রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:০৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
চুরির মামলা তদন্তে মিললো অবৈধ অস্ত্রের সন্ধান লভ্যাংশ ঘোষণার অনুমতি পেলো যমুনা ব্যাংক বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে জাতীয়ভাবে উৎসাহিত করে পুরস্কার পাচ্ছেন যারা বিকাশে টেন মিনিট স্কুলের ফি পেমেন্টে ২০০ টাকা ক্যাশব্যাক দফায় দফায় কমছে সোনার দাম, এবার কমলো ৩১৫ টাকা নৌ পুলিশের অভিযানে অবৈধ জাল ও মাছের পোনাসহ আটক ৫১ সোমবার দেশে ফিরছেন প্রধানমন্ত্রী ১৫০০ কোটির মাইলফলক ছুঁলো পদ্মা সেতুর টোল আদায় বাংলাদেশকে ১৪৬ রানের টার্গেট দিলো ভারত শ্রমিকদের জন্য কর্মবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে : স্পিকার প্রাথমিকের শূন্য পদে নিয়োগে পদক্ষেপ নিতে বলল সংসদীয় কমিটি নেত্রীর জন্য জান দেওয়া নয়, সিদ্ধান্ত মানার আহ্বান : দীপু মনি দাবদাহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা-বন্ধ নিয়ে যা বললেন শিক্ষামন্ত্রী কোরবানির জন্য প্রস্তুত ১ কোটি ৩০ লাখ পশু, আমদানি নয় বঙ্গোপসাগর থেকে ভেসে এসেছে টর্পেডো সদৃশ বস্তু এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ৯-১১ মের মধ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কেবল ব্যবসা করলে চলবে না : শিল্পমন্ত্রী আইনগত সহায়তা পাওয়া করুণা নয় : আইনমন্ত্রী কোটালীপাড়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা বিনামূল্যে ছাতা-খাবার স্যালাইন পাচ্ছেন ৩৫ হাজার রিকশাচালক

‘পদ্মার ভাঙন: পূর্বাভাস ছিল, কিন্তু করা হয়নি কিছুই’ – বলছে সরকারি গবেষণা সংস্থা

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় শনিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
  • ২০৭ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,শরিয়তপুর প্রতিনিধি: বাংলাদেশে শরিয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কাছে পদ্মা নদীর ভাঙন সম্পর্কে প্রায় চার মাস আগেই পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিলো, দাবি করেছে সরকারেরই একটি গবেষণা সংস্থা।

পদ্মা নদীর ভাঙনে নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলার পাঁচ হাজারের মতো বাড়ি ঘর নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। কিন্তু আগেভাগে পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও সে ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা।

সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সার্ভিসেস বলছে, তাদের বাৎসরিক প্রতিবেদনে পূর্বাভাস ছিল যে এবার বড় ধরণের ভাঙন হবে।

ভাঙনে যারা ঘরবাড়ি হারিয়েছেন তাদের একজন নড়িয়া উপজেলার মুলফৎগঞ্জের বাসিন্দা মারিয়া আক্তার যূথী। মা, দুই বোন ও এক ভাইকে নিয়ে আত্মীয় বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি।

“যে বাড়িতে আমি ছোট থেকে বড় হইছি, আমাদের সেই বাড়ির পেছনে সুন্দর একটা বাঁশঝাড় ছিল, ফুলের বাগান ছিল, একটা উঠান ছিল। তিরিশ সেকেন্ডের মধ্যে চোখের সামনে সবকিছু পদ্মা নদী হয়ে গেলো” – মৃত বাবার রেখে যাওয়া একমাত্র ভিটে বাড়িটুকু কিভাবে চোখের সামনে পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে তার বর্ণনা করতে গিয়ে বলছিলেন তিনি।

যূথী বলছিলেন – যে রাস্তা দিয়ে স্কুলে যেতেন, যে স্কুলে পড়ালেখা করেছেন, তার কাছেই ছিল যে মসজিদ আর হাসপাতাল – সব কিছু এখন নদী গর্ভে।

নড়িয়া উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের ব্যবসায়ী ও সাবেক একজন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইমাম হোসেন দেওয়ান বলছিলেন, ১৯৯৬ সালে প্রথম তাদের এলাকায় ভাঙন দেখেছেন। আজ যেখানে পদ্মা নদী, তারও পাঁচ ছয় কিলোমিটার ভেতরে একসময় জমি দেখেছেন তিনি।

২০০৯ সালে প্রথম তাদের গ্রামের কাছাকাছি আসতে শুরু করলো পদ্মার ভাঙন।

মিঃ দেওয়ান বলছিলেন, তারা তখন থেকেই এলাকা রক্ষার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।

২০১২ সালের দিকে দুই কিলোমিটার জায়গা বালির বস্তা দিয়ে অস্থায়ী ভাবে ঠেকানোর চেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু তার অনেক যায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি জানালেন, এ বছর একটি বড় প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি করা হলেও সেটির কোন ধরনের বাস্তবায়ন তারা দেখেন নি।

তিনি বলছেন, “গত বছর থেকে তীব্রতর ভাবে নদী ভাঙা শুরু করলো। তখন তেমন কিছু করা হয়নি। তবে এই বছর জানুয়ারি মাসের দুই তারিখ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুরেশ্বর থেকে কুন্ডেস্বর পর্যন্ত প্রায় নয় কিলোমিটার জায়গা স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ এবং নদীর মধ্যেখানে একটি চ্যানেল কেটে পানি অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য একটি প্রকল্প পাশ করে দিলেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হল, এই যে নয়টি মাস চলে গেলো এ পর্যন্ত সেটি বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণে আমাদের কপালে এখন দুর্দশা।’

কিন্তু এমন দুর্দশা যে নেমে আসছে সে ব্যাপারে আগেভাগেই পূর্বাভাস ছিল।

সরকারের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সার্ভিসেস অন্তত চার মাস আগে তাদের বাৎসরিক প্রতিবেদনে এমন ভাঙনের কথা উল্লেখ করেছিলো বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির সহকারী নির্বাহী পরিচালক ডঃ মমিনুল হক সরকার।

তিনি বলছেন, “প্রতি বছর যেভাবে দেই এবছরও পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিলো এবং এ বছর আমাদের পূর্বাভাস ছিল যে বিরাট ভাঙন হবে। আমাদের যে প্রেডিকশন, দেখা গেছে যে তা প্রায় ঠিকই আছে”

গত বারো বছর ধরে বাংলাদেশের নদী ভাঙন সম্পর্কে পূর্বাভাস দিয়ে আসছে এই সংস্থাটি। সরকারের পানি উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে তারা এমন প্রতিবেদন দিয়ে থাকে।

মিঃ সরকার বলছেন, এখন বর্ষার সময় তেমন কিছুই করা সম্ভব নয়। তিনি বলছেন, “বর্ষার সময় পানি উন্নয়ন বোর্ড অনেক সময় বালির বস্তা দিয়ে থাকে। বালির বস্তা যে সবসময় কাজ করবেই তা বলা যায়না তবে অনেক সময় সাহায্য করে। মুল কাজটি হওয়া উচিত এ বছর পরিকল্পনা করা যে আগামী বছর শুকনার সময় আমরা এই কাজটি করে ফেলবো। তাহলেই শুধু সম্ভব”

কিন্তু এমনিতেই অনেক দেরি হয়ে গেছে। স্থানীয়রা বলছেন, এই কাজ আরো অনেক আগে শুরু হওয়া উচিত ছিল।

একটি স্থায়ী শহর রক্ষা বাঁধের কাজ আরো অনেক আগেই শুরু করা উচিত ছিল। কিন্তু সে ব্যাপারে ঠিক কি করা হচ্ছে জানতে চেয়েছিলাম বাংলাদেশের পানিসম্পদ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেনের কাছে।

তিনি বলছেন, “পানি কমলেই ওখানে এগারোশো কোটি টাকার প্রোটেকশন কাজ শুরু হবে। আর পদ্মার মাঝখানে যেখানে একটা চর ডেভেলপ করেছে ঐ চরটা কাটা হবে। এটা অনুমোদন হয়ে গেছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে এর কন্ট্রাক্ট দেয়া হয়েছে”

কিন্তু ঐ এলাকায় অনেকদিন ধরেই ভাঙন হচ্ছে। স্থায়ী কিছু আরো আগেই করা উচিৎ ছিল কিনা তা জানতে চাইলে মিঃ হোসেন বলেন, “আমাদের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল সবসময় ভাঙে। তাহলে আমাদের পদ্মা, মেঘনা, যমুনা নদীর পুরো দুই পারই বাঁধাই করে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে বাংলাদেশের মাটি হচ্ছে অ্যালুভিয়াল সয়েল। যদি এক পার বাঁধান তাহলে অপর পার ভাঙা শুরু করবে”

তবে তিনি বলছেন এখন বিশেষ অগ্রাধিকার বিবেচনায় এই অঞ্চলের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন করার কাজ শুরু করা হয়েছে।

বাংলা৭১নিউজ/জে আর

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com