শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৫২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে প্রাইভেটকারে বাসের ধাক্কা, নিহত ৫ নাশকতা নাকি দুর্ঘটনা তদন্ত চলছে: ফায়ারের ডিজি উন্নয়নের লক্ষ্যে চীনের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা রাশিয়ার মিসাইলের আঘাতে ভূপাতিত হয় ওই বিমান শেষ দিনে ভিড় বেড়েছে, পছন্দের ফ্ল্যাট খুঁজছেন অনেকেই বিআরটিএ নির্ধারিত সিএনজি অটোরিকশার জমা ৯০০ টাকা কার্যকরের দাবি ৬ মাস ধরে নিখোঁজ বাংলাদেশিকে পাওয়া গেল থাই নারীর সঙ্গে হোটেলে ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর হওয়া উচিত : প্রধান উপদেষ্টা মাদারীপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ, ইউপি সদস্যসহ নিহত ২ জাহাজে ৭ খুন: বিচারের দাবিতে কর্মবিরতিতে নৌযান শ্রমিকরা পঞ্চগড়ে টানা চারদিন দিন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ইয়েমেনের বিমানবন্দরে হামলা, অল্পের জন্য বাঁচলেন ডব্লিউএইচও প্রধান গান পাউডার ব্যবহার হয়েছে কি না, খতিয়ে দেখতে ‘বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ’ পানির ট্যাংকে লুকিয়ে ছিলেন আ. লীগের ‘ভাইরাল নেত্রী’ কাবেরী পাবনায় দাঁড়িয়ে থাকা করিমনে ট্রাকের ধাক্কায় তিন শ্রমিক নিহত, আহত ৫ নববর্ষে আতশবাজি ও পটকা ফোটানো থেকে বিরত থাকার নির্দেশ ক্রীড়া পরিষদে অস্থায়ী অফিস ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মারা গেছেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং যেখানে চলবে ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম সংস্কার ছাড়া নির্বাচন সম্ভব নয়: প্রধান উপদেষ্টা

নারী হয়েও পুরুষের বেশে মিশর শাসন করেছেন যিনি

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক:
  • আপলোড সময় শনিবার, ২৪ জুলাই, ২০২১
  • ৮৭ বার পড়া হয়েছে

মিশরে লুকিয়ে আছে হাজারও রহস্য। তেমনই একটি রহস্য হলো সেখানকার নারীরা পুরুষের বেশে রাজ্য শাসন করতেন। মিশরের শাসক বা রাজাদেরকে বলা হয় ফারাও। মিশরের রাজা বা ফারাওদের কথা সবাই জেনে থাকবেন।

তবে পুরুষের বেশে নারী ফারাওদের সম্পর্কে জানেন কি? যদিও মিশর শাসকদের বেশিরভাগই পুরুষ ছিলেন। তবে অনেক নারীরাও মিশরের ইতিহাসে ফারাও হিসেবে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন। মিশরের সমৃদ্ধিতে তাদের অবদানও অনেক।

ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, মিশরের তিন হাজার বছরের ইতিহাসে ১৭০ জন ফারাওয়ের মাঝে সাত জন ছিলেন নারী। তারা হলেন, সোবেকনেফেরু, হাতশেপসুত, নেফারতিতি আখামেননের, আনাক-সু-নামুন, নিতক্রিস, খেনকস প্রথম ও ক্লিওপেট্রা।

jagonews24

তবে ইতিহাসবিদদের মতে, নারী শাসকের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। কারণ অনেকের নামই ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে ফেলা হয়েছে। মিশরের নারী ফারাওদের ছিলো বর্ণাঢ্য জীবন।

জানা যায়, নারী ফারাওদের মধ্যে হাতশেপসুত পুরুষের বেশে রাজ্য শাসন করতেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক তিনি কীভাবে নিজের পরিচয় গোপন করে শাসককার্য চালাতেন সে সম্পর্কে-

হাতশেপসুত ছিলেন মিশরীয় নারী ফারাওদের মধ্যে দ্বিতীয় এবং অন্যতম। প্রাচীন মিশরের অষ্টাদশ রাজবংশের পঞ্চম ফেরাউন ছিলেন তিনি। হাতশেপসুত অর্থ হলো ‘মহৎ নারীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ’।

jagonews24

প্রাচীন মিশরবিদরা তাকে সর্বাপেক্ষা সফল ফেরাউনদের একজন হিসেবে গণ্য করেন। মিশরীয় রাজবংশের অন্যান্য নারীদের থেকে তার রাজত্বকাল ছিল দীর্ঘতর। তিনি মিশরের অনেক উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করেছিলেন।

হাতশেপসুতের জন্ম হয় ১৪৯৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে। একটি সিংহের গুহায় তার জন্ম হয়েছিলো বলে ইতিহাসে উল্লেখ আছে। তিনি প্রথম থুতমোসের কন্যা এবং দ্বিতীয় থুতমোসের প্রধান স্ত্রী ছিলেন।

শাসক হিসেবে হাতশেপসুত ছিলেন বিচক্ষণ এবং সাহসী। যিশু খ্রীষ্টের জন্মের ১৫০০ বছর আগের প্রাচীন সময়ে তিনি মিশর শাসন করেন। হাতশেপসুত আনুমানিক ১৪৭৯-১৪৫৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দে পর্যন্ত সহ-শাসক হিসাবে মিশরে রাজত্ব করেন।

jagonews24

দীর্ঘ ২১ বছর নয় মাস শিশর শাসন করেন হাতশেপসুত। তার সময় অসাধারণ সব স্থাপত্য নির্মিত হয়েছে। তিনি পুরুষের পোশাক পরে সিংহাসনে বসতেন, এমনকি ফারাও এর নকল দাড়িও লাগাতেন।

তখনকার সময়ে দাফতরিকভাবে রাজা হলেও মুকুট ধরে রাখা আর রাজ্যের সবার শ্রদ্ধা পাওয়া কঠিন পরীক্ষা ছিল। বিশেষ করে একজন নারী হয়েও মিশরীয়দের মনে রাজার স্থান পাওয়া ততটা সহজ ছিলো না।

কোনো নারীকেই তখন মিশরীয়রা রাজা হিসেবে মেনে নেওয়া হতো না সহজে। হাতশেপসুত একদিকে যেমন ছিলেন অপরূপ সুন্দরী রমনী, তেমনি তার ছিলো অসাধারণ বুদ্ধিমত্তাও। তিনি এই সমস্যারও সমাধান করে ফেললেন।

jagonews24

সামাধান হিসেবে তিনি পুরুষের বেশে রাজ্য শাসন করতে শুরু করলেন। বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ সভাগুলোতে তিনি পুরুষদের পোশাক আর নকল দাড়ি পরতেন। এভাবে ধীরে ধীরে তিনি মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেতে শুরু করেন।

তবে হাতশেপসুত তার এই পুরুষালী বেশভূষা বা নকল দাড়ির জন্য ইতিহাসে বিখ্যাত হননি, হয়েছেন তার কর্মগুণে। মিশরীয় গবেষক জেমস হেনরির মতে, হাতশেপসুত ইতিহাসে উঠে আসা প্রথম মহৎ নারী।

মিশর শাসনকালে হাতশেপসুতের মূল লক্ষ্য ছিলো নতুন নতুন রাজ্যজয়ের পরিবর্তে নিজ রাজ্যকে সমৃদ্ধ করা। সে লক্ষ্য নিয়েও কাজ শুরু করেন তিনি। রাজকীয় স্থাপত্য, সমাধি, মন্দির তৈরীতেই তার মনোযোগ ছিলো বেশি। তিনি অসংখ্য মন্দির, ভাস্কর্য, ওবেলিস্ক (লম্বা দৈত্যাকৃতির মূর্তি) নির্মাণ করেন।

তার সময়ে তৈরি স্থাপনাগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হলো কর্নাক মন্দির। মিশরের লাক্সারে নীলনদের তীরে অবস্থিত এই মন্দিরে সুউচ্চ ওবেলিস্ক রয়েছে, সেই সময়ে পুরো মিশরের সবচেয়ে উচু ওবেলিস্ক ছিল এগুলোই।

jagonews24

হাতশেপসুতের তৈরি আরেকটি স্থাপনা হলো মা’আত মন্দির। কর্নাক কমপ্লেক্সের এই মন্দিরের দেয়ালে দেয়ালে অত্যন্ত চমৎকারভাবে খোদাই করা আছে হাতশেপসুত আর তৃতীয় থুতমোসের মূর্তি। আয়তাকার কমপ্লেক্সের ঠিক মাঝখানটাতে আছে সুবিশাল এক হল। তখনকার বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক কাজে ব্যবহৃত হত এটি।

এই রানির সাফল্য যে শুধু স্থাপত্যশৈলীতেই সীমাবদ্ধ ছিল তা কিন্তু নয়। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যেও তিনি সমানভাবে সফল হয়েছিলেন। তিনি ২০০ বছর আগে ভেঙে যাওয়া বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে অষ্টাদশ রাজবংশের সম্পদ গড়ে তোলার সুযোগ তৈরি করেন। তার এই সফলতা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বহাল ছিল।

হাতশেপসুতের মৃত্যু হয় তার সিংহাসনে আরোহণের প্রায় দুই যুগ পর। উনিশ শতকে বিখ্যাত ইজিপ্টোলজি এবং হায়ারোগ্লিফিক কোডার জন ফ্রান্সিস শ্যাম্পলিয়ন হাতশেপসুতের নাম পুনরায় ইতিহাসের পাতায় ফিরিয়ে আনেন। নিউ ইয়র্কের মেট্রোপলিটন মিউজিয়ামে তার জন্য আলাদা একটি কক্ষই আছে। যেখানে তুলে ধরা হয়েছে তার জীবনকালের নিদর্শনসমূহ।

বাংলা৭১নিউজ/এসএন

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com