জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানায়, সদর হাসপাতালে কয়েক দিন ধরে করোনা রোগীর চাপ বাড়ছে। তবে শয্যাসংকটের কারণে সবাইকে হাসপাতালে ভর্তি করা যাচ্ছে না। করোনার উপসর্গ নিয়ে এলে নমুনা নিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে অক্সিজেন দেওয়ার প্রয়োজন, এমন রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। হাসপাতালের নির্ধারিত ৫০টি শয্যা অনেক আগেই পূর্ণ হয়ে গেছে। সদর হাসপাতালে আজ সকাল পর্যন্ত ৭৭ জন করোনা রোগী ভর্তি ছিলেন। এ অবস্থায় নতুন রোগীদের হাসপাতালের মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থাও নেই।
নাটোর জেলা আইনজীবী সমিতির জ্যেষ্ঠ সদস্য ও সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আসাদুল ইসলাম জানান, রোগীর চাপে তিনি তাঁর পুত্রবধূকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে পারেননি। হাসপাতালে এখন রোগী মারা গেলে বা অন্যত্র স্থানান্তর করা হলেই নতুন রোগী ভর্তি হতে পারছেন।
গ্রামেও বাড়ছে করোনা রোগী
উপজেলা পর্যায়ে হাসপাতাল থাকার পরও সদর হাসপাতালে কেন এত করোনা রোগীর ভিড় হচ্ছে, জানতে চাইলে হাসপাতালটির সহকারী পরিচালক পরিতোষ কুমার রায় বলেন, ‘সর্বত্রই করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে গ্রামে রোগীর সংখ্যা বেশি বাড়ছে। যেখান থেকেই আসুক তাঁকে আমরা জরুরি মনে করলে ভর্তি না নিয়ে পারছি না।’ তিনি আরও জানান, গতকাল বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ৮২। তাঁদের মধ্যে চারজন মারা গেছেন। এ ছাড়া অবস্থা গুরুতর হওয়ায় একজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আজ নাটোর জেলায় এক দিনে ৬৫০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২২৫ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ৩৪ দশমিক ৬ শতাংশ। এর আগে গতকাল শনাক্ত হয়েছিল সর্বোচ্চ ১৭৫ জন।
আজ সদর হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে দুজন ও উপসর্গ নিয়ে দুজনের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে জেলায় করোনায় মোট ৫৬ জন মারা গেছেন। এ পর্যন্ত জেলায় করোনায় ৩ হাজার ৮৪৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
সিভিল সার্জন কাজী মিজানুর রহমান জানান, বর্তমানে জেলার সর্বত্রই করোনা রোগী বাড়ছে। সংক্রমিত ব্যক্তিদের মধ্যে ধনী-গরিব সবাই আছে। আছে নানা বয়সের রোগী। কয়েক দিন আগেও অনেকে ভাবতেন, এই রোগ গ্রামে ঢুকবে না, গরিব মানুষ সংক্রমিত হবেন না। এখন তাঁদের ধারণা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। তাই সবাইকে সচেতন হতে হবে। করোনা থেকে রক্ষা পেতে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানতে হবে।
বাংলা৭১নিউজ/আরএম