করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তরুণ কথাসাহিত্যিক ও প্রকাশক সার্জিল খান। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই কিডনি রোগে আক্রান্ত ছিলেন। নিতে হতো ডায়ালাইসিস। এরইমধ্যে করোনা আক্রান্ত হন। করোনার কাছেই পরাজিত হলেন। সোমবার রাজধানীর উত্তরার একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে সার্জিল লিখেছিলেন, ‘হেপা-বি ভ্যাকসিনের সেকেন্ড ডোজ নেয়ার পর থেকে খুব বাজে অবস্থায় দিন পার করছি। সেই সাথে গলব্লাডারের পাথরটাও বড় হয়ে যন্ত্রণা দেয়া শুরু করেছে। ডায়ালাইসিসের চক্কর তো আছেই। গত ৬ দিন ধরেই বিছানাই আমার প্রধান ঠিকানা। অসহ্য যন্ত্রণা আর দুশ্চিন্তায় দিন পার হচ্ছে। একবার মনে হয় হেপা-বি ই হয়ে গেছে। আরেকবার মনে হয় কিডনি দুইটাই শেষ।
আবার মনে হয় কোভিড হলো না তো! এ কয়দিন শুধু ডিম ভাজি আর ভাত ছাড়া কিছুই খেতে ইচ্ছা করছে না। আমি বিছানায় পড়ায় পুরা বাসাই থমকে আছে। এসব দৃশ্য দেখতেও ভালো লাগে না; সেখানে এসব ফেস করছি। প্রেশারটাও তাই বারবার ওঠা নামা করছে। খুবই বিরক্তিকর শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণার মাঝে আছি।’
অবশ্য পরের একটি পোস্টে নিশ্চিত করেছিলেন তিনিও কভিড আক্রান্ত। এছাড়াও চেয়েছিলেন অর্থনৈতিক সহায়তা। হাসপাতালের বিছানা থেকেই সার্জিল লিখেছিলেন, সবার কাছেই আবারও মানবিক আবেদন নিয়ে হাজির হচ্ছি। দীর্ঘ মাস খানেক যাবত আমি কোভিড পজিটিভ হয়ে নিজের অস্তিত্ব এবং অর্থনৈতিক অসহায়ত্বের কাছে পর্যদুস্থ। ইতিমধ্যে আমার জমানো সব টাকাই ব্যবহার হয়ে গিয়েছে। অবশিষ্ট টাকা দিয়ে হয়তো আর অল্প কিছুদিন চলতে পারবো।
ইতিমধ্যে অনেকেই এগিয়ে এসেছেন। আরও অল্প কিছু জনের সাহায্যে হলেই হয়তো টিকে যেতে পারি এই যুদ্ধ। আমি আর লিখতে পারছি না। জানি না আর রেস্পন্স করতে পারবো কি না আপনাদের।
সার্জিল খান দুই সন্তান, স্ত্রীসহ বসবাস করতেন টঙ্গীতে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলেন। তরুণ বয়স থেকে লেখালেখি করলেও পরে শব্দভূমি নামের একটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান চালু করেন।
সার্জিল খান লেখালেখি করতেন। তার বেশকিছু প্রকাশিত উপন্যাস ও গল্পগ্রন্থ রয়েছে। রঞ্জিত জননী, পরপার, রাফখাতা, অস্পৃশ্য, অচেনা জগত, পাণ্ডুলিপি, অচেনা জগত, এছাড়াও তার একাধিক সম্পাদিত গ্রন্থ রয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম মেট্রোপলিটন গল্পগুচ্ছ।
বাংলা৭১নিউজ/এবি