বাংলা৭১নিউজ,(চাঁপাইনবাবগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জের বরেন্দ্র অঞ্চলের বিস্তৃর্ণ জমিতে এখন পুরোদমে চলছে ইরি-বোরো ধান কাটা। এ পর্যন্ত চাঁপাইনবাগঞ্জের ২০ ভাগ জমির ধান কাটা হয়েছে। গেল বছর ধান কাটতে কৃষি শ্রমিক নিয়ে চাষীরা বেকায়দায় পড়লেও এবারের চিত্র ভিন্ন। এ বছর জেলায় কৃষি শ্রমিকের কোনো সংকট নেই। তবে ধানের নায্য দাম নিয়ে শঙ্কায় আছেন চাষীরা।
উত্তরের সীমান্ত জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে এ বছর বোরো ধানের আবাদ হয়েছে ৪৭ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে। তাই চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিশাল বরেন্দ্র অঞ্চলের মাঠের পর মাঠজুড়ে এখন সোনালী ধানের সমারোহ।
ইতিমধ্যে মাঠের দখিনা বাতাসে দোল খাওয়া কৃষকের বহু কষ্টে ফলা ধানগুলো পেকে যাওয়ায় তা কাটাও শুরু হয়েছে।
বরেন্দ্র অঞ্চলের আমনুরা, নেজামপুর, নাচোল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে কৃষকরা পুরোদমে ব্যস্ত সময় পার করছেন ধান কাটা নিয়ে। করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশের বিভিন্ন জেলায় কৃষি শ্রমিকের সঙ্কট দেখা দিলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জে এর চিত্র উল্টো। এখানে নিয়মিত কৃষি শ্রমিকের পাশাপাশি করোনার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া বিভিন্ন পেশার অনেক শ্রমিক এবার যুক্ত হয়েছেন ধান কাটায়।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, নিয়মিত কৃষি শ্রমিকের পাশাপাশি ধান কাটতে সহায়তা করছে যান্ত্রিক কম্বাইন্ড হারভেস্টর। এ বছর জেলায় মূল দামের অর্ধেক ভর্তুকি দিয়ে ১৩ কম্বাইন্ড হারভেস্টও ও ২টি রিপার মেশিন কৃষকদের দেওয়া হয়েছে। একটি কম্বাইন্ড হারভেস্টর দিনে ৩০ বিঘারও বেশি জমির ধান কাটতে সক্ষম।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্র জানিয়েছে, এবার মৌসুমের শুরু থেকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকাসহ কৃষি উপকরণে সমস্যা না হওয়ায় ফলন পাওয়া যাচ্ছে আশানরূপ। এবার ডিএপি সার ভুর্তুকি মূল্যে মাত্র ১৬ টাকা কেজি দরে চাষীদের দেওয়ায় তা ধানের ভালো উৎপাদনে সহায়তা করেছে। তবে ধানের আশানরূপ ফলনেও চাষীরা নায্য দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কা করছেন।
ঝিলিম ইউনিয়নের চাষী শহীদুল বলেন, ‘ধানের ফলন যার যেমন জমি তেমন পাওয়া যাচ্ছে। কোনো জমিতে বিঘা প্রতি ১৮ মণ তো কোনো জমিতে বিঘা প্রতি ১৭ মণ করে পাওয়া যাচ্ছে। কোথাও কোথাও ২০ মণও পাওয়া গেছে। তবে ধানের ফলন পাওয়া গেলেও দাম যে কী হবে তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছি। কারণ ধান উঠলে দাম তো কমে যায়’।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বড় দূর্যোগ না হলে ধান কাটতে এবং ফলনের কোনো সমস্যা হবে না। আর ১২/১৩ দিনের মধ্যেই ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে। এখন পর্যন্ত যে ফলন পাওয়া যাচ্ছে, তাতে এ বছর ২৫ লাখ মেট্রিক ট্রন চাল উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে’।
ধানের নায্য দাম পাওয়া নিয়ে চাষীদের শঙ্কা প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ সরকার প্রতিমণ ধান ১ হাজার ৪০ টাকা দরে কিনবে। নির্দেশিত পথ অনুসরণ করে তালিকাভুক্ত চাষীদের কাছ থেকে ধান কেনা হবে। এর বাইরে বাজারেও ধানের দাম ভালোই আছে। কাজেই কৃষকরা ধানের দাম ভালোই পাবেন’।
বাংলা৭১নিউজ/এফএস