বাংলা৭১নিউজ, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরের মুন্ডুমালা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা (তহসিলদার) আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে ভূমিহীন পরিবারের বসত ঘর ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, গত বৃহস্প্রতিবার বাধাইড় ইউপির ঘোলকান্দর গ্রামে তহসিলদার আব্দুস সাত্তার ওই বাড়ি ভাঙচুর করে, এ সময় বাধা দিতে গেলে পুরুষদের গ্রেফতার ও নারীদের অশ্লীল ভাষায় গালাগাল এবং শ্লীলতাহানী ঘটানো হয় বলেও তারা গণম্যধ্যম কর্মীদের কাছে অভিযোগ করেছে।
আর বসতঘর হারিয়ে ভূমিহীন পরিবারটি এখন খোলা আকাশের মানবেতর জীবনযাপন করছে।
এদিকে ঘটনার খবর জানা জানি হলে এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে, উঠেছে সমালোচনার ঝড়, সাধারণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার দেখা দিয়েছে, এক খন্ড জমি নিয়ে প্রশাসনের এমন অবস্থান আসলে সরকারি জমি উদ্ধার না নেপথ্যে রহস্য রয়েছে। কারণ সেখানে কমপক্ষে আরো ১০টি বসত ঘর থাকলেও কেবলমাত্র ওই একটা ভাংচুর করা হয়েছে।
সচেতন মহলের অভিমত, ঘটনা স্থল সংলগ্ন গোলায়পাড়ায় ফসলি জমিতে অবৈধ ইট ভাটায় ফসলি জমির উর্বরা মাটি (টপসয়েল) ব্যবহার ও কাঠ পোড়ানো হচ্ছে, ঝিনাখৈর এবং হাপানিয়া গ্রামে সরকারি খাস সম্পত্তি বিক্রি ও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে পজিশন বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি ভূমিগ্রাসী চক্র। অথচ এতো কিছু আড়াল করে রহস্যজনক কারণে প্রশাসনের চোখ পড়েছে ভূমিহীনের এক খন্ড জমির ওপর এর মাযেযা কি? উপজেলা ভূমি অফিসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, আদালতের আদেশ ব্যতিত বসত ঘর ভাঙচুর করা ঠিক নয় অনৈতিকও বটে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তানোরের বাধাইড় ইউপির ঝিনাথৈর মৌজায়, আরএস-খতিয়ান নম্বর ১৯০ ও আরএস দাগ নম্বর ১৫৫৯, শ্রেণী ভিটা ও জমির পরিমান ৯ শতক। বাধাইড় ইউপির ঘোলকান্দর গ্রামের ভূমিহীন জাবেদ আলীর পুত্র শাফিউল ইসলাম ওই সম্পতি প্রায় ২০ বছর ধরে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোগদখল করে আসছে। এছাড়াও ওই সম্পত্তি বৈধভাবে লীজ গ্রহণের জন্য শাফিউল চলতি বছরের ১৬ মে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর আবেদন করেছেন।
কিন্তু এতো কিছুর পরেও উপজেলা প্রশাসন অজ্ঞাত কারণে ভূমিহীনের এক টুকরো জমি উদ্ধারে আদাজল খেয়ে নামে ও বৃহ¯প্রতিবার বিকেলে শাফিউলের বাড়ি ভাঙচুর করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে, তাদের ভূমিকায় মনে হচ্ছে উপজেলায় এই একটি মাত্র বাড়ি সরকারি খাস জমিতে রয়েছে। এদিকে এ বাড়ি ভাঙচুরের খবর জানাজানি হলেও এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুন্ডুমালা ইউপি ভূমি অফিসের কর্মকর্তা (তহসিলদার) আব্দুস সাত্তার অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ন্যায়-অন্যায় বুঝি না ইউএনও স্যার ওই ঘর ভেঙ্গে জমি উদ্ধার করতে নির্দেশ নিয়েছেন, আর তিনি সেটা বাস্তায়ন করেছেন মাত্র।
এব্যাপারে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাঃ শওকাত আলী বলেন, তারা ওই জমি লীজ গ্রহণের জন্য ভূমি অফিসে আবেদন করেছেন, তবে লীজ গ্রহণের আগেই তারা অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করায় সেটা উচ্ছেদ করে সরকারি সম্পত্তি উদ্ধার করা হয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস