শারদীয় দুর্গাপূজা এখন ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। আর আনন্দঘন এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্টেট নিউ ইয়র্কে এবারই প্রথমবারের মতো উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে হতে যাচ্ছে দুর্গাপূজা। বেঙ্গলি ক্লাব ইউএসএর আয়োজনে আগামী ১ অক্টোবর থেকে পাঁচ দিনব্যাপী এই উৎসব শুরু হচ্ছে। ৫ অক্টোবর পর্যন্ত যা চলবে প্রতিদিন বেলা ১২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।
জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজা প্রাঙ্গণে উৎসবের প্রথম দিন ষষ্ঠীতে পূজার উদ্বোধন করবেন বিশ্ব বাঙালি ব্যক্তিত্ব, সমাজসেবক ও ধনকুবের ব্যবসায়ী ডা. কালী প্রদীপ চৌধুরী। পূজার অন্যান্য দিনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মার্কিন কংগ্রেসওমেন গ্রেস মেং, নিউ ইয়র্ক স্টেট সিনেটর জেসিকা রেমোস, অ্যাসেম্বলিওমেন ক্যাটালিনা ক্রুজ, অ্যাসেম্বলিওমেন জেনিফার রাজকুমার, জ্যাকসন হাইটসের কাউন্সিলম্যান শেখর কৃষ্ণানসহ জ্যাকসন হাইটসের বিশিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
উৎসব উপলক্ষে নেওয়া হচ্ছে সর্বাত্মক প্রস্তুতি। আর এবার বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় এই উৎসবে আয়োজনে যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ। এই উৎসবকে সামনে রেখে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয় বুধবার সন্ধ্যায়। জ্যাকসন হাইটসের বাংলাদেশ প্লাজায় আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন পূজার আহ্বায়ক দীনেশ চন্দ্র মজুমদার।
দীনেশ চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘বাঙালির দুর্গাপূজা এখন ইউনেসকো ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটির অংশ। এটি আমাদের অহংকারের এবং গর্বের। এই উপলক্ষে প্রথমবারের মতো আমরা জাতি, সম্প্রদায়, দল-মত-নির্বিশেষে সর্বজনীনভাবে উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে শারদীয় উৎসব পালনের উদ্যোগ নিয়েছি। ’
সংবাদ সম্মেলনে পূজা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সনজিত কুমার ঘোষ বলেন, নিউ ইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে প্রথমবারের মতো দুর্গাপূজার আয়োজন হচ্ছে। এতে সর্বস্তরের মানুষের পূজা দেখার সুযোগ মিলবে।
পূজার প্রধান সমন্বয়কারী গোপাল স্যানাল বলেন, ‘করোনা মহামারির আগে আমরা হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা রমজান মাসে জ্যাকসন হাইটসে ইফতার আয়োজন করেছিলাম। এবার মুসলমানসহ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীরা যেভাবে পূজা আয়োজনে এগিয়ে এসেছেন, তাতে এটি সর্বজনীন শারদীয় উৎসবে পরিণত হচ্ছে। এখানে দুই বাংলার বাঙালিরা থাকবেন। ’
প্রচার প্রকাশনা ও মিডিয়া কমিটির প্রধান সাংবাদিক মো. আবদুল হামিদ বলেন, ‘বিশ্বের বাণিজ্যিক রাজধানী নিউ ইয়র্ক সম্প্রীতির শহর। এ শহরে এমনও স্থান রয়েছে যেখানে মসজিদ-মন্দির পাশাপাশি অবস্থিত। বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় আমরা প্রথমবারের শুধু পূজার আয়োজনই করছি না, এটিকে প্রকৃত অর্থে সর্বজনীন উৎসবে রূপ দিচ্ছি। ’
সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য দেন সংগীতশিল্পী মনিকা রায়, শো টাইম মিউজিকের কর্ণধার আলমগীর খান আলম, পূজা পরিচালনা বিষয়ক সম্পাদক সনাতন শীল ও সুরুজ শীল, শৃঙ্খলা ও ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ছাদেক শিবলী। দুর্গাপূজা উপলক্ষে একটি বিশেষ প্রকাশনা ‘শারদ সম্প্রীতি’ প্রকাশিত হবে। এর সম্পাদক মনোনীত হয়েছেন সাংবাদিক হাসানুজ্জামান সাকী।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে বিশ্বের কয়েকটি দেশের সংস্কৃতি ইউনেসকো ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বাঙালির দুর্গাপূজা তার মধ্যে একটি।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ