বাংলা৭১নিউজ,কামাল হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের মল্লিকপুরে মহানন্দা নদীতে একটি ব্রিজের অভাবে প্রতিদিন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন প্রায় ২৫ হাজার মানুষ। দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, মহানন্দা নদীর মল্লিকপুর ঘাটের একদিক নাচোল ও অপরদিক শিবগঞ্জ উপজেলায়। এ ঘাট দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ২৫ হাজার মানুষ পার হন। তার মধ্যে বেশি চলাচল করেন চককীর্তি ইউনিয়নের চকনরেন্দ্র, গোষাই বাড়ি, পোলাডাঙ্গা, লহালামারী, চড়তলা, চাঁদপুর, আখিরা, সাহেব গ্রাম, বির্মষী ধাইনগর ইউনিয়নের রানীনগর গ্রামের মানুষজন। এছাড়াও সহজ পথ হিসাবে শিবগঞ্জের, কানসাট, খাসের হাট, শ্যামপুর মনাকষার লোকজনও এই এই ঘাট দিয়ে নিয়মিত চলাচল করেন। কিন্তু সেতু না থাকায় এসব মানুষের একমাত্র বাহন নৌকা।
স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ আলমগীর কবির জানান, এই ঘাট দিয়ে শিবগঞ্জ উপজেলার ২০ হাজার ও নাচোলের খলসি মহিপুর, মল্লিকপুর এলাকার প্রায় ৫ হাজার মানুষ স্কুল কলেজ, কৃষি, শিক্ষাসহ বিভিন্ন কাজে প্রতিদিন চলাচল করেন। প্রতিদিন নদী পার হয়ে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় তাদের। বিশেষ করে স্কুল-কলেজে পড়–য়া শিক্ষার্থী ও রোগীদের নৌকায় ঘাট পার হতে কষ্ট পেতে হয়। মল্লিকপুর এলাকার পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত যাতায়াত করে চককীর্তি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের অন্তত দেড় থেকে দুই হাজার শিক্ষার্থী। তারা নিয়মিত ওই ঘাটটি দিয়ে যাতায়াত করে। তাদেরকে নৌকা ভাড়া ও ঘাটের ভাড়াও দিতে হয়। ফলে তাদের কষ্ট করেও হলে টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে ঘাট ও নৌকার টাকা পরিশোধ করতে হয়।
মল্লিকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী রাজিয়া সুলতানা জুলি জানান, ব্রিজ না থাকায় প্রতিদিন তাকেসহ তার সহপাঠিদের অনেক দুর পথ পাঁয়ে হেটে স্কুলে যেতে হয়। এছাড়া সময় মত নৌকা না পাওয়ায় স্কুলে যেতে দেরিও হয় তাদের। একারণে মাঝে মধ্যেই শিক্ষকদের বকা খেতে হয়। খলসি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র বারিউল ইসলাম নিরব জানান, ঘাটে নৌকার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাড়িয়ে থাকতে হয়। সময় মত নৌকা পাওয়া যায়না।
ফলে স্কুলে সময় মত পৌছানো কষ্টকর হয়ে পড়ে। এছাড়া পরিবার থেকে নিয়মিত যে পরিমাণ খরচ দেয়া হয় সে টাকা নৌকায় ও ঘাটের ভাড়া বাবদ শেষ হয়ে যায়। তার দাবি- ঘাটটিতে একটি ব্রিজ নির্মাণ হলে সময় ও আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে বাঁচবে তারা। বির্মষী এলাকার আম ব্যবসায়ী মো. বাইরুল ইসলাম বলেন, এখানকার মানুষের প্রধান আয়ের উৎস হচ্ছে আম। ব্রিজটি নির্মাণ হলে তারা সহজেই এলাকার আম চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরসহ বিভিন্ন বাজারে নিয়ে যেতে পারবেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে ২০০৮-০৯ সালে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার লিখিত ভাবে আবেদন করা হয়। সে আবেদনের প্রেক্ষিতে এলজিইডির ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ঘাটটি একাধিকবার পরিদর্শন করেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে অদ্যবধি ব্রিজটি নির্মাণ না হওয়ায় হতাশ ভুক্তভোগীরা।
নাচোলের ফতেপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জানান, নদীর দুই তীরের বাসিন্দাদের প্রাণের দাবি একটি ব্রীজ নির্মাণ। কিন্তু সংসদ সদস্যদের প্রতিশ্রুতিতেই ঝুলে আছে ব্রীজ নির্মাণ। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পরও কেন ব্রীজ নির্মাণে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছেনা এটা বিস্ময়ের ব্যাপার।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস