জ্বালানি উৎপাদনে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি আরামকো। গত বছর দ্বিগুণ মুনাফা অর্জনের খবর সামনে আসার পরপরই এ ঘোষণা দিলো বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম কোম্পানিটি। আগামী পাঁচ বছর ধারাবাহিকভাবে জ্বালানি উৎপাদনে বিনিয়োগ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরামকো। খবর বিবিসির।
চাহিদার তুলনায় তেল-গ্যাসের সরবরাহ কম হওয়ায় সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী জ্বালানির দাম বাড়তে দেখা যায়। এরপর শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এর কারণে রুশ জ্বালানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে রাশিয়ার ওপর জ্বালানিনির্ভরতা কমাতে বিকল্প উৎস খুঁজতে পশ্চিমা নেতাদের ওপর চাপ তৈরি হয়েছে।
এ অবস্থায় জ্বালানির উচ্চমূল্য নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সৌদি আরামকোর উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বাড়তি বিনিয়োগের ফলে উৎপাদন বাড়তে পাঁচ থেকে আট বছর সময় লাগতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
গত সপ্তাহে সৌদি আরব সফরকালে দেশটিকে স্বল্পমেয়াদে হলেও বিশ্ববাজারে অতিরিক্ত তেল সরবরাহের আহ্বান জানিয়েছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
বর্তমানে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে। তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেকের সবচেয়ে বড় তেল উৎপাদনকারী সদস্য সৌদি আরবের এমন ঘোষণায় বিশ্বে জ্বালানির দাম কমবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
২০২০ সালে বিশ্বঅর্থনীতিতে ধীরগতির কারণে সৌদি আরামকোর মুনাফা উল্লেখযোগ্য হারে কমে গিয়েছিল। কিন্তু অনেক দেশে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ফের গতি আসায় ২০২১ সালে জ্বালানির দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। ফলে বিশ্বব্যাপী বৃহৎ জ্বালানি উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর মুনাফা বাড়তে শুরু করে।
সৌদি আরামকো জানিয়েছে, তারা ২০২১ সালে দ্বিগুণের বেশি নিট মুনাফা অর্জন করেছে। ওই বছর তাদের নিট মুনাফা ছিল ১১ হাজার কোটি মার্কিন ডলার, যা ২০২০ সালে ছিল মাত ৪ হাজার ৯০০ কোটি ডলার।
২০২১ সালে অপরিশোধিত তেলের দাম প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছিল। বর্তমানে জ্বালানির দাম বেশি থাকায় ২০২২ সালে এ খাতের মুনাফা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এ অব্স্থায় আরামকো ঘোষণা দিয়েছে, চলতি বছর তারা মূলধন ব্যয় সাড়ে চার হাজার কোটি থেকে পাঁচ হাজার কোটি ডলার বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে, গত বছর যা ছিল ৩ হাজার ১৯০ কোটি ডলার।
প্রতিষ্ঠানটি আরও জানিয়েছে, গত মাসে (ফেব্রুয়ারি) তারা দৈনিক গড়ে এক কোটি ব্যারেল অপরিশোধিত তেল উৎপাদন করেছে। কিন্তু ২০২৭ সাল পর্যন্ত আরামকো প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১ কোটি ৩০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল উৎপাদন করবে। এছাড়া ২০৩০ সালের মধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন ৫০ শতাংশ বাড়াবে সৌদি প্রতিষ্ঠানটি। পাশাপাশি, উল্লেখযোগ্য হারে হাইড্রোজেন রপ্তানি বাড়ানোরও পরিকল্পনা করছে তারা।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ