উপরে নীল আকাশ, নিচে স্বচ্ছ জলরাশি। এর মাঝেই দাঁড়িয়ে আছে ৮০০ মিটারের বিশাল কাঠের সেতু। মেঘনার নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে নোয়াখালীর হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপের পর্যটকদের বাড়তি আকর্ষণ এখন দীর্ঘাকার এই সেতু।
প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার পর্যটক নিঝুম দ্বীপের নামার বাজার সমুদ্র সৈকতে কাঠের সেতু দিয়ে ভেতরে গিয়ে ছবি-ভিডিও তুলছেন। যা ছড়িয়ে দিচ্ছেন বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
সম্প্রতি ওই স্থান ঘুরে দেখা যায়, কাঠের পাটাতন দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ৮০০ মিটারের বিশাল কাঠের সেতু। সেতুর মাঝে মাঝে রয়েছে ছাউনি। ভ্রমণপিপাসুরা ছাউনিতে বসে বিশ্রাম নিচ্ছেন। সেতু থেকে যেদিকে চোখ যায় শুধু পানি আর পানি। কেউ কেউ আবার গোসলের জন্য পানিতে লাফ দিচ্ছেন। বিশেষ করে পর্যটকরা আসেন শেষ বিকেলের সূর্যাস্ত দেখতে। সূর্যাস্তের দৃশ্য তীরের পরিবেশকে আরও মনোরম করে তোলে।
নিঝুম দ্বীপ ঘুরতে আসা পর্যটক মেহেদী হাসান মারুফের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, পুরো নিঝুম দ্বীপটি অনেক সুন্দর ও মনোরম। আমরা ১২ জন একসঙ্গে এখানে ঘুরতে এসেছি। সৈকতে স্থাপিত ৮০০ মিটার লম্বা সেতুর শেষপ্রান্তে গিয়ে পরিবেশটা অন্যরকম দেখেছি। সেতুর শেষপ্রান্ত থেকে সূর্যাস্তটাও দারুণ উপভোগ করা যায়।
ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা আফিফ হাসান জানান, ফেসবুকে এবং অনেকের কাছে মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের গল্প শুনে নিজেই এসেছেন সেই দৃশ্য উপভোগ করতে। তিনি বলেন, পরিবেশটা দারুণ। এই এলাকা যদি পরিকল্পিতভাবে পর্যটকবান্ধব করা যায়, তাহলে আরও বেশি ভ্রমণপিপাসুরা ঘুরতে আসবে এখানে।
আরেকজন পর্যটক আরাফাত জামান বলেন, নিঝুম দ্বীপ যেন মহান আল্লাহর এক অপরূপ সৃষ্টি। বিশাল বনভূমি, কেওড়া বন, সমুদ্রের জলরাশি ও নিরিবিলি সৈকত। সব মিলিয়ে যেন অসীম সৌন্দর্যের এক লীলাভূমি।
হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আফছার দিনাজ বলেন, দ্বীপের বিশাল সৈকতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে ৮০০ মিটারের এ বিশাল কাঠের সেতু তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি। যা এখানে ঘুরতে আসা পর্যটকদের অন্যরকম দৃশ্য উপভোগে সহায়ক হচ্ছে।
এছাড়া পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য আরও নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। দেশি পর্যটকদের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করতে সরকার বিশেষ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। নিঝুম দ্বীপে শতভাগ নিরাপত্তা রয়েছে বলেও জানান এ জনপ্রতিনিধি।
হাতিয়া উপজেলার চেয়ারম্যান মাহবুব মোর্শেদ লিটন বলেন, নিঝুম দ্বীপের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য্য যেকোনো পর্যটকের মন কাড়বে। আগের তুলনায় পরিবেশ উন্নত হওয়ায় এখন অনেক বেশি পর্যটক এখানে ঘুরতে আসেন। তাদের থাকার জন্য আরও বেশি করে ভালো হোটেল-মোটেলের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। যাতে ভ্রমণপিপাসু মানুষ নিঝুমদ্বীপের সৌন্দর্য্য উপভোগে করতে এলে থাকা-খাওয়ার কোনো কষ্ট না হয়।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, সরকার অনেক আগেই নিঝুম দ্বীপকে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করেছে। এ এলাকাকে পর্যটকবান্ধব করে গড়ে তোলার জন্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/পিকে