পটুয়াখালীতে গত ৬ দিনের টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বসত ঘরে পানি ওঠায় চুলা জ্বলেনি অনেকের। সবেচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। পানিতে ভেসে গেছে অসংখ্য মাছের ঘের ও পুকুর। দুশ্চিন্তায় রয়েছেন মৌসুমী সবজি ও আমন চাষীরা।
সোমবার (৭ আগস্ট) সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় জেলার কলাপাড়া উপজেলায় ১৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবাহওয়া অফিস। এছাড়া, সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর বেশ উত্তাল হয়ে উঠেছে। সমুদ্র তটে আছড়ে পড়ছে বড় বড় ঢেউ। এতে বিলীন হচ্ছে সৈকতের গাছপালা।
আবাহওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপকূলীয় এলাকা দিয়ে আজও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই পটুয়াখালীর পায়রা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে আজও ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সকল মাছধরা ট্রলারসমূহকে নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে।
কলাপাড়া টিয়াখালী ইউনিয়নের পশ্চিম বাদুরতলী গ্রামের সজিব মিয়া বলেন, বৃষ্টির পানিতে আমাদের ঘরের মধ্যে পানি উঠেছে। নির্ঘুম রাত কাটিয়েছি। রান্নাও বন্ধ। ঘর থেকে বের হওয়া অনেকটা কষ্ট। তারপরও বাজার থেকে খাবার এনেছি। এভাবে বৃষ্টি হলে আমাদের ঘর একেবারে তলিয়ে যাবে।
কলাপাড়া পৌর শহরের চিংগড়িয়া এলাকার রিকশাচালক স্বপন মিয়া বলেন, মঙ্গলবার হাটের দিন, তাও বাজারে মানুষের আনাগোনা খুব কম। গত এক সপ্তাহ ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন সড়কেও পানি জমেছে। বেশি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। তাই যাত্রী অনেকটা কম। গতকাল সারা দিনে মাত্র ৩০০ টাকা আয় করেছি।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এআরএম সাইফুল্লাহ জানান, এখন পর্যন্ত কৃষিখাতে তেমন ক্ষতি হয়নি। তবে আরও বৃষ্টি হলে ও জলাবদ্ধতা থাকলে সবজি চাষীরা ক্ষতির মুখে পড়বেন।
পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী জানান, উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। আকাশে মেঘ এবং মেঘের গর্জন বাড়তে পারে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা বৃষ্টির ধারা অব্যাহত থাকতে পারে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ