সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:২১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
চাকরির বয়স ৩৫ আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদল যমুনায় অটোমেটেড সেবা প্রতিরোধ করবে অপচয় ও দুর্নীতি : অর্থ উপদেষ্টা নেপালে বন্যা-ভূমিধসে ১৯২ মৃত্যু, উদ্ধারে হিমশিম আমরা প্রস্তুত, দীর্ঘ যুদ্ধেও বিজয়ী হবো: হিজবুল্লাহর উপপ্রধান এবি ব্যাংকের বন্ড ইস্যু পুনর্বিবেচনার আবেদন তেলবাহী জাহাজে আগুনের ঘটনায় ২ জনের মরদেহ উদ্ধার ৯৯৯-এর রেসপন্স টাইম আরো কমিয়ে আনা হবে : আইজিপি প্রাথমিক শিক্ষা সংস্কারে কমিটি, নেতৃত্বে ইমিরেটাস অধ্যাপক মনজুর হাসিনার পতনের পর গ্রামীণফোনের শেয়ারদর বেড়েছে ৫৩ শতাংশের বেশি স্বামীসহ গ্রেফতার সাবেক এমপি হেনরি যুবদল নেতা হত্যা মামলায় ৫ দিনের রিমান্ডে সুলতান মনসুর মিরাজ-সাকিবের ঘূর্ণির পর ২৮৫ রানে ইনিংস ঘোষণা ভারতের অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমে সুপারিশমালা দেবে বিএনপি সেপ্টেম্বরে নির্যাতনের শিকার ১৮৬ নারী-কন্যাশিশু জিয়াউর রহমানকে ‘রাজাকার’ বলায় মামলা চাকরিতে প্রবেশের বয়স বৃদ্ধির দাবি: পর্যালোচনা কমিটি গঠন ডিসি নিয়োগ নিয়ে হট্টগোল: ১৭ উপসচিবকে শাস্তির সুপারিশ ঢাকাসহ ৯ অঞ্চলে মাঝ রাতের মধ্যে ঝোড়ো হাওয়ার আভাস বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তী সরকার যুক্তরাষ্ট্রে হেলেনের তাণ্ডবে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯১

দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন মোদি, বাংলাদেশের প্রত্যাশা কী পূরণ হবে?

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় রবিবার, ২৬ মে, ২০১৯
  • ৮১ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,রিপোর্ট:  আবারও লোকসভা নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। দ্বিতীয় মেয়াদেও দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদিই। ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার প্রধান হিসেবে এক বার্তায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে বিজয়ের অভিনন্দন জানিয়েছেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দুই দেশের রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক বেশ ঘনিষ্ঠ। ভারতে এ সময়ে প্রথমে কংগ্রেস এবং পরে বিজেপি ক্ষমতায় থাকলেও বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে কোন হেরফের ঘটেনি।

বরং এই সময়টাতে দুই দেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময়, ভারতকে সড়ক পথে ট্রানজিট দেওয়া, চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্র বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া, দুই দেশের প্রতিরক্ষা চুক্তি ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমনে বাংলাদেশের আন্তরিক সহায়তা সহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে চুক্তি হয়েছে। এছাড়াও দুই দেশের মধ্যে সাধারণ মানুষের আসা যাওয়াও আগের চেয়ে বেড়েছে। এরপরও বেশ কিছু অমিমাংশিত ইস্যু রয়েছে। আরেক দফা মোদী সরকার ক্ষমতায় আসায় বাংলাদেশ কী পারবে চলমান সমস্যগুলোর ইতি টানতে?

এ ব্যপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকারের নতুন মেয়াদে বহুল প্রত্যাশিত তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন হবে বলে বাংলাদেশের প্রত্যাশা। তিনি বলেন, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার অনেক আগেই তিস্তা চুক্তিতে অনুমোদন দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আপত্তির কারণে এতদিন ধরে এই চুক্তি আটকে আছে। আশা করছি, মোদি সরকারের এই আমলেই তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন হবে। এ ছাড়াও ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে। সেগুলো নিয়েও মোদি সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে মনে করেন ড. মোমেন।

তিস্তা নদী উত্তরের জীবনরেখা। ভারত ২০১৪ সালে তিস্তার পানি একতরফা প্রত্যাহার করায় এই নদী অববাহিকায় ভীষণ সংকট দেখা দিয়েছিল। তিস্তার পানি ভাগাভাগি নিয়ে একটি চুক্তি না থাকার কারণে শুষ্ক মৌসুমে তিস্তায় যেখাে ৫ হাজার কিউসেক পানি প্রয়োজন, তখন পাওয়া যায় মাত্র ২০০-৩০০ কিউসেক। কখনো কখনো এরও কম।

তিস্তায় যখন পূর্ণমাত্রায় পানি পাওয়া যেত তখন শুষ্ক মৌসুমে প্রায় ৬৫-৭০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ করা হতো। সাধারণভাবে ধান চাষ করলে যে ব্যয় হয়, সেচ প্রকল্পের সুবিধা নিয়ে সেই ধান চাষ করলে ব্যয় হয় ২০ ভাগের ১ ভাগ। রংপুরের মঙ্গা দূরীকরণে তিস্তা সেচ প্রকল্প অনন্য ভূমিকা পালন করেছে। এখন সেই সেচ প্রকল্প কার্যত শুষ্ক মৌসুমে অচল। রেশনিং সিস্টেমে মাত্র আট হাজার হেক্টর জমিতে পানি দিয়ে ধান চাষ করা হচ্ছে। এতে করে তিস্তা অববাহিকার জীববৈচিত্রে বিরূপ পরিবর্তন দেখা দিয়েছে।

২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একসঙ্গেই বাংলাদেশ সফরে আসার কথা ছিল। হঠাৎ করেই বাংলাদেশ সফরের আগ মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর এলেন না। মনমোহন সিং সহজেই বললেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছাড়া তিনি তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি করবেন না। সেই ঝুলে যাওয়া তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি আজু হয়নি।

তিস্তার নিয়ে যখন এমন অবস্থা, তখন এই নদীর পানি বন্টন চুক্তি নিয়ে সতর্কতার সাথে পথ চলতে বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক লাইলুফার ইয়াসমিন। তার মতে, এখনি খুব বেশি আশা করাটা ভুল হবে। তিনি বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে তিস্তা ইস্যু ভারতের জন্য একটা দরকষাকষির বিষয়।

ফলে খুব শীঘ্রই এটা সমাধান হয়ে যাবে সে আশা করা ভুল হবে। তবে এই তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির আরেকটা রূপ দেখা যাবে কয়েক মাসের মধ্যেই। তখন বোঝা যাবে তিস্তার পানি বন্টন চুক্তির ক্ষেত্রে মমতা ব্যানার্জীর আপত্তিই একমাত্র কারণ কিনা!

ভারতের জন্য বাংলাদেশ অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ন। ভূ-রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিকভাবেই বাংলাদেশের এই গুরুত্ব বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রটির কাছে।
আর সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুুন কবির মনে করেন, ভারতে নতুন সরকার গঠন হলেও প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মাত্রায় তেমন পরিবর্তন আসবে না। বাংলাদেশকে এখন ভাবতে হবে কিভাবে সে সম্পর্কে আরো গতি আনা যায়।

এজন্য বাংলাদেশের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হওয়া উচিত অর্থনৈতিক দিকগুলো। যেমন বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক যোগাযোগ বাড়ানো। গত মেয়াদে অর্থনৈতিক সহযোগিতার কথা বললেও মোদী সরকার ততটা অগ্রগতি করতে পারে নাই। মোদির এই মেয়াদে ভারতের সাথে কিভাবে বাংলাদেশকে বণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক খাতে সুফল নিয়ে আসবে-সেদিকটাতে মনোযোগ দিতে হবে।

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণও অনেক বেশি। ২০১৩ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২৪ লাখ কোটি টাকারও বেশি। এই ঘাটতির পরিমান ক্রমেই বাড়ছে। ভারত বাংলাদেশকে যে লাইন অব ক্রেডিট দেয়, সেটা ছাড় করার ক্ষেত্রে থাকে দীর্ঘসূত্রিতা। প্রকল্প পর্যন্ত পৌছাতে অনেক সময় লাগে। আবার এর শর্ত থাকে তাদের দেশ থেকে কাঁচামাল কিনতে হবে, যা অনেক সময় বাংলাদেশের জন্য সুবিধাজনক হয় না।

এদিকে, ক্ষমতাসীন দলের একাধিক শীর্ষ নেতার প্রত্যাশা, প্রস্তাবিত তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি মোদি সরকারের আমলেই হবে এবং এ নিয়ে বাংলাদেশের সরকারের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভারত। রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারকে চাপে রাখতেও ভারতের সহযোগিতা পাবে বলে বাংলাদেশ আশাবাদী।

এ প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, নরেন্দ্র মোদি পুনরায় ক্ষমতায় আসায় ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগের নতুন নতুন দরজা উন্মোচিত হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ভোটের প্রশ্নবিদ্ধতাকে গুরুত্ব না দিয়ে বিজেপির নতুন সরকার শুরু থেকেই বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন দলের পাশে দাঁড়িয়ে সেই ভোটকে মান্যতা দেয়। ভারতের মান্যতার প্রয়োজনীয়তা বাংলাদেশের কাছে অনস্বীকার্য।

আওয়ামী লীগের প্রত্যাশা, গত ৫ বছরে বিজেপি ও দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক ভালোই ছিল। এবারও সেই যাত্রা অব্যাহত থাকবে। ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয়ের জন্য দলের শীর্ষ কয়েক নেতা ওই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত সরকারকে দায়ী করেছিল। আর ওই সময় ভারতে বিজেপি ক্ষমতাসীন ছিল। সেই অবস্থা এখন আর নেই।

কূটনীতিকরা মনে করেন, সম্পর্কের ধারাবাহিকতা রক্ষায় দুই দেশের ক্ষমতাসীন দলই এখন সচেষ্ট। পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস এখন দুই দেশের সম্পর্কের ভিত্তি।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচবি

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com