বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, রাজবাড়ীর পাংশায় প্রস্তাবিত গঙ্গা ব্যারাজ হচ্ছে না। প্রকল্পটি বাতিল করা হয়েছে। অন্য কোনো স্থানে এ ব্যারাজ নির্মাণে একটি উচ্চ পর্যায়ের কারিগরি কমিটি গঠন করা হচ্ছে।

সচিবালয়ে আজ চীনের পানিসম্পদ মন্ত্রী চেন লির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘গঙ্গা ব্যারাজ নিয়ে কারো কোনো দ্বিমত নেই। তবে এটি রাজবাড়ীর পাংশায় হচ্ছে না। এটার নকশা নিয়ে প্রশ্ন আছে। এখন এটা কোথায় হবে, কীভাবে হবে সেজন্য উচ্চ পর্যায়ের কারিগরি কমিটি গঠন করা হচ্ছে।

‘১৯৯৬ সালে ভারতের সঙ্গে পানি চুক্তি অনুযায়ী যে পানি পাচ্ছি, তার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সেটা কীভাবে করা হবে, অন্য আর কী কী উপায় আছে- তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানাবে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি।

কমিটি কবে নাগাদ হতে পারে জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, ‘কমিটি অচিরেই করে ফেলব।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, একটি উচ্চ পর্যায়ের কারিগরি কমিটি করা হবে। অন্য অপশন কী কী আছে তা খুঁজে বের করার জন্য। প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি পেলে আমরা কমিটি গঠন করব।’

চীনের একটি কোম্পানি এ মুহূর্তে গঙ্গা ব্যারাজ নিয়ে স্টাডি করছে, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর কি সেটা বন্ধ থাকবে- এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন কোম্পানি আসে, তারা নিজেরা স্বপ্রণোদিত হয়ে কিছু স্টাডি করে আমাদের দেয়।’

‘এখন বাঁধটা গঙ্গার শাখা নদীতে হবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টির নেতা আনিসুল বলেন, ‘কমিটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবে বিকল্প কী? সে বিকল্প যদি শাখা নদীতে ব্যারাজ করা যায়, করবে। অন্য কোনো কিছু যদি করা যায় করবে।’

চীনের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সুনির্দিষ্ট বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘পানিসম্পদ উন্নয়ন, বিশেষ করে নদীশাসন, বন্যানিয়ন্ত্রসহ দুর্যোগ মোকাবেলার ক্ষেত্রে চীনের অনেক অভিজ্ঞতা আছে। যা আমরা কাজে লাগাতে পারি।’

তিনি আরো বলেন, চীনের সহযোগিতায় আমাদের নদীগুলো খননের ব্যাপারে আমরা আগ্রহ প্রকাশ করেছি। এতে তারাও সম্মত হয়েছেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘চীনের সঙ্গে আমাদের একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) রয়েছে, একটি সমন্বিত প্রকল্পের মাধ্যমে ব্রহ্মপুত্র, গঙ্গা ও মেঘনার ৪০০ কিলোমিটার নদী ব্যবস্থাপনার বিষয়ে। এটার বিষয়ে একটি স্টাডি রিপোর্ট পাওয়ার পর আমরা এটিকে এগিয়ে নিতে চাই। আমরা চাচ্ছি চীন যাতে এতে যুক্ত হয়।’

‘হাইড্রোলজিক্যাল তথ্য-উপাত্ত আদান-প্রদানের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এখন আমরা তিন থেকে চারদিন আগে বন্যার পূর্বাভাস দিতে পারি। চীনকে অনুরোধ করেছি এটা কীভাবে আরও বেশি সময় আগে করা যায় সে বিষয়ে সহায়তা চাওয়া হয়েছে- বলেন তিনি।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাফর আহমেদ খান, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

তাছাড়া বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিং কিয়াংসহ চীন সরকারের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলা৭১নিউজ/সিএইস