বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: বাণিজ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ এমপি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে (নাসিক) অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে উল্লেখ করে বলেছেন, ‘সবার কৃতিত্বেই নাসিক নির্বাচন ভালো হয়েছে, দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনও এমন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। তখন বিএনপি আর কোনও দাবি দাওয়া না তুলে নির্বাচনে অংশ নেবে। তবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে বিএনপিই ক্ষতিগ্রস্ত হবে ও আওয়ামী লীগ লাভবান হবে।’
আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংগঠনটির নিয়মিত অনুষ্ঠান ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে তোফায়েল আহমেদ এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিআরইউ’র সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মুরসালিন নোমানী। এসময় কার্যনির্বাহী কমিটির কর্মকর্তা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৪ সালে জাতীয় নির্বাচন করতে না পারলে দেশে সামরিক শাসন চলে আসতো। দেশে থাইল্যান্ডের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো। বিএনপি ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে ভুল করেছে। আশা করি, এই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। যেখানে কোনো দাবি দাওয়া থাকবে না।’
এক প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল আহমেদ বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রতীক ও ব্যক্তিগত ইমেজ সেলিনা হায়াৎ আইভীকে মেয়র পদে নির্বাচিত হওয়ার বিষয়ে সাহায্য করেছে।
নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন নিয়ে বিএনপি’র অভিযোগ করার কোনো সুযোগ ছিল না- উল্লেখ করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘ভোট গণনার সময় পর্যন্ত বিএনপিও বলেছে, অবাধ নির্বাচন হয়েছে। তবে ভোট গণনার আগ মুহূর্তে বিএনপি যে অদৃশ্যশক্তি নিয়ে অভিযোগ তুলেছিল, তা দুঃখজনক। নারায়ণগঞ্জবাসী চমৎকার মেয়র পেয়েছে। সেলিনা হায়াত আইভী একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান মানুষ।’
তিনি নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে সব দলের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির আলোচনাকে ভালো দিক হিসাবে দেখছেন বলে উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উন্নয়নের রোল মডেল উল্লেখ করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে সুন্দর নির্বাচন হয়েছে। বিএনপির নেতাকর্মী ও প্রার্থীও চমৎকার পরিবেশের কথা বলেছেন। তবে নির্বাচনের পর বিএনপির প্রার্থী ও কর্মীরা বিভিন্নভাবে এদিক-ওদিক ইশারা করে যা বলেছেন তা ঠিক হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে দুই প্রতীকের মধ্যে ভোটযুদ্ধ হয়েছে। আমাদের প্রার্থী বিশাল ভোটের ব্যবধানে বিএনপির প্রার্থীকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। সততা, আদর্শ ও ন্যায় নিষ্ঠার ইস্যুতে আমাদের প্রার্থীর বিষয়ে কারও প্রশ্ন নেই। এই নির্বাচনে আমাদের প্রার্থীর মার্কা ও তার ইমেজ এক সঙ্গে কাজ করেছে। এ কারণেই ভোটের ব্যবধান বেড়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ি ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারির আগের ৯০ দিনের মধ্যে যে কোনও সময় নির্বাচন হবে। সংবিধানের ভিত্তিতেই নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে। এই নির্বাচন কমিশন গঠনের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির। সার্চ কমিটির মাধ্যমে তিনি যোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন, যা সবার জন্য ভালো হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশ নিতে আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি সেই আহ্বানে সাড়াও দেননি, নির্বাচনে অংশও নেননি। ওই দিন ওনার পথ ধরে আমরাও যদি নির্বাচনে অংশ না নিতাম, তাহলে আমাদের অবস্থাও থাইল্যান্ডের মতো হতো।’
এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী পরিচয়ের চেয়ে আওয়ামী লীগের একজন কর্মী পরিচয়কেই তিনি বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন বলে উল্লেখ করেন।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ