বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:২৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
যাত্রাবাড়ীতে বিপন্ন প্রজাতির হনুমান পাচারের সময় গ্রেপ্তার ২ ব্যারিস্টার আরমানের স্ত্রীকে হেনস্তা করিয়েছিলেন টিউলিপ: রিপোর্ট কামরুল-পলকসহ ৫ জন নতুন মামলায় গ্রেফতার বেনজীরের স্ত্রী ও মেয়ের আয়কর নথি জব্দের আদেশ ভৈরব থানার লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার অবশেষে মায়ের বুকে ছেলে পোষ্য কোটা বাতিলসহ ৯ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের অনশন বাঘাবাড়ী নৌবন্দর নাব্য সংকট, ভিড়তে পারছে না জাহাজ নিয়োগ দুর্নীতি : ওয়াসার তাকসিমসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা নির্বাচন সংস্কারে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদের ১১ প্রস্তাব লন্ডনে পৌঁছেছেন খালেদা জিয়া ট্রাম্পের মানচিত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন অঙ্গরাজ্য কানাডা ২০২৪ সালে সড়কে নিহত ৭ হাজারের বেশি : রোড সেফটি ফাউন্ডেশন সিরিয়ার কুর্দি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অভিযানের হুমকি তুরস্কের টিসিবির নতুন চেয়ারম্যান ব্রি. জেনারেল ফয়সাল আজাদ একনেকে ৪ হাজার কোটি টাকার ১০ প্রকল্প অনুমোদন ঢাকায় ছিনতাই বেড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করলেন ডিএমপি কমিশনার বিডিআরের নিরপরাধ সদস্যদের মুক্তির দাবিতে পদযাত্রায় পুলিশের বাধা রায়েরবাজারে পরিত্যক্ত অবস্থায় ২৯ রাউন্ড গুলি উদ্ধার ফেলানীর পরিবারের দায়িত্ব নিলেন আসিফ মাহমুদ

নিরীক্ষা করে শিক্ষা উপকরণেও প্রণোদনা দিন

বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা:
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ৫২ বার পড়া হয়েছে

মহামারির ক্রান্তিকালেই ১২ সেপ্টেম্বর খুলছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনায় এনে প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির বাড়বাড়ন্তে সরকার বারবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। শেষতক খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তে আনন্দ বইছে শিক্ষাপাড়ায়। ধারণা করা হচ্ছে, শিক্ষার উপকরণ ও টিউশন ফি বাবদ শত শত কোটি টাকার অর্থনীতিও ফের চাঙা হবে।

কিন্তু সে আনন্দ কি সবার ঘরেই? নিরানন্দও তো আছে! করোনার বিষে জর্জিরত মানুষ। বিশেষ করে নিম্ন, নিম্নমধ্যবিত্ত গোছের অনেকেই দিশেহারা। কর্মহীন লাখ লাখ মানুষ। আয় না থাকায় পথে বসেছেন কেউ কেউ। তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ কী? কীভাবে মিলবে শিক্ষা উপকরণ?

লেখক, গবেষক ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অর্থনীতিবিদ ড. ফরাসউদ্দিন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের কাছে।

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী  বলেন, সমাজে বৈষম্য বাড়ছিল আগে থেকেই। করোনার সময় এই বৈষম্য আরো তীব্র হয়েছে। দেখা যাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলেও অনেকের সন্তান আসতেই পারবে না। অনেকেই বেকার হয়ে পড়ছেন। আয় নেই।

‘সরকার করোনাকালে ভর্তুকি দিচ্ছে। কিন্তু শিক্ষার উন্নয়ন না হলে এই বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠা সম্ভব না। এ কারণে শিক্ষায়ও ভর্তুকি জরুরি। বিশেষ করে সরকারকে বলবো, জরুরি নিরীক্ষা করে শিক্ষা উপকরণে ভর্তুকি দিন। ১৭ মাস ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। অথচ, সরকার এখানে কোনো গুরুত্ব দেয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা দরকার, বিকল্প কী হতে পারে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টিকার আয়োজন করা, এসব নিয়ে কোনো ভাবনা নেই।’

এই গবেষক বলেন, আমলানির্ভর সরকার হওয়ার কারণে শিক্ষায় কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। তবে আমি মনে করি, শিক্ষার উন্নয়নে শুধু সরকারের উপর নির্ভর করলেই চলবে না। শিক্ষার উন্নয়ন একটি সামাজিক উন্নয়ন। এ কারণে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকেও এগিয়ে আসতে হবে। সামাজিক, রাজনৈতিক প্রতিনিধিরাও এখানে ভূমিকা রাখতে পারেন।

jagonews24

অর্থনীতিবিদ ড. ফরাসউদ্দীনের কাছে মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, মহামারির এই সময়কে স্বাভাবিক বলার সুযোগ নেই। এ কারণে যে কোনো সিদ্ধান্তই বিশেষভাবে নিতে হবে। ১৯৯৮ সালে বড় বন্যা হয়েছিল। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দেড় কোটি মানুষকে টানা ৯ মাস সাহায্য-সহযোগিতা করেছিল।

‘এবারও এমন উদ্যোগ নেওয়া দরকার। বর্তমান প্রশাসন ও অবসরপ্রাপ্ত আমলা এবং রাজনীতিবিদদের নিয়ে বিশেষ সংখ্যাতাত্ত্বিক অনুসন্ধান চালানো দরকার। আমি মনে করি, দশদিনের মধ্যে পুরো বিষয়টি আমলে আনা সম্ভব হবে। যদি এক কোটি শিক্ষার্থী থাকে, তাহলে এর মধ্যে ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর জরুরি সাহায্যের দরকার পড়বে এবং এই সাহায্য নগদ দিতে হবে।’

তিনি বলেন, সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে সবার আগে সতর্ক থাকতে হবে যেন সত্যিকার ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীটি লাভবান হয়। প্রণোদনার স্বচ্ছতা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। দুর্নীতির প্রমাণ মিলছে। সঠিক ব্যক্তিটি যদি সাহায্য না পায়, তাহলে কোনো কাজেই আসবে না। বরং বৈষম্য বাড়বে।

‘দ্বিতীয়ত, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের রক্ষা করতে সরকারকে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। তৃতীয়ত, খাদ্য সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনতে হবে। মিল মালিক ও সরকারি কর্মকর্তারা সিন্ডিকেট তৈরি করে যে চুরির ব্যবস্থা করছে, তা ঠেকাতে হবে। এই প্রশ্নে সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে। গরিবের শিক্ষার সঙ্গে খাদ্যের সম্পর্ক আছে। বাজার নিয়ন্ত্রণ না থাকলে শিক্ষার্থীরা এমনিতেই ঝরে পড়বে।’

jagonews24

অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, করোনার এই সময়ে শিক্ষাব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখতে নানা ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে বিভিন্ন দেশ। কারণ, যে ধরনের বিপর্যয়ই ঘটুক না কেন, তার উত্তরণ ঘটাতে হলে সবার আগে শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। বাংলাদেশের বহু মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে। এই সময়ে সংখ্যা আরও বাড়ছে। তাদের আয় কমে গেছে। এসব ঘরের সন্তানেরা অনেকেই কর্মক্ষেত্রে ঢুকে গেছে। অনেক মেয়ের বাল্যবিয়ে হয়ে যাচ্ছে। অনেকের শিক্ষাজীবন অনিশ্চিয়তা কবলে।

তিনি বলেন, প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভিভাবক ও শিক্ষা প্রশাসন জরুরিভিত্তিতে এটি আমলে নেবে যে, কারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলেন, কারা আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরতে পারছে না। কারোনায় আক্রান্ত হয়ে অনেক অভিভাবক মারাও গেছেন। জাতীয়ভাবে এমন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে খুঁজে বের করা হয়তো মুশকিল হবে, কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি মিলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে একটি তালিকা তৈরি করতে পারবে।

‘হয়তো এক কোটি শিক্ষার্থী আছে। তাদের সবাইকে সাহায্যের আওতায় আনতে হবে না। কিন্তু ২০ থেকে ২৫ লাখ শিক্ষার্থীর সাহায্যের প্রয়োজন হবে। এদের সরাসরি ভর্তুকি বা শিক্ষা উপকরণে সহায়তা না দিলে বৈষম্য বাড়বে। সামগ্রিক শিক্ষার ক্ষতি হবে। চাইলে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানভিত্তিক কমিটি গঠন করা সম্ভব। ওই কমিটি স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করবে। সরকার অনেক জায়গায় প্রণোদনা দিচ্ছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, শিক্ষায় প্রণোদনা মানেই জাতির উন্নয়ন। এই প্রণোদনা ভবিষ্যতে কাজে আসবে।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com