বাংলা৭১নিউজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গতকাল মঙ্গলবার ওয়াশিংটন সময় রাত নয়টায় তাঁর প্রথম ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল। ভাষণটি রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই ভাষণের মাধ্যমে তিনি দেশের বর্তমান হাল, বিশেষত গত এক বছরে বিভিন্ন খাতে যে অগ্রগতি হয়েছে এবং ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরার কথা। ১৭৯০ সালে প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন প্রথম ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ ভাষণ দেন, তখন থেকেই এই প্রথার প্রচলন।
হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়েছে, গত বছর কংগ্রেসে গৃহীত কর সংস্কার আইনের ফলে অর্থনীতিতে যে গতি এসেছে এবং বাণিজ্য ও জাতীয় নিরাপত্তা প্রশ্নে যে সাফল্য অর্জিত হয়েছে, তার সবিস্তার বিবরণ থাকবে প্রেসিডেন্টের ভাষণে। গত সপ্তাহে সুইজারল্যান্ডের দাভোসে মার্কিন সাফল্যের যে ইতিবাচক বিবরণ ছিল, এই ভাষণে সেই সুর অব্যাহত থাকবে। হোয়াইট হাউসের একজন মুখপাত্র আশ্বাস দিয়েছেন, প্রেসিডেন্টের ভাষণের সুর হবে আশাবাদী।
তবে এর আগে মার্কিন কংগ্রেসে রাশিয়া তদন্ত নিয়ে যে কাদা–ছোড়াছুড়ি চলছে, তাতে ট্রাম্প ও রিপাবলিকান নেতৃত্ব বিরোধী ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে আপস করবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। গত সোমবার ট্রাম্প টুইটারে সিনেটে ডেমোক্রেটিক নেতা চাক শুমারকে ‘কাঁদুনে চাক’ নামে ব্যঙ্গ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছেন, রাশিয়া নিয়ে তদন্তটি ডেমোক্র্যাটদের চক্রান্ত ছাড়া কিছু না। তিনি বিচারপ্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এই অভিযোগে ডেমোক্র্যাট দলের অনেকে ট্রাম্পের অভিশংসনের পক্ষে।
সোমবারের প্রথম বড় ঘটনা ছিল এফবিআইয়ের উপপরিচালক অ্যান্ড্রু ম্যাকক্যাবের স্বেচ্ছা পদত্যাগ। ট্রাম্প দীর্ঘদিন থেকে দাবি করে আসছেন, এফবিআই ও বিশেষ কৌঁসুলি রবার্ট মুলার রাশিয়া প্রশ্নে যে তদন্ত করছেন, তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এফবিআই যে তাঁর বিরুদ্ধে কাজ করছে, তার প্রমাণ হিসেবে তিনি ম্যাকক্যাবের নাম উল্লেখ করেছেন। ম্যাকক্যাবের স্ত্রী ডেমোক্রেটিক সমর্থক, এই দলের প্রার্থী হিসেবে ভার্জিনিয়ার স্থানীয় নির্বাচনেও তিনি অংশ নিয়েছেন। অব্যাহত চাপের কারণে সোমবার ম্যাকক্যাব অবসরে যেতে অবিলম্বে ছুটিতে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেন। জানা গেছে, এফবিআইয়ের চলতি পরিচালক ক্রিস্টোফার রে প্রেসিডেন্টের সমালোচনার কথা ম্যাকক্যাবকে জানিয়ে তাঁকে পদত্যাগে চাপ সৃষ্টি করেন।
এদিকে সোমবারই রিপাবলিকান পার্টিনিয়ন্ত্রিত মার্কিন কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নিয়েছে, রাশিয়া তদন্ত প্রশ্নে এফবিআইয়ের ভূমিকার সমালোচনা করে এই দলের প্রস্তুত একটি গোপন নথি প্রকাশ করা হবে। এই নথির মোদ্দা বক্তব্য, এফবিআই ও বিচার বিভাগের তদন্ত পক্ষপাতদুষ্ট। নথিতে ‘অতিগোপনীয়’ গোয়েন্দা তথ্যের উদ্ধৃতি থাকায় এফবিআই ও বিচার বিভাগ তা প্রকাশের তীব্র বিরোধিতা করেছে। কোনো সন্দেহ নেই, ট্রাম্প রিপাবলিকানদের নথিটি প্রকাশের অনুমতি দেবেন।
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস