নতুন বছরে ভোক্তাকে স্বস্তি দিতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ বছরের প্রথমার্ধেই আসছে রমজান। এই সময়ে বাড়তি চাহিদা মেটাতে আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে, যাতে আগামী পবিত্র রমজানে ভোজ্য তেলের সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়। পাশাপাশি অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটভিত্তিক অপতত্পরতাও নিয়ন্ত্রণ করতে চায় সরকার।
এ জন্য এরই মধ্যে ডাল, চিনি, ভোজ্য তেলসহ বিভিন্ন পণ্য নির্দিষ্ট পরিমাণ কেনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। নতুন করে স্থানীয় উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে এক কোটি ৯০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এই তেল কিনতে ব্যয় হবে ১৮৯ কোটি ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনায় ২৮ কোটি লিটার ভোজ্য তেল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
এ পর্যন্ত ক্রয় চুক্তি হয়েছে সাত কোটি এক লাখ ৯০ হাজার লিটার, ইস্যুকৃত এনওএর পরিমাণ ৫৫ লাখ লিটার এবং স্থানীয়ভাবে এক কোটি ১০ লাখ লিটার সাবিন তেল কেনার প্রস্তাব করা হয়েছে, যে বিষয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, রমজানের বাড়তি চাহিদাসহ নিয়মিত চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে দেশে (সিটি করপোরেশন, পৌরসভাসহ) টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী প্রায় এক কোটি কম আয়ের পরিবারের মাঝে প্রতি মাসে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি করছে। এই কার্ডধারীদের চাহিদা মেটাতে টিসিবি স্থানীয়ভাবে দুই কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
স্থানীয়ভাবে দুই কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ের জন্য পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা ২০০৮ অনুসরণপূর্বক গত ২৫ নভেম্বর উন্মুক্ত দরপত্র (জাতীয়) আহ্বান করা হয়।
দরপত্রের বিপরীতে আংশিক অর্থাৎ সর্বনিম্ন ৫৫ লাখ লিটারের প্রস্তাব দেওয়ার সুযোগ ছিল। দরপত্র উন্মুক্তকরণ কমিটিতে গত ৯ ডিসেম্বর দর প্রস্তাবকারী স্থানীয় প্রতিষ্ঠান সুপার অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড দুই লিটার পেট বোতলে এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেলের দরপত্র দেয়। এতে প্রতি লিটারের দাম ১৭১.৯৫ টাকা প্রস্তাব করে। যদিও প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের প্রাক্কলিত দাপ্তরিক দাম ১৭২.৫৫ টাকা।
দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি পরদিন সভায় পর্যালোচনা অনুযায়ী রেসপনসিভ দরদাতা সুপার অয়েল রিফাইনারি লিমিটডের দরপত্রে প্রস্তাবিত এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার সুপারিশ করে।
একই দর অর্থাৎ প্রতি লিটার ১৭১.৯৫ টাকা দরে অবশিষ্ট এক কোটি ১০ লাখ লিটারসহ সম্পূর্ণ পরিমাণ অর্থাৎ দুই কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল সরবরাহ করার জন্য সম্মতি চাওয়া হলে প্রতিষ্ঠানটি অবশিষ্ট পরিমাণ সয়াবিন তেল সরবরাহে অপারগতা প্রকাশ করে। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি রেসপনসিভ দরদাতার কাছ থেকে দরপত্রে প্রস্তাবিত এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল দুই লিটার পেট বোতলে প্রতি লিটার অগ্রিম আয়কর, প্রযোজ্য মূসক ও টিসিবির গুদামগুলোতে পরিবহন খরচসহ ১৭১.২৫ টাকা দরে সর্বমোট ১৮৯ কোটি ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যে কেনার সুপারিশ করে।
সর্বশেষ গত ২ ডিসেম্বর তারিখে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দুই লিটার পেট বোতলে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৭২.২৫ টাকা দরে কেনাকাটা হয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/একে