বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা : ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি কারাগারে বন্দি জঙ্গি সদস্য আনোয়ার হোসেন ওরফে জামাই ফারুককে ফেরত আনতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে বাংলাদেশের আইনশৃংখলা বাহিনী। চলছে কূটনৈতিক তৎপরতাও।
ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ’র সঙ্গে এ বিষয়ে রোববার পুলিশ ও র্যাবের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
ফারুককে দেশে ফেরত আনা গেলে তার কাছ থেকে জেএমবির অস্ত্র ভাণ্ডারসংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন উভয় সংস্থার কর্মকর্তারা। তবে দিল্লি ফারুককে ফেরত দেবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
ফারুক ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে জঙ্গি ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনার মূল হোতা। তাকে দেশে ফেরত এনে তদন্ত ও বিচারের মুখোমুখি করা গেলে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এ প্রসঙ্গে বলেন, ঢাকার সঙ্গে দিল্লির চমৎকার সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের সূত্র ধরে এবং জঙ্গিবাদ মোকাবেলার অংশ হিসেবে কলকাতায় আটক জামাই ফারুককে ঢাকায় আনার চেষ্টা চলছে। তার কাছ থেকে জঙ্গিসংক্রান্ত আরও তথ্য বের করবেন গোয়েন্দারা।
জানা গেছে, ফারুকের সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেএমবির দায়িত্বশীল মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজানের যোগাযোগ ছিল। বড় মিজান গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলায় জঙ্গিদের অস্ত্র সরবরাহ করে। তার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে পলাতক জঙ্গিদের যোগসূত্র আছে। এ কারণে জামাই ফারুক ঢাকার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সম্প্রতি র্যাব ও পুলিশের দুটি পৃথক টিম ফারুককে কলকাতায় গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এ সময় তার কাছ থেকে ময়মনসিংহের ত্রিশালে বোমারু মিজানের অবস্থান জানার চেষ্টা করে ঢাকার আইনশৃংখলা বাহিনী। একই সঙ্গে ভারতে থেকে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে কীভাবে অস্ত্র আসে এ ব্যাপারে ফারুককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জেরার মুখে ফারুক বেশ কিছু তথ্যও দেয়।
জানতে চাইলে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, আন্তঃদেশীয় অপরাধ মোকাবেলা ও জঙ্গিবাদ দমনে রিয়াল টাইম (তাৎক্ষণিক) গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় হয়। জামাই ফারুককে দেশে ফেরত আনার ব্যাপারে আমরা চেষ্টা করছি। তাকে পাওয়া গেলে, গুলশান হামলার জন্য ভারত থেকে যে অস্ত্র আসে সে বিষয়ে তথ্য জানা যাবে।
তিনি জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেএমবির নেতা বড় মিজানকেও আমরা খুঁজছি। এই মিজানের মাধ্যমেই গুলশানে অস্ত্র সরবরাহ করা হয়।
ভারতের এনআইএ’র সঙ্গে রিয়াল টাইম তথ্য আদান-প্রদান করে ঢাকার এমন একটি দায়িত্বশীল গোয়েন্দা সূত্র জানায়, গুলশান ও শোলাকিয়া হামলার পর ২৬ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা থেকে আনোয়ার হোসেন ওরফে জামাই ফারুকসহ ছয় জঙ্গিকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স এবং এনআইএ। তাদের মধ্যে জামাই ফারুক এনআইএ কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে।
এনআইএর তিন কর্মকর্তা কাঞ্চন মিত্রা, সৌমিত্র ধর ও অমলেন্দু ধরের সঙ্গে ঢাকার কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে নিয়মিত তথ্য বিনিময় হচ্ছে।
বাংলা৭১নিউজ/সি