সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০২:১৩ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
জেরুজালেমে আল জাজিরার কার্যালয়ে ইসরায়েলের অভিযান বিদেশ যাওয়ার অনুমতি পেলেন বিএনপি নেতা আমান সিরিয়াল অনুযায়ী মামলার শুনানি হবে: প্রধান বিচারপতি অবৈধ টিভি চ্যানেলের বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত অভিবাসন সংক্রান্ত অপতথ্য রোধে একত্রে কাজ করবে বাংলাদেশ-ইতালি স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে ফাঁস নিলেন আনসার সদস্য সুনামগঞ্জে অব্যাহত বৃষ্টিতে বাড়ছে নদ-নদীর পানি জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষার প্রিলির ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৬০৩ সিলেটে সাত সকালে কালবৈশাখীর তাণ্ডব সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে, ধোঁয়া দেখলেই পানি স্প্রে চলে গেলেন ‘টাইটানিক’খ্যাত অভিনেতা বার্নার্ড হিল হামাসের হামলার জবাবে রাফায় ইসরায়েলের হামলা, নিহত ১৯ আগামী সাত দিন হতে পারে ‘বৃষ্টির সপ্তাহ’ রাজধানীতে বাস-পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২ জিম্বাবুয়েকে ৬ উইকেটে হারাল বাংলাদেশ ব্রাজিলে বন্যায় মৃত্যু বেড়ে ৭৫, নিখোঁজ শতাধিক টস জিতে জিম্বাবুয়েকে ব্যাটিংয়ে পাঠালো বাংলাদেশ ছয় মাসে রাজস্ব আহরণ বেড়েছে ১৩.৯ শতাংশ: অর্থমন্ত্রী সোনার দাম আরও বাড়লো ব্যর্থতা ঝেড়ে বিশ্বকাপ রঙিন করার প্রত্যাশা জ্যোতির

নাটোরে সরিষার চাষে সাথে মধু উৎপাদন

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০১৯
  • ১২৬০ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,নাটোর থেকে মোঃ মনজুর-ই-মওলা সাব্বির: চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে অতিরিক্ত জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। শুধু বাড়তি আবাদী জমিতে সরিষার চাষই নয়, সাথে পাওয়া গেছে মধু। সরিষা ফুলের জমি থেকে মৌচাষীরা চার টনেরও অধিক মধু আহরন করেছেন। আশা করা হচ্ছে, সরিষার উৎপাদন প্রায় ছয় টনে পৌঁছবে।

নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে জেলায় ৪ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১ হাজার ৭০৯ হেক্টর অতিরিক্ত জমিতে অর্থাৎ মোট ৬ হাজার ২২৯ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে সিংড়া উপজেলায় সর্বাধিক ৩ হাজার হেক্টর, নাটোর সদরে ১ হাজার ৫০ হেক্টর, গুরুদাসপুরে ৭৫৫ হেক্টর, নলডাঙ্গায় ৫৪৪ হেক্টর, বড়াইগ্রামে ৩৮৫ হেক্টর, লালপুরে ২৫৫ হেক্টর এবং বাগাতিপাড়া উপজেলায় ২৪০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়।

রোপন থেকে কর্তন পর্যন্ত ৭৫ থেকে ৮০ দিনের এই তেল জাতীয় শস্যটির কর্তন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রচলিত স্থানীয় টোরি-৭ জাতের সরিষার আবাদ সর্বাধিক। এই জাতের সরিষার জীবনকাল তুলনামূলক ভাবে কিছুটা কম। তাই কৃষকরা এই সরিষা আবাদ করে এই জমিতে খুব সহজেই বোরো ধান আবাদ করতে পারেন। পাশাপাশি চলতি মৌসুমে নতুন ও উন্নত বারি সরিষা-১৪ ও ১৫ এবং বিনা-৯ জাতের সরিষা আবাদ হয়েছে। এসব সরিষার জীবনকাল একটু বেশী হলেও ফলন বিঘা প্রতি সাড়ে ছয় থেকে সাত মণ পর্যন্ত।

গুরুদাসপুর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম ২০ বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করেছিলেন। এর মধ্যে ১৮ বিঘাতে টোরি-৭ এবং দুই বিঘাতে বারি সরিষা-১৪ এর প্রদর্শনী খামার স্থাপন করেছিলেন। ইতোমধ্যে উভয় জাতের কর্তন ও শুকানো কার্যক্রম শেষ করেছেন তিনি। ফলন পেয়েছেন টোরি-৭ জাতের বিঘা প্রতি সাড়ে পাঁচ মণএবংবারি সরিষা-১৪ সাড়ে ছয় মণ করে।

জমিতে উৎপন্ন সরিষার বিক্রয় কার্যক্রমও শেষ করেছেন শফিকুল ইসলাম। এক হাজার ৮০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করে উৎফুল্ল শফিক বাংলা৭১নিউজকে বলেন, লাভ জনক বলে গত ১২ বছর ধরে সরিষা আবাদ করছি। বিঘা প্রতি চার হাজার টাকা উৎপাদন ব্যয় বাদ দিলে বিঘা প্রতি মুনাফা হয়েছে চার হাজার ২০০ টাকা।

জেলা কৃষিসম্প্রসারণ বিভাগ জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় জেলায় আড়াই হাজার কৃষকের জমিতে সরিষার প্রদর্শনী খামার স্থাপন করে তাদেরকে বীজ, সার ও সেচ সুবিধা দেওয়া হয়। গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় রাজস্ব খাতে এক বিঘার ৬০টি প্রদর্শনী এবং ডাল তেল ও মসলা বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় এক একর জমির নয়টি প্রদর্শনী খামার স্থাপন করা হয়।

প্রদর্শনী খামার গুলোতে বর্তমানে মাঠ দিবস কার্যক্রম চলছে। মাঠ দিবসে এলাকার কৃষক সমাবেশে নতুন বীজের সুফল, সরিষা কর্তন শেষে ফলন এবং এর চাষাবাদ প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারনা দেওয়া হচ্ছে বলে জানালেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল করিম।

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে গুরুদাসপুরের বিলসা গ্রামের কৃষক মজিবর রহমানের সরিষার জমিতে মাঠ দিবস উপলক্ষ্যে বিল চলন বহুমুখী স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গনে আয়োজিত কৃষক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মনির হোসেন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

শুধু সরিষাই নয়, সরিষার জমি থেকে মধু আহরণও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এর ফলে মধু আহরণই নয়,সরিষা ফুল থেকে মৌমাছির মধু সংগ্রহ কালে পরাগায়নের হার বাড়ে। তাই সরিষার ফলন ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।

গুরুদাসপুর উপজেলার মৌচাষী আব্দুল করিম এবার সরিষার জমিতে ১৭০টি মৌবাক্স স্থাপন করেছিলেন। মধু পেয়েছেন ৩৫ মণ। এই মধু খুচরা ২০০ টাকা লিটার দরে বিক্রি করছেন বলে জানান তিনি।

জেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে তিনটি উপজেলার ১০৭ হেক্টর সরিষার জমিতে মোট ৫২০টি মৌবাক্স স্থাপন করা হয়েছিল। এসব মৌবাক্স থেকে সোয়া চারটন মধু পাওয়া গেছে।

নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম বাংলা৭১নিউজকে বলেন, অল্প খরচে অনায়াসলব্ধ সরিষা উৎপাদনে মুনাফার পরিমাণ বেশী। অন্যদিকে এই জমিতে মৌবাক্স স্থাপনের ফলে মধু আহরণ ছাড়াও ফুলের পরাগায়নে ফলন বৃদ্ধি পায়। কৃষি বিভাগের প্রণোদনা এবং প্রশিক্ষণ ও পরামর্শের তৎপরতার কারনে জেলার কৃষকরা সরিষা চাষে বেশী আগ্রহী হয়েছেন।

বাংলা৭১নিউজ/এএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com