরাম ‘আগ্রাসী ও ভারী বৃষ্টিপাত’ ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করা কঠিন করে তুলেছে। এমনকি হেলিকপ্টারে করে বন্যাদুর্গত এলাকায় যাওয়াও মুশকিল হয়ে উঠেছে।
জানা গিয়েছে, বন্যায় এখন পর্যন্ত দেশটিতে সবচেয়ে বিপর্যস্ত অবস্থা সিন্ধু প্রদেশে। এখানে ১৪ জুনের পর থেকে এখনও পর্যন্ত বন্যা ও ভারী বৃষ্টিতে ৩০৬ জন মারা গিয়েছেন। বেলুচিস্তানে মারা গিয়েছেন ২৩৪ জন। খাইবার পাখতুনখোয়া ও পাঞ্জাব প্রদেশে মারা গিয়েছেন যথাক্রমে ১৮৫ ও ১৬৫ জন। এ ছাড়া আজাদ কাশ্মীরে ৩৭ জন নিহত হয়েছেন। চলমান বর্ষার বৃষ্টিতে গিলগিট-বালতিস্তান অঞ্চলে ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। একই সময়ে ইসলামাবাদে মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে একজনের।
এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেলুচিস্তান ও সিন্ধু প্রদেশ। সিন্ধুতে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩৯৫ শতাংশ ও বেলুচিস্তানে ৩৭৯ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম বেলুচিস্তান এবং পাঞ্জাব প্রদেশে নতুন করে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ফলে স্থানীয় প্রশাসন সেখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। এনডিএমএ’র তথ্য অনুসারে, পাকিস্তানে আগস্ট মাসে ১৬৬.৮ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। যেখানে বছরের এই সময়টিতে সেখানে গড়ে ৪৮ মিমি বৃষ্টি হয়ে থাকে। অর্থাৎ চলতি আগস্ট মাসে দেশটিতে বৃষ্টিপাত ২৪১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ