বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ডব্লিউটিও-এর দোহা রাউন্ডে গৃহীত সিদ্ধান্ত সমুহ বাস্তবায়িত হলে বিশ্ববাণিজ্য ক্ষেত্রে অনেক সমস্যার সমাধান হবে।এলডিসি ভুক্ত দেশগুলোকে ডব্লিউটিও-এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক যে সকল সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা, সেগুলো সকল উন্নত দেশ দিচ্ছে না। ডব্লিউটিও-কে কার্যকর করতে দোহা মিনিস্টিরিয়াল কনফারেন্সে গৃহীত সকল সিদ্ধান্তের পূর্ণ বাস্তবায়ন প্রয়োজন। হংকং, বালী এবং নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত মিনিস্টেরিয়াল কনফারেন্স গুলোও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ডব্লিউটিও-কে কার্যকর করতে নতুন করে ভাবতে। নতুন কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে পূর্বের সিদ্ধান্ত সমুহ বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর বাণিজ্য সক্ষমতা সীমিত, ক্রমেই পিছিয়ে পরছে রপ্তানি বাণিজ্যে। রপ্তানি বাণিজ্যে এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর অবদান শতকরা একভাগের নীচে। দারিদ্র বিমোচন ও শিল্পায়নের জন্য এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর খাদ্য নিরাপত্তা, প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অবদান রাখার সুযোগ দেয়া প্রয়োজন। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে প্রবেশ করেছে। সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে ২০২৭ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশের যাত্রা শুরু করবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল মধ্যআয়ের বাংলাদেশ গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এখন তা বাস্তব। উন্নয়নশীল দেশের জন্য যে সকল চ্যালেঞ্জ রয়েছে বাংলাদেশ সেগুলো মোকাবেলা করতে সক্ষম।
বাণিজ্যমন্ত্রী আজ (২০মার্চ) ভারতের নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত ইনফরমাল ডব্লিউটিও মিনিস্টেরিয়াল মিটিং এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানের সময় এসব কথা বলেন। ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী সুরেশ প্রুভু-র সভাপতিত্বে বাণিজ্যমন্ত্রীদের এ মিটিং-এ ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান, কানাডা, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনামসহ বিশে^র ৫৩টি দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী অথবা তাদের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত থেকে বিষয়ের উপর মতামত প্রদান করেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ইউরোপিয়ন ইউনিয়নের দেয়া এভ্রিথিংস বাট আর্মস এর আওতায় বাংলাদেশকে দেওয়া ডিউটি ফ্রি ও কোটা ফ্রি বাণিজ্য সুবিধা বাংলাদেশকে অনেক সহায়তা প্রদান করেছে। এর ফলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ভাবে অনেক এগিয়ে গেছে। এজন্য বাংলাদেশ ইউরোপিয়ন ইউনিয়নের প্রতি কৃতজ্ঞ। বাংলাদেশ এখন বিশে^ উন্নয়নের রোল মডেল। ডিজিটাল মধ্যআয়ের বাংলাদেশে ২০২১ সালের মধ্যে মানুষের মাথাপিছু আয় হবে ২ হাজার মার্কিন ডলার হবে, যা ২০১১ সালে ছিল মাত্র ৭৫৫ মার্কিন ডলার। দরিদ্রসীমা ৪০ শতাংশ থেকে নেমে আসবে ১৫ শতাংশে। রপ্তানি বাণিজ্যে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ডব্লিউটিও-র বিগত মিনিস্টিরেয়িাল কনফারেন্সে এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য ডিউটি ফ্রি-কোটা ফ্রি বাণিজ্য সুবিধা, প্রিফারেন্সিয়াল রুলস অফ অরিজিন, সার্ভিস ওয়েভার, ট্রিফস চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করার মতো প্রতিশ্রুতিগুলোর বাস্তবায়ন এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য খুবই প্রয়োজন। অনেক ক্ষেত্রেই এগুলোর পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হয়নি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি বিগত যে কোন সময়ের চেয়ে ভালো। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিনত হবার পর যে সকল বাণিজ্য চ্যালেঞ্জ আসবে সেগুলো মোকাবেলা করতে বাংলাদেশ সক্ষম। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে এ বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে কাজ শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সফল ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ বাণিজ্য বহুমূখী করনে এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নত দেশে ঔষধ রপ্তানির ক্ষেত্রে শর্ত শীতিলের ট্রিপস চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধিতে রপ্তানি বাণিজ্যে বৃদ্ধির সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ সফল ভাবে এমডিজি অর্জন করেছে, এসডিজি ার্ঝনে সফল ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।
মন্ত্রী পরে কনফারেন্সের ওয়ে ফরওয়ার্ড ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে সাক্ষাতের সময় যে ৫জন বাণিজ্যমন্ত্রী বক্তব্য রাখেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ তার মধ্যে অন্যতম।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস