বাংলা৭১নিউজ, নাজিম বকাউল, ফরিদপুর থেকে : ২০১৫ সালের ১৮ আগষ্ট রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সিনিয়র সহকারী সচিব মাহফুজা আখতার স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ গেজেট অতিরিক্ত সংখ্যায় ফরিদপুরের সিএ্যান্ডবি ঘাটকে “ফরিদপুর নদী বন্দর” ঘোষনা করা হয়। আর ২০১৭ সালের ০৪ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর নদী বন্দর হিসেবে ইজারা দেয়া হয়। পদ্মা নদীর সংলগ্ন ফরিদপুরের সদর উপজেলার উত্তরের সীমানা ডিক্রির চর ইউনিয়নের টেপুরা কান্দি, দক্ষিণের সীমানা আলীয়াবাদ ইউনিয়নের সাদিপুর মৌজা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।
নদীবন্দর ঘোষনা হলেও এখনো শুরু হয়নি উন্নয়ন কাজ। অদ্যবদি পদ্মানদীতে ড্রেজিং না হওয়ায় নাব্যতা সংকটে পড়েছে ঘাট এলাকা। এতে ঘাটে ভিড়তে পারছেনা পন্যবাঘী কার্গো ও বড় বড় ট্রলার। ঘাট থেকে ৫/৬ কিলোমিটার দুরের পদ্মানদীতে আটকে আছে এসব মালবাহী যান।
আটকে থাকা বাহনের নাবিক ও সহযোগরিা জানান, মাঝারি ধরণের পন্যবাহী নৌযান চলাচলের জন্যে কমপক্ষে আটফুট নাব্যতা থাকার প্রয়োজন হয়, কিন্তু পদ্মানদীর ওই অংশে কোথাও কোথাও নাব্যতা রয়েছে চারফুটেরও কম। এতে মালবাহী নৌযান নিয়ে ঘাটে পৌছানো যাচ্ছেনা। অনেকে আবার সপ্তাহকালের অধিক সময় ধরে এখানে আটকে আছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়ছেন নৌযান মালিক ও ব্যাবসায়ীরা।
এদিকে এ নৌপথে গম আনয়নকারী শরিফুল ইসলাম ও সিমেন্ট ব্যবসায়ী হেলাল রহমান জানান, সময় মত মালামাল না আসায় ও আটকে থাকা নৌযান থেকে ছোট ছোট নৌযান ব্যাবহার করে পন্য খালাস করে ঘাটে আনা ক্ষতির মুখে পড়ছেন তারা। তাই অবিলম্বে ব্যাবস্থা গ্রহনের দাবী তাদের।
সাবেক কাউন্সিলর এমএ সালাম লাল মিয়া জানান, এই ঘাটকে ঘিরে রয়েছে ৫-৬ হাজার শ্রমিকের জীবন ও জীবিকা। যাদের একটি বড় অংশ অলস সময় কাটাচ্ছেন। শ্রমিকনেতা ও জনপ্রতিনিধি মনে করেন, এঅবস্থা চলতে থাকলে নৌযানে পন্য পরিবহন কমে যাবে এতে বেকার হয়ে পড়বে শ্রমিকরা।
ঘাট ইজারাদার কর্তৃপক্ষ নাফিজুল ইসলাম তাপস জানান, এলজিআরডি মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টচায় সিএন্ডবি ঘাট ফরিদপুর নদী বন্দরে উন্নীত হয়েছে। বর্তমানে চট্রগ্রাম, নারায়নগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন বন্দর থেকে সরাসরি পন্য আসে ফরিদপুর নদী বন্দরে। আর ফরিদপুর থেকে প্রতিদিন গরু ও ধান, পাটসহ বিভিন্ন পন্য পরিবহন করা হয় বিভিন্ন এলাকায় এবং বিভিন্ন বন্দর থেকে সিমেন্ট, বালু, কয়লা, রডসহ অন্তত ৫০ ধরণের পন্য আনা-নেওয়া করা হয়। তিনি মনে করেন, নাব্যতা সংকট দুরীভুত না হলে মালামাল পরিবহন করে যাবে, এতে কমে যাবে রাজস্ব আদায়। এছাড়া ঘাটের পল্টুনসহ উন্নয়ন না করা হলে ঐতিহ্য হারাবে এ ঘাট।
যদিও বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে এরই মধ্যে কাজ শুরু কর্তৃপক্ষ। জরিপ শেষে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগবে বলে জানান বিআইডব্লিউটিএ এর উপ পরিচালক (সার্ভে) আশফাকুর রহমান।
চলতি বছরে ফরিদপুর নদী বন্দর ৩৭লক্ষ টাকায় ইজারা দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বন্দরের সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে নদী পথে পন্য পরিবহনে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে, এতে সরকারের রাজস্বও বেড়ে যাবে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস