বাংলা৭১নিউজ,শামছুর রহমান শিশির, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই যমুনা নদীতে নাব্যতা সংকট প্রকট আকার ধারণ করায় বাঘাবাড়ী নৌ-বন্দরের ভাটিতে নৌ-বন্দরগামী অর্ধশতাধিক সার, ক্লিংকার ও কয়লাবাহী কার্গো জাহাজ ফুল লোড নিয়ে নৌ-বন্দরে ভিড়তে পারছে না।
বাঘাবাড়ী নৌ-বন্দরগামী ইউরিয়া সার, ক্লিংকার ও কয়লাবাহী অর্ধশতাধিক ওইসব কার্গো জাহাজ গোয়ালন্দ, পাটুরিয়া ও দৌলদিয়া পয়েন্টে গত ১ সপ্তাহ ধরে নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে। লাইটারেজের মাধ্যমে ড্রাফট কমিয়ে প্রতিদিন ২/৩টি করে জাহাজ বাঘাবাড়ি নৌ-বন্দরে ভেড়ানো হচ্ছে। এতে, চলতি ইরিবোরো মৌসুমে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার ১৪টি বাফার স্টকে সারের আপদকালীন মজুত গড়ে তোলার কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে।
ফলশ্রুতিতে, বাঘাবাড়ী নৌ-বন্দরে লোডআনলোডের কাজে শিথিলতা নেমে এসেছে। ৬/৭ ‘শ শ্রমিক বেকার হয়ে মানবেতর দিনাতিপাত করছে। এসব তথ্য নিশ্চিত করে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাব মাষ্টার জানান, ‘মোল্লারচর, ব্যাটারির চর, মোহনগঞ্জ, কৈটোলা ও চর পেচাকোলা রুটে নাব্যতা সংকটে ফুল লোডবাহী কার্গো জাহাজ চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।” আব্দুল ওহাব মাষ্টার আরো বলেন, “উত্তরাঞ্চলের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ এ নৌ-চ্যানেলটি সচল রাখতে বিআইডাব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেও যথাসময়ে এ নৌ-চ্যানেলে ড্রেজিং শুরু না হওয়ায় বাঘাবাড়ী নৌ-বন্দরে এ অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এতে শাহজাদপুরসহ দেশের শষ্যভান্ডারখ্যাত উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার কৃষিকাজে বিঘ্ন ঘটার শংকায় কৃষকেরা বিচলিত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে চলতি সেচ মৌসুমে ইরি-বোরোর আবাদে প্রয়োজনীয় রাসায়নিক সারের চাহিদা যথাসময়ে পূরণ হবে কি না তা নিয়ে কৃষকেরা দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে বাঘাবাড়ী পোর্ট অফিসার সাজ্জাদ হোসেন বলেন, “ড্রেজিং এর কাজ চলছে। ২/৪ দিনের মধ্যে এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।” বাঘাবাড়ী বাফার গুদামের ইনচার্জ সোলায়মান হোসেন বলেন,” নাব্যতা সংকটে বাঘাবাড়ী নৌ-বন্দরে জাহাজ আসতে পারছে না ।
আগের মজুদ থেকে সার সরবরাহ অব্যাহত থাকায় এখনো এ অঞ্চলে সারের কোন সংকট দেখা দেয়নি। ” এদিকে, বাঘাবাড়ী নৌ-বন্দরের লেবার হ্যান্ডেলিং ইজারাদার অাব্দুস সালাম বলেন, “যমুনায় নাব্যতা সংকটের কারণে গত দেড় মাস ধরে বাঘাবাড়ী নৌ-বন্দরে ফুল ড্রাফটের কোন সারবাহী জাহাজ ভিড়তে পারছে না। ফলে নৌ-বন্দরের স্বাভাবিক কাজকর্ম বহুলাংশে কমে গেছে। এতে লেবাররা চরম আর্থিক লোকশানে পড়েছে।” লেবার সরদার লুৎফর রহমান বলেন, “বাঘাবাড়ী নৌ-বন্দরে লোডবাহী কার্গো জাহাজ ভিড়তে না পারায় তাদের ৬/৭‘শ শ্রমিক কর্মসংস্থান হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছে। এ মৌসুমে বাঘাবাড়ি নৌবন্দর ঘাটে প্রতিদিন ১২‘শ থেকে ১৩‘শ শ্রমিক কাজ করতো। এখন মাত্র আড়াই‘শ থেকে ৩‘শ শ্রমিক কাজ করছে।
জাহাজ না ভিরতে পারায় বেকার বসে থাকা শ্রমিকরা পরিবার পরিজন নিয়ে খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।” অপরদিকে, অভ্যন্তরীণ সার পরিবহন ঠিকাদারদের লাইটারেজ জনিত কারণে অতিরিক্ত পরিবহন ব্যয় মাশুল হিসেবে গুনার কারণে তারাও অার্থিকভাবে চরম ক্ষতির মুখে পতিত হয়েছেন।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস