বাংলা৭১নিউজ, মহসিন মিলন। বেনাপোল প্রতিনিধি : টানা পাঁচদিন বন্ধ থাকার পর সোমবার রাত ১১ টায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে শুরু হয়েছে দু দেশের মধ্যে আমদানি রফতানি বানিজ্য। মংগলবার সকাল থেকে ১৭৫ ট্রাক মালামাল আমদানি হয়েছে বেনাপোল বন্দরে।
বেনাপোল বন্দর ২৪ ঘন্টায় ৭ দিন কার্যক্রম চালু থাকায় রাতেই কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে বেনাপোল বন্দরে। প্রধান সড়কের ওপর যে সব ট্রাক পণ্য নিয়ে এই ক’দিন দাঁড়িয়ে ছিল, তার মধ্যে পচনশীল পণ্যবোঝাই ট্রাক অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে ভারতীয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। রাতেই ৭৪ ট্রাক মালামাল আমদানি হয় বেনাপোল বন্রদ দিয়ে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল থেকে সোমবার রাত এগারোটা পর্যšত একটানা পাঁচদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি বন্ধ ছিল। ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে কারপাস জটিলাতার কারনে আমদানি-রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারতের পেট্রাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। ফলে দুই দেশের বন্দর এলাকায় আটকা পড়ে হাজার হাজার পণ্যবাহী ট্রাক; যার অধিকাংশেই বাংলাদেশের শিল্প কলকারখানা ও রফতানিমুখি গার্মেন্ট শিল্পের কাঁচামালসহ পচনশীল পণ্য ছিল। ধর্মঘটের কারনে গত ৫ দিনে বেনাপোল বন্দরে প্রায় ৫০ কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়ছে সরকার। ধর্মঘটের কারনে ইতিমধ্যে অধিকাংশ শিল্প কলকারখানা ও গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিজ এর কাচামাল আমদানির বিদেশী অর্ডার বাতিল হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে বন্দরে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ পন্য ও যানজট।
ওপারের আমদানি রফতানি কারক সমিতির সাধারন সম্পাদক প্রবীর মিত্র জানান, সোমবার বিকেল থেকে রাত এগারোটা পর্যন্ত ভারতের পেট্রাপোলে বন্দরে দফায় দফায় বৈঠক করেন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। আগের নিয়মে রফতানি কার্যক্রম চালু সহ রাজস্ব আয়ের দিকে লক্ষ্য রেখে সবাইকে নমনীয় হয়ে কাজ করার আহ্বান জানায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এতে সম্মতি জানায় আন্দোলনকারীরা।
ভারতের পেট্রাপোল চেকপোস্ট সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ারঅ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী জানান, বৈঠকে আমাদের ন্যায়সঙ্গত দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। তাই বিকেল রাত এগারোটা থেকে পেট্রপোল-বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম চালু করেছি। সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাক ও পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাকগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে পুরোদমে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম চলবে।’
বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস’র ডেপুটি কমিশনার মারুফুল ইসলাম জানান, সোমবার রাত থেকে পেট্রাপোল-বেনাপোল বন্দও দিয়ে আবার আমদানি-রফতানি চালু হয়েছে। আমরা দ্রুততার সাথে কাজ করার জন্য সকলকে নির্দেশনা দিযেছি।
বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক আমিনুল ইসলাম জানান, ভারতীয় কাস্টমস ও ব্যবসায়ীদের সাথে দীর্ঘ ফলপ্রসু বৈঠকে পুনরায় দু দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি সচল হয়েছে। বন্দরে যে সব পচনশীল পণ্য প্রবেশ করেছে, তা দ্রুত খালাশ দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পণ্যজট কমাতে প্রয়োজনে সারারাত কাজ হবে বন্দরের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস