বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৪৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহার না হলে কারখানা বন্ধ করবেন ব্যবসায়ীরা ব্যবসায়ী ইছহাক দুলালের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘিরে ভাঙনের শঙ্কায় নেতানিয়াহুর সরকার গর্দান ও তলোয়ার দুটো একসঙ্গে থাকতে পারে না : হাসনাত বরিশালের সামনে কোনঠাসা ঢাকা, ১৩৯ রানে অলআউট ১৩ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরলো হাসিনা ও তার পরিবারের নাম পরিবেশকদের পদচারণায় ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্সে উৎসবমুখর পরিবেশ কোনো ভোটই রাতে হবে না : ইসি মাছউদ প্রধান উপদেষ্টার ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে যাচ্ছেন বিএনপির সালাহউদ্দিন গাজায় যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানালো জাতিসংঘ এবি ব্যাংক ‘সম্পূর্ণা’ গ্রাহকের পরিবারের হাতে তুলে দিলো আর্থিক সহায়তা বরিশালের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে ঢাকা শিক্ষা ভবনের সামনে পুলিশ-আদিবাসী শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ ১৭ বছর পর কারামুক্ত লুৎফুজ্জামান বাবর পটুয়াখালীতে শাহ্‌জালাল ইসলামী ব্যাংকের স্কুল ব্যাংকিং কনফারেন্স ডা. ফয়েজ হত্যা : ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রেস্তোরাঁ খাতে বাড়তি ভ্যাট প্রত্যাহার প্রধান উপদেষ্টার ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে যাচ্ছে না বিএনপি বাবরকে বরণে নেত্রকোনা থেকে ৩০ হাজার মানুষ ঢাকায় জনগণ আর কোনোদিন নতজানু পররাষ্ট্রনীতি মেনে নেবে না

দেড় হাজার শ্রমিক নিয়ে মালিক-কন্যার গায়েহলুদ

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী, ২০২০
  • ৫৩ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: চট্টগ্রামের শিল্পাঞ্চলের একটি কারখানা। প্রতিদিনই এই কারখানার সেলাই মেশিনের টুকটাক শব্দ, গাড়ির হর্ন, শ্রমিকদের হাঁকডাক-সবমিলিয়ে জমজমাট থাকে পুরো এলাকা। পথচারী কিংবা আশপাশের লোকজন অভ্যস্ত গার্মেন্টস কারখানার পরিবেশে। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে চারদিকে ছিল সুনসান নীরবতা। শ্রমিকরা কাজে আসেননি। কোনো হইচইও নেই। এত বেলা তবুও কারখানায় আসছে না কেন কেউ? মে দিবস বা কোনো সরকারি ছুটিও তো নেই। তাহলে তারা কেন আসছেন না?

বেলা আরেকটু বাড়ার পরই পাওয়া গেল এর উত্তর। দলে দলে কারখানায় আসতে লাগলেন শ্রমিকরা। কিন্তু এ কী! সবাই হলুদ শাড়ি পরে আসছেন কেন? খোঁপায় এত ফুলই বা কেন লাগিয়েছেন গার্মেন্টস কর্মীরা! কিছুই যেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না আশপাশের, দোকানদার কিংবা অন্যান্য কারখানার লোকজন।

ctg-(2)

খোঁজ নিয়ে জানা গেল, কারখানা মালিকের একমাত্র কন্যার গায়েহলুদ। আর গায়েহলুদের পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালিত হবে গার্মেন্টস কন্যাদের দ্বারা। সত্যি সত্যি তাই হলো চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ শিল্প এলাকার ইন্ডিপেন্ডেন্ট গার্মেন্টসে। কোম্পানির মালিক, খ্যাতনামা গার্মেন্টস ব্যবসায়ী ও ব্যবসায়ী নেতা এবং নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সভাপতি এস এম আবু তৈয়ব নিজের একমাত্র কন্যার গায়েহলুদের ব্যবস্থা করেছেন গার্মেন্টসের দেড় হাজার নারী শ্রমিকের সঙ্গে নিয়ে।

কারখানার সব নারী শ্রমিককেই তিনি দিয়েছেন হলুদ শাড়ি। যে শাড়িটি তিনি নিজের স্ত্রী ও স্বজনদের জন্য কিনেছেন, ঠিক একই শাড়ি কিনেছেন কারখানার দেড় হাজার শ্রমিকের জন্য। পুত্রসহ নিজে গায়েহলুদের অনুষ্ঠানে যে পাঞ্জাবি পরেছেন, ঠিক একই পাঞ্জাবি দিয়েছেন গার্মেন্টসের পুরুষ শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের।

ctg-(2)

চট্টগ্রাম ক্লাবে বিয়ের অনুষ্ঠানে যেই বাবুর্চি রান্না করবেন, তাকে দিয়েই একই মেন্যুর রান্না পরিবেশিত হয়েছে গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারীদের মাঝে।

ইন্ডিপেন্ডেন্ট গার্মেন্টস কারখানা সূত্রে জানা গেছে, গায়েহলুদ উপলক্ষে গতকাল কারখানার সব শাখায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। গার্মেন্টসের ছাদের ওপর মঞ্চ করে আয়োজন করা হয় মালিককন্যার গায়েহলুদের অনুষ্ঠান। পুরো ছাদ জুড়ে ছিলেন শত শত নারী। সাবই গার্মেন্টস কন্যা। সবার পরনে একই শাড়ি। ব্যবসায়ী আবু তৈয়বের স্ত্রী উলফাতুন্নেছা পুতুলও একই শাড়ি পরে এসেছিলেন অনুষ্ঠানে।

এই দম্পতির একমাত্র কন্যা সাইকা তাফাননুম প্রীতির গায়েহলুদ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে চারদিকে যেন ছড়িয়ে পড়েছিল উচ্ছ্বাস। গার্মেন্টস কন্যারা সবাই ‘হলুদ বাটো, মেন্দি বাটো’, ‘লীলাবালি লীলাবালি…সাজাইবো তোরে’ গানের তালে তালে যেভাবে সুন্দর করে নাচছিলেন, যে কেউ হয়তো বলবে তাদের কোনো সখী অথবা বোনের বিয়ে হচ্ছে। এস এম আবু তৈয়বের একমাত্র কন্যা প্রীতির বিয়ে হচ্ছে ঢাকার বারিধারার আসলাম মোল্লা ও রুবিনা মোল্লার পুত্র শফিউল ইসলাম মোল্লার (নিলয়) সঙ্গে।

ctg

আগামী ৫ জানুয়ারি নগরীর নেভি কনভেনশন সেন্টারে এই বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বিয়ে অনুষ্ঠানের আগে গতকাল দেড় হাজার গার্মেন্টস কন্যাকে নিয়ে প্রীতির গায়েহলুদের অনুষ্ঠান করা হয়। এতে গার্মেন্টস কন্যাদের সরব অংশগ্রহণ পুরো অনুষ্ঠানটিকে দিয়েছে আলাদা সৌন্দর্য।

তবে সবকিছু ছাপিয়ে সবার ভালোবাসায় সিক্ত হলেন প্রীতি। গার্মেন্টস কন্যারা কেউ পঞ্চাশ টাকা, কেউ বিশ টাকা, কেউবা একশ টাকা চাঁদা দিয়ে নিজেদের মতো করে প্রীতিকে চমৎকার এক সেট স্বর্ণের গহনা উপহার দিয়েছেন। প্রায় দেড় লাখ টাকা দিয়ে কেনা সেই গহনা গার্মেন্টস কন্যারাই পরিয়ে দিয়েছেন মালিককন্যার গায়ে।

ctg-(2)

নিজের একমাত্র কন্যার গায়েহলুদের অনুষ্ঠান গার্মেন্টসের ছাদে গার্মেন্টস কন্যাদের দিয়ে করানোর এই বিরল আয়োজনের ব্যাপারে এস এম আবু তৈয়ব বলেন, ‘এটা প্রচারের জন্য নয়। গার্মেন্টস কারখানার এই খেটে খাওয়া শ্রমিকদের প্রচুর ভূমিকা রয়েছে আমার জন্য, আমার কন্যার জন্য, পুরো পরিবারের জন্য। এরাইতো রক্ত ঘাম দিয়ে আমাকে এই অবস্থানে এনেছেন। আমার সন্তানকে একটি মর্যাদার আসন দিয়েছেন। আমি মনে করি, এরা আমার পরিবারের অংশ। তাই মেয়ের গায়েহলুদের অনুষ্ঠানটি আমি তাদের সঙ্গে করেছি।

বাংলা৭১নিউজ/এমএম

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com