বাংলা৭১নিউজ,নেত্রকোনা প্রতিনিধি: নেত্রকোনা থেকে এ কে এম আব্দুল্লাহ ঃ নেত্রকোনায় ৬দিন ব্যাপী বই মেলায় রেকর্ড পরিমান প্রায় ২৭ লক্ষ টাকার বই বিক্রি হয়েছে।
মহান একুশে ফেব্রুয়ারী ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসন উদ্যোগে পুরাতন কালেক্টরেট ভবনের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে গত ১৬ ফেব্রুয়ারী থেকে ২১ ফেব্রুয়ারী ৬ দিন ব্যাপী এই বই মেলার আয়োজন করা হয়।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এবারের বই মেলায় ২১টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়। মেলায় প্রথম দিন থেকেই বই প্রেমী শিশু কিশোর আবাল বৃদ্ধ বনিতার উপস্থিতি ছিল লক্ষনীয়। মেলায় এবার রেকর্ড পরিমান বই বিক্রি হয়েছে। আয়োজক কর্তৃপক্ষ জানায়, এবারের মেলায় প্রায় ২৭ লক্ষ টাকার বই বিক্রি হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাবিহা সুলতানা বলেন, ভাষা শহীদদের প্রতি বিন¤্র শ্রদ্ধা, বাংলা সাহিত্যের প্রসার, বর্তমান শিশু কিশোর ও যুব সমাজকে মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ থেকে দূরে রাখতে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতেই মূলত বই মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
জেলা পুস্তক বিক্রেতা সমিতির সভাপতি উৎপল ভট্টাচার্য বলেন, মেলায় সব দিক সুন্দর হলেও ব্যবস্থাপনায় কিছু কিছু ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়েছে। দূর দূরান্ত এলাকা থেকে মেলায় আগত সাহিত্য প্রেমী ও দর্শকরা পানীয় জল ও টয়লেটের ব্যবস্থা না থাকায় বেশ বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে।
তরুণ প্রজন্মের জনপ্রিয় কবি তানভীর জাহান চৌধুরী বলেন, বই জাতির মেধা ও মনন গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই বই মেলার পরিধি ও সময় বাড়িয়ে এক পক্ষকাল করার অনুরোধ জানাচ্ছি। নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েদেরকে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হলে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি বাহিরের বই পড়তে ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসাহিত করতে হবে। তাহলেই ছাত্র-ছাত্রীরা ভবিষ্যতে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে।
আরেক তরুণ কবি ইভান অনিরুদ্ধ বলেন, বই মেলায় নতুন নতুন কবি সাহিত্যিকদের বইয়ের মোড়ক উন্মোচন, তাদের লেখা নিয়ে আলোচনা সভার ফাঁকে ফাঁকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করলে একদিকে মেলার কলেবর বৃদ্ধি পাবে অপরদিকে দর্শনার্থীর সংখ্যা আরো বাড়বে বলে আমি মনে করি।
রূপক লাইব্রেরীর স্বত্তাধিকারী ফরিদুল ইসলাম রূপক বলেন, মেলায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, জনপ্রিয় কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ, বিজ্ঞান বিষয়ক লেখক জাফর ইকবাল, কবি নির্মলেন্দু গুণ, হেলাল হাফিজের বইয়ের পাশাপাশি নেত্রকোনার লেখক মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী, অধ্যাপক ননী গোপাল সরকার, ভালবাসার কবি তানভীর জাহান চৌধুরী, ছড়াকার সঞ্জয় সরকার, কথা সাহিত্যিক ইভান অনিরুদ্ধ, সাজ্জাদ খান, এনামুল হক পলাশ, মামুন সিরাজী, কবি সাজেদা পারভীন, আসমা আক্তার সঞ্চিতা, জালাল দেওয়ানের বই কম বেশী বিক্রি হয়েছে।
বিভিন্ন স্টল মালিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মেলায় বই প্রেমীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে কবি তানভীর জাহান চৌধুরীর দ্বিতীয় কবিতা গ্রন্থ ‘ভালোবাসার সয় না আমার, দুঃখ হয় না পর’ বইটি। এটি মেলায় সর্বাধিক বিক্রিত বই। মেলায় ছোট সোনামনিদের বইও ভাল বিক্রি হয়েছে।
নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম বলেন, যে উদ্দেশ্য নিয়ে বই মেলার আয়োজন করা হয়েছে, সেটি সফল হয়েছে। মেলা আয়োজনে যে সব ভূল ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়েছে, আগামীতে তা দূর করা হবে। সবাই চাইলে বই মেলা পক্ষকাল ব্যাপী করা হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এবি