ফরিদপুরের সদরপুরের বিভিন্ন নদ-নদী,খাল-বিল,পদ্মার চর ও পুকুর-নালা থেকে নির্বিঘ্নে চলছে বালু উত্তোলন। বিশেষ করে প্রভাবশালীদের মদনে বালু ব্যবসায়ীরা নির্ভয়ে বিরতিহীনভাবে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের অবৈধ কর্মযজ্ঞ।
জানা গেছে, উপজেলার চর বিষ্ণুপুর, ঢেউখলী, ভাসান চর ও আকোটের চর ইউনিয়নের বিভিন্নস্থানে দিনরাত চলছে প্রায় ২০টি ড্রেজার মেশিন। পদ্মা নদীর সরকারি সংযোগ খালে দুটি ড্রেজার দিয়ে বালু কাটা হচ্ছে। এর ফলে খালের দুই পাশে মাটি ধসে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এভাবে বালু উত্তোলন চলতে থাকলে নদীর তীর ও কৃষি জমি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।
এলাকাবাসীদের অভিযোগ, জরিপের ডাঙ্গী ও তার আশপাশের এলাকায় কমপক্ষে আটটি ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। ড্রেজার মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলার সাহস পান না। বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কোনো উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না।
জানা যায়, উপজেলার এই ড্রেজার চক্র অনেক প্রভাবশালী। এই চক্রের লতা কাজী, মিনা মোল্লা, গণেশ, রফিকসহ কয়েকজন পদ্মা নদীর সংযোগ খাল, পদ্মার চর ও ঢেউখালী এলাকা নিয়ন্ত্রণ করেন। অন্যদিকে, উপজেলার চর বিষ্ণুপুর, ভাসানচর ও কৃষ্ণপুর এলাকা নুরুজ্জামান, বশির, গিয়াস প্রামাণিক, বিল্লাল হোসেন, আমান, শরিফুল, কালাম সরদার, জুলহাস, সহিদ মেম্বর, ইউছুফ বেপারীসহ বেশ কয়েকজন নিয়ন্ত্রণ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, এভাবে প্রকাশ্যে চোখের সামনে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন চলছে। কিন্তু প্রশাসন দেখেও দেখছে না। এতে কৃষি জমি ও নদ-নদী ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। প্রশাসন ড্রেজার দিয়ে দ্রুত মাটি কাটা বন্ধ না করলে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে।
এ ব্যাপারে ড্রেজার দিয়ে বালু কাটার সঙ্গে জড়িতদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। ঘটনাস্থলে তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও অভিযুক্ত মিনা মোল্লা ও নুরুজ্জামানের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাদের মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে আকোটের চর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আসলাম ব্যাপারী বলেন, অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু কেটে ফসলি জমিসহ বিভিন্নস্থানে জায়গা জমি কেটে শেষ করে দিচ্ছে। ড্রেজার দিয়ে যারা বালু কাটে তাদের বিরুদ্ধে আমি জিহাদ ঘোষণা করেছি। আমি একাই লড়ে যাচ্ছি। স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। তাতেও কোনো কাজ হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন অবৈধ। উপজেলায় ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের ব্যাপারে আমি জানতাম না। সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।