হঠাৎ করেই নওগাঁর মোকামে বেড়েছে চালের দাম। বর্তমানে দাম বেড়ে কেজিপ্রতি ৬ থেকে ৭ টাকা পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ কৃষক নেতা ও ব্যবসায়ী নেতাদের। ব্যবসায়ীরা বাজার নিয়ন্ত্রণ করায় ভরা মৌসুমে চালের দাম বাড়ছে বলে অভিযোগ কৃষক নেতাদের। আর ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, ধানের সংকটে দাম বেড়েছে বাজারে।
চলতি মৌসুমের স্বর্ণা, গোল্ডেন আতপ, মামুন স্বর্ণা ও চিনি আতপ জাতের ধান মাঠ থেকে প্রায় ৯০ শতাংশ ঘরে তুলেছেন কৃষক। তাই হাটগুলোতে বেচাকেনা জমজমাট। কিন্তু নওগাঁর মোকামে সব ধরনের চালের দর কেজিপ্রতি ৬ থেকে ৭ টাকা বাড়িয়েছেন মিলাররা। এতে বাজারে গিয়ে হোঁচট খাচ্ছেন নিম্ম আয়ের মানুষ। কৃষিপ্রধান এলাকা হয়েও কেন চালের দাম বাড়ে তার কারণ খুঁজে পান না ক্রেতারা। বলেন, এখানে অনেক চাল উৎপাদন হয়, তবুও এখানে চালের দাম বাড়ে। কিন্তু আমাদের আয় বাড়ে না।
চালের দাম বাড়ায় কমে গেছে খুচরা বেচাকেনা। মিল মালিকদের মজুত প্রক্রিয়া দাম বৃদ্ধির কারণ বলছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। মদিনা চাল ঘরের স্বত্বাধিকারী মো. সোহেল রানা বলেন, আগে মিল থেকে চাল আমদানি হতো। কিন্তু এখন মিল থেকে চাল আসছে না। ফলে আমরা মনে করছি, মালিকরাই সব নিয়ন্ত্রণ করছে।
নওগাঁর বাজার ঘুরে দেখা যায়, স্বর্ণা-৫ আগে বিক্রি হতো ৪২ টাকা কেজিতে, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৪৬ টাকা কেজিতে। একইভাবে, ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া গুটি স্বর্ণা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকা কেজিতে। ৫২ টাকার মিনিকেট বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫৬ টাকা কেজিতে, ৫৫ টাকার স্বম্পা কাটারি ৬০ টাকা এবং নাজিরশাইল ৫২ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৭ টাকায়।
তবে হাটে ধানের সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে বলে জানান মিল মালিক ও ব্যবসায়ী নেতারা। নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মো. ফরহাদ হোসেন চাকলাদার জানান, সরকারের নির্ধারিত নীতিমালার চেয়ে মজুত বেশি নেই, অনেক কম রয়েছে। যদি বেশি থেকে থাকে, তাহলে আমি সরকারকে আহ্বান জানাব, সেখানে আইনগত ব্যবস্থা নিতে।
আর কৃষক নেতার অভিযোগ অনিয়ন্ত্রিত বাজার ব্যবস্থায় মিলাররা দাম বৃদ্ধির সুযোগ নিচ্ছে। নওগাঁ জেলা বাসদের সমন্বয়ক মো. জয়নাল আবেদিন মুকুলও বাজার অব্যবস্থাপনার দিকে আঙুল তুলে বলেন, সরকারের যেখানে ২১ লাখ মেট্রিক টন চাল মজুদের ক্ষমতা আছে, সেখানে বেসরকারি ব্যবসায়ীরা ৯০ লাখ মেট্রিক টন চাল মজুদের ক্ষমতা রাখে। এই অসংগতিপূর্ণ আয়োজনের কারণেই দফায় দফায় চালের দাম বাড়ছে বলেই মনে করেন তিনি।
চালকল মালিক সমিতির তথ্যমতে, নওগাঁর মোকামে ৭৬টি অটো ও ৪শ’ হাসকিং মিলে প্রতিদিন ৫ হাজার থেকে সাড়ে ৫ হাজার মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হয়।
বাংলা৭১নিউজ/সর