বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, দেশে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবেরাহ, মজুত ও মূল্য স্বাভাবিক থাকবে। চাহিদার চেয়ে কয়েকগুন বেশি পণ্যের মজুত রয়েছে। আসন্ন পবিত্র রমজানে ব্যবসায়ী বা ভোক্তাদের আতংকিত হবার কোন কারন নেই। পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে দেশে উৎপাদনের পাশাপাশি চাল, ভোজ্যতেল, ডাল, চিনি, পেঁয়াজ, রশুন,আদাসহ সকল নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করা হয়েছে। সংগত কারনে পবিত্র রমজান মাসে এ সকল নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য ও সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে, মূল্য বৃদ্ধির কোন সম্ভাবনা নেই। বর্তমানে প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি পণ্য মজুত রয়েছে। এ বিষয়ে দেশের প্রচার মাধ্যমগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সঠিক ও বাস্তব সম্মত সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে প্রচার মাধ্যমগুলো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে পারে।
বাণিজ্যমন্ত্রী আজ (০১ এপ্রিল) বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালেেয়র সম্মেলন কক্ষে আসন্ন পবিত্র রমজান উপরক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনাসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে পর্যালোচনা সভায় সভাপতিত্ব করে সাংবাকিদের এ সব কথা বলেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সরকার ব্যবসায়ীদের সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি কারক ও স্থানীয় ব্যবসায়ীগণ জানিয়েছেন, কোন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি হবে না বা সরবরাহে ঘাটতি থাকবে না। কোন পণ্যের কৃত্তিম সংকটের সম্ভাবনা নেই। শুধু রমজান মাসেই নয়, সারা বছর দেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য ও সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে।
উল্লেখ্য, দেশে বছরে ১৫ লাখ মে. টন এবং রমজান মাসে আরো ২.৫ লাখ মে.টন মোট ১৭.৫ লাখ মে. টন ভোজ্য তেলের চাহিদা রয়েছে। গত বছর দেশীয় উৎপাদন ছিল ৭.০৫ মে. টন এবং আমদানি করা হয়েছিল ২৯.২ লাখ মে. টন। এ বছর গত ৮ মাসে আমদানি হয়েছে ১৪.৩১ লাখ মে. টন। বছরে চিনির চাহিদা ১৬ লাখ মে. টন, রমজান মাসে অতিরিক্ত প্রয়োজন হয় আরো ৩ লাখ মে.টন সর্বমোট বছরে চাহিদা ১৯ লাখ মে. টন। গত বছর চিনি আমদানি হয়েছে ১৭.৩৭ লাখ মে.টন এ বছর আট মাসে আমদানি হয়েছে ৩.৬৫ লাখ মে. টন এবং স্থানীয় ভাবে উৎপাদন হয়েছে ৬৮,৫৬২ মে. টন। বছরে ছোলার চাহিদা ১ লাখ মে.টন এবং রমজান মাসে আরো ৮০ হাজার মে. টন প্রয়োজন হয়। গত বছর ছোলা আমদানি হয়েছে ৫.০৮ লাখ মে.টন এবং এ বছর আট মাসে আমদানি হয়েছে ১.৯৮ মে.টন। পেঁয়াজের সরবরাহ পর্যাপ্ত রয়েছে ও মূল্যও স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে। অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত পর্যাপ্ত রয়েছে এবং মূল্য স্বাভাবিক রয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব শুভাশীষ বসু, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব শাহাবুদ্দিন আহমদ, বাংলাদেশ টেরিফ কমিশনের চেয়ারম্যান জহিরউদ্দিন আহমেদ, টিসিবি-এর চেয়ারম্যান ব্রি.জে. সালেহ, তথ্য মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মোশাররফ হোসেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব একরামূল হক, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. মফিকুল ইসলাম লস্কর, আমদানি ও রপ্তানি অধিদফতরের প্রধান নিয়ন্ত্রক এ আর এম নজমুস ছাকিল, মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি, বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
পরে মন্ত্রী বাংলাদেশ স্টিল এসোসিয়েশন ও সিমেন্ট এসোসিয়েমনের নেতৃবৃন্দের সাথে দেশে চলমান রড ও সিমেন্টর মূল্য বৃদ্ধি রোধে করণীয় নিয়ে আলোচনা করেন। এ সময় একবিসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, মীর গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর নাছির উদ্দিন, রিহাবের প্রেসিডেন্ট আলমগীর শামসুল আলামিন, বাংলাদেশ স্টিল এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট, সিমেন্ট এসোসিয়েমনের প্রেসিডেন্ট এবং এ শিল্পেন সাথে সংশ্লিষ্ট সেক্টরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস