সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬:২৭ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
ইসলামী ব্যাংকের সচেতনতা বিষয়ক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত ‘দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই’ বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্প্রসারণ করতে চায় কানাডা কুমিল্লায় বজ্রপাতে যুবকের মৃত্যু দূতাবাসগুলোর কার্যক্রম তদারকির নির্দেশনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর স্বাস্থ্যসেবার আওতাধীন খাতে ইউজার ফি আদায়ে নীতিমালার সুপারিশ ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে সরকার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সহজলভ্য উৎস খোঁজার তাগিদ প্রতিমন্ত্রীর বান্দরবানে বন্দুকযুদ্ধে ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত সুইজারল্যান্ড সফর শেষে দেশে ফিরেছেন স্পিকার জঙ্গিবাদ পুরোপুরি নির্মূল না হলেও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে: আইজিপি টেকসই উন্নয়নে সময়োপযোগী আর্থিক ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে ইশরাক ১৬ ভরি স্বর্ণ ছিনিয়ে পালানোর সময় জনতার হাতে ধরা পুলিশ কর্মকর্তা কঙ্গোতে সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টা বাবাকে খুঁজে পেতে ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপির মেয়ে ডিবিতে কালশী ট্রাফিক বক্সে আগুন দিলো অটোরিকশাচালকরা কমলাপুর আইসিডি’র নিয়ন্ত্রণ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে নিতে সুপারিশ ভোট কম পড়ার বড় ফ্যাক্টর বিএনপি : ইসি আলমগীর অভিবাসী কর্মীদের টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে কাজ করছে সরকার

নওগাঁয় সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত খামারি

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক:
  • আপলোড সময় রবিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ৩৯ বার পড়া হয়েছে

নওগাঁর মান্দা উপজেলায় ফসলের মাঠ সরিষা ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে। এখন সরিষার ক্ষেতের পাশে মৌবাক্স স্থাপন করে কৃত্রিম পদ্ধতিতে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত খামারিরা। ক্ষেতের পাশে ও ফাঁকা স্থানে মৌবাক্স স্থাপন করে চাষিরা একদিকে যেমন মধু সংগ্রহ করে লাভবান হচ্ছেন, অন্যদিকে ফুলের কৃত্রিম পরাগায়নে ফসলের উপকার হচ্ছে।

আগামীতে নওগাঁ মধু উৎপাদনকারী জেলা হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে। এছাড়া এ জেলায় ব্যাপকভাবে বাণিজ্যিকভিত্তিতে মধু সংগ্রহ সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলার ১১টি উপজেলায় ৩২ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যেখানে ৩৩ হাজার ৬৪০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এ পরিমাণ জমি থেকে চলতি বছর ২৭ হাজার ৩০০ কেজি মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

 

জেলার মান্দা উপজেলার নুরুল্লাহবাদ ইউনিয়নের কৈইকুড়ি গ্রাম, তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রাম ও শংকরপুর গ্রাম, ভারশোঁ ইউনিয়নের ভারশোঁ গ্রামে সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌবাক্স স্থাপন করে কৃত্রিম পদ্ধতিতে মধু সংগ্রহ করছেন মৌচাষিরা।

মৌমাছি ফুল থেকে রেণু সংগ্রহ করে পরাগায়ন হওয়ায় ফলন বৃদ্ধি পাবে। স্থানীয়ভাবে কেউ মধু সংগ্রহ না করলেও রাজশাহী জেলার মোহনপুর উপজেলার দর্শনপাড়া থেকে এসে দুই উদ্যোক্তা মধু সংগ্রহ করছেন কৈইকুড়ি ও শ্রীরামপুর গ্রামে।

মধু সংগ্রহের সময় নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরিষা ক্ষেতের পাশে অভিনব উপায়ে ইউরোপিয়ান মেলিফেরা জাতের মৌমাছি দিয়ে কৃত্রিম পদ্ধতিতে মৌবাক্স দিয়ে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত দেখা যায় তাদের। ৩০০ টাকা কেজি হিসেবে এ মৌসুমে জেলা থেকে প্রায় ৮২ লাখ টাকার মধু সংগ্রহ হবে।

উপজেলার দোডাঙ্গী সরিষা চাষি আব্দুল লতিফ বলেন, তিনি এবছর আড়াই বিঘা সরিষা আবাদ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষার আবাদও ভালো হয়েছে। খামারিরা এসে আমার ক্ষেতের পাশেই মৌবাক্সগুলো স্থাপন করেছেন। মৌমাছিরা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করছেন। ফুলে পরাগায়নের ফলে ফলনও ভালো হবে বলে জানিয়েছে কৃষি অফিস।

 

উদ্যোক্তা রুমিনুল ইসলাম রুস্তম বলেন, ক্ষেতের পাশে ১৩০টি মৌবাক্স স্থাপন করেছেন। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে মৌবাক্সগুলো স্থাপন করেছি। প্রতিটি বাক্সে ৮টি করে ফ্রেম আছে। এপর্যন্ত তিনবারে ২৬ মণ মধু সংগ্রহ করেছি। সরিষা মৌসুমে চার মাসে প্রায় ৬০-৭০ মণ মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি।

প্রতিকেজি মধু পাইকারি দাম ৩০০ টাকা কেজি। ১২ হাজার টাকা মণ হিসেবে ৭০ মণের দাম ৮ লাখ ৪০ টাকা। সরিষা মৌসুমে বাড়ি আসা যাওয়া, শ্রমিক ও পরিবহন খরচ হবে প্রায় ৬০ হাজার টাকা। তবে সরিষা মৌসুমে বেশি পরিমাণ মধু সংগ্রহ করা হয়।

বছরে ৭ মাস মধু সংগ্রহ করা হয়। মূলত সরিষা, কালোজিরা ও লিচু ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করেন। আর বাকি সময় মৌমাছিকে রয়েল জেলি খাইয়ে পুষতে হয়। রাজশাহী থেকে পাইকারি ব্যবসায়ী এবং বিভিন্ন প্রসাধনী প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এসে পাইকারি মূল্যে কিনে নিয়ে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা ইব্রাহিম হোসেন বলেন, একসময় প্রাকৃতিকভাবে মধু সংগ্রহ করা হত। কিন্তু প্রকৃতিতে বন জঙ্গলের পরিমাণ কমে গেছে। মৌমাছি আর আগের মতো জঙ্গলগুলোতে মৌচাক বাঁধতে দেখা যায় না। কিন্তু বর্তমানে কিছু খামারি কৃত্রিম পদ্ধতিতে ক্ষেতের পাশে মৌবাক্স স্থাপন করে মধু সংগ্রহ করছেন।

 

মধু সংগ্রহ করায় একদিকে যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। অপরদিকে পুষ্টির চাহিদা পূরণ হচ্ছে এবং ফসলও ভালো হচ্ছে। শিক্ষিত বেকাররা যদি প্রশিক্ষণ নিয়ে মধু চাষ শুরু করে তাহলে তাদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি বেকারত্ব দূর হবে।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শামসুল ওয়াদুদ বলেন, গত বছর সরিষার জমিতে ২০ হাজার ২৩২টি মৌবাক্স স্থাপন করা হয়েছিল। যেখান থেকে প্রায় ২৬ হাজার ২৪৫ কেজি মধু উৎপাদন হয়েছিল। এবছর মৌবাক্সের সংখ্যা আরো বাড়বে।

তিনি বলেন, প্রশিক্ষিত কিছু মৌচাষি আছে যারা প্রতিবছর কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সরিষা মৌসুমে কৃত্রিম পদ্ধতিতে মধু সংগ্রহ করেন। ক্ষেতের পাশে মৌবাক্স স্থাপন করায় ফুলে কৃত্রিম পরাগায়নের ফলে সরিষার ফলনও ভালো হয়। মধু উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি পুষ্টির চাহিদা পূরণ হবে।

বাংলা৭১নিউজ/বিএফ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com