বাংলা৭১নিউজ, মোঃ নজরুল ইসলাম, রাজবাড়ী প্রতিনিধি: আসন্ন কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে রাজধানীগামী পশুবাহী ট্রাক নদী পারাপার হতে আসতে শুরু করেছে দৌলতদিয়া ঘাটে। একদিকে ঘাটে নানান সমস্যা অপরদিকে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে ঘাট এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে যানবাহনের দীর্ঘ সারি। এতে করে গরু ব্যবসায় ও সাধারন যাত্রীদের চরম দূর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট।
জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি সংকট বিরাজ করছে। ইতিমধ্যে ফুলে ফেঁপে উঠেছে প্রমত্তা পদ্মা-যমুনা। এতে তীব্র ¯্রােত সৃষ্টি হয়েছে নদীতে। ¯্রােতের কারণে ফেরিগুলো স্বাভাবিক চলাচল করতে পারছে না। ফেরিগুলোর পক্ষে প্রচন্ড ¯্রাোত ঠেলে এপার-ওপার করা অনেকটাই দুরূহ। অপরদিকে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ তার ওপর ভিআইপিদের জন্য ফেরির দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে যানবাহন পারাপার ব্যহত হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ এ নৌরুট দিয়ে প্রতিদিন একাধিক ভিআইপি পারাপার হন। অনেক সময় এ সকল ভিআইপিকে প্রটোকল দিতে ঘন্টার পর ঘন্টা ফেরি পন্টুনে তৈরী রাখতে হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিআইডব্লিউটিসি’র এক কর্মকর্তা জানান, ভিআইপিদের জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। প্রতিদিন এখান দিয়ে মন্ত্রী-সচিব থেকে শুরু করে বড় বড় কর্মকর্তারা চলাচল করেন। তাঁদের আসার ব্যাপারে আগে থেকে বার্তা পাঠানো হয়। তাই তাঁদের জন্য ফেরি তৈরী করে রাখতে হয়।
বিআইডব্লিউটিসি ও ঘাট সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র জানায়, ছোট-বড় ১৮ টি ফেরিতে গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার যানবাহন পারাপার হয়। এরমধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে ৪ টি ফেরি বিকল হয়ে মেরামতে রয়েছে। বর্তমানে রুটে ১৪ টি ফেরি যানবাহন পারাপার করছে। কিন্তু ¯্রােতের কাছে অসহায় এই ফেরিগুলো। স্বাভাবিক সময় দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়ায় যেতে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট সময় লাগত। বর্তমানে সেখানে সময় লাগছে ১ থেকে দেড় ঘন্টা। অনেক সময় ¯্রােতের তীব্রতায় কুলিয়ে উঠতে না পেরে অনেক ফেরিকে মাঝনদী থেকে ফিরে আসতে বাধ্য হয়। এতেকরে ফেরি ট্রিপ অনেক কমে গেছে।
সরেজমিন রোববার দুপুরে দৌলতদিয়া ঘাট ঘুরে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের গোয়ালন্দ বাজার পর্যন্ত দীর্ঘ ছয় কিলোমিটার জুড়ে যানবাহনের দীর্ঘ সারি। এরমধ্যে প্রথম দিকে ডান পাশে গরুবাহি ট্রাকের সারি ও বামপাশে যাত্রীবাহী দুরপাল্লার পরিবহন। কোরবানীর ঈদ উপলক্ষে গরুবাহি ট্রাক অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করায় মহাসড়কে আটকা পড়েছে অন্তত ৫ শতাধিক যাত্রীবাহি বাস। তীব্র গরমের মধ্যে ট্রাকে থাকা গরুগুলিকে সুস্থ্য রাখতে হাত পাখার বাতাস করা হচ্ছে। সময় বাড়ার সাথে সাথে দীর্ঘ হচ্ছে যানবাহনের সারি।
কুষ্টিায় থেকে ১৬টি গরু বোঝাই করে আসা ট্রাক চালক আশরাফুল ইসলাম (২৮) জানান, তিনি ঘাটে এসে ঘন্টা তিনেক সিরিয়ালে আটকা থেকে ফেরির টিকিট পেয়েছেন। টিকিটের সাথে ১০৬০ টাকা লেখা থাকলেও তাকে টিকিটটি পেতে অতিরিক্ত ৬৫০ টাকা দিতে হয়েছে।
এ সময় ফরহাদ হোসেন (৩০), কবির হোসেন (২৩) জানান, তারা ২৫০০ টাকা দিয়ে ফেরির টিকিট পেয়েছেন। টাকা একটু বেশী লাগলেও গরু নিয়ে সিরিয়ালে অপেক্ষা করা খুবই কঠিন কাজ। গরুগুলিও যেমন অসুস্থ্য হয়ে পড়ে, আবার ব্যবসায়ীরও ক্ষতি হয়। গরুবাহি ট্রাককে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করায় তারা কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।
বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া অফিসের ব্যাবস্থাপক (বানিজ্য) সফিকুল ইসলাম জানান, বর্তমানে ১৪টি ফেরি যানাবাহন পারাপার করছে। অতিরিক্ত যানবাহনের কারণে সারির সৃষ্টি হয়েছে। তবে কোরবানীর ঈদের বিষয়টি মাথায় রেখে পশুবাহি ট্রাকগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করছে।
অপর দিকে ঈদুল আযহায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল রাখতে ও জানজট নিরসনে জেলা পুলিশের উদ্যোগে রোববার সকালে রাজবাড়ীর পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার সালমা বেগম পিপিএম,র সভাপতিত্বে বক্তৃতা করেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহম্মদ তারিকুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ আছাদুজ্জামান, রাজবাড়ীর ট্রাফিক ইনেসপেক্টর মৃদুল রঞ্জন দাস, গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মীর্জা আবুল কালাম আজাদ, বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যাবস্থাপক সফিকুল ইসলাম, বিআইডব্লিউটিএ,র সহকারী প্রকৌশলী শাহ আলম, সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ, লঞ্চ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মহম্মদ আলী মোল্লা, দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মন্ডল, গোয়ালন্দ উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক নজরুল ইসলাম মন্ডল প্রমুখ।
সভায় দৌলতদিয়া ঘাটে কোরবানি পশু বাহি গাড়িকে অগ্রাধীকার ভিত্তিতে পারাপার করা, পর্যাপ্ত ফেরির ব্যাবস্থা রাখা, দৌলতদিয়ায় চারটি ঘাট সচল রাখা, লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন না করাসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন।
রাজবাড়ী জেলা পুলিশের উদ্যোগে রচনা প্রতিযোগিতা
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজবাড়ী জেলা পুলিশের উদ্যোগে রোববার বিকেলে রচনা প্রতিযোগিতা ও পুরুষ্কার বিতরন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার সালমা বেগমের সভাপতিত্বে এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহম্মদ তারিকুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার আছাদুজ্জামান প্রমুখ।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতায় জেলার মোট ২০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অংশ গ্রহন করে। পরে বিজয়ীদের হাতে পুরুষ্কার তুলে দেন অতিথিবৃন্দ।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ্য ৫ শতাধীক পরিবারের মাঝে ত্রান বিতরন
রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী ওসাংবাদিক মোঃ মোক্তার হোসেন খানের উদ্যোগে রবিবার সকালে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ্য ৫ শতাধীক পরিবারের মধ্যে ত্রান বিতরন করা হয়েছে।
ত্রান বিতরন অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে কালুখালী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ্যদের হাতে আট কেজি করে চাল, আলু, নগদ দুই শত টাকা করে ৫ শ টি পরিবারের হাতে তুলে দেন রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী ও সাংবাদিক মোঃ মোক্তার হোসেন খান।
এ সময় বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী ও সাংবাদিক মোঃ মোক্তার হোসেন খান জানান, এবারের বন্যায় কালুখালী উপজেলায় অনেক ক্ষতি হয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ্য মানুষের পাশে দাড়াতে তার এই উদ্যোগ।
ট্রেনের বাঙ্কার থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার
রাজবাড়ীর ড্রাই আইচ ফ্যক্টরী এলাকায় রোববার সকালে খুলনা-গোয়ালন্দ মেইল ট্রেনের একটি বাঙ্কার থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় দুটি পাইপ গান, তিনটি বড় ছোড়া, একটি লোহার সাবল, ও একটি স্ক্রু ড্রাইভার উদ্ধার করেছে পিআরপি থানা পুলিশ।
রাজবাড়ী জিআরপি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হারুন মজুমদার জানান, নিয়মিতভাবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অভিযান পরিচালনা কালে রাজবাড়ীর ড্রাই আইচ ফ্যক্টরী এলাকায় খুলনা-গোয়ালন্দ মেইল ট্রেনের বগি নম্বর ৫২১৮ এর একটি বাঙ্কারের মধ্যে একটি স্কুল ব্যাগে রক্ষিত অবস্থায় দুটি পাইপ গান, তিনটি বড় ছোড়া, একটি লোহার সাবল উদ্ধার করা হয়। তবে এ ব্যপারে কাইকে আটক করা যায়নি।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস