বাংলা৭১নিউজ, জয়পুরহাট প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার তুলশিগংগা ইউনিয়নের বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার উপকারভোগিদের তালিকা প্রণয়নে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোটিপতি বিধবা করিমননেছা পাচ্ছেন বিধবা ভাতা।
জানা গেছে, ক্ষেতলাল উপজেলার দাশড়া মালিগাড়ি গ্রামের মৃত নওশের আলী দেওয়ানের বিধবা পতœী করিমননেছা তার বিলাশ বহুল দৃষ্টি নন্দন দোতালা বাড়ির বেলকোনিতে দাড়িয়ে আছেন। এই দৃষ্টি নন্দন বাড়িতে তার পুত্র ও কন্যা কেহই থাকেন না । তারা থাকেন জয়পুরহাট জেলা শহরে নিজন্ব বাসাতে। মা করিমননেছাকে দেখ ভাল করার জন্য শফিকুল নামের একজন তার স্ত্রীকে নিয়ে ওই বাড়িতে বসবাস করে। বেলকুনিতে দাড়িয়ে থাকা বিধবা ভদ্র মহিলাকে এ প্রতিনিধি প্রশ্ন করলে তিনি জানান, আল্লাহর রহমতে ভাল আছি বাবা, এতদিন না পেলেও এই প্রথম বিধবা ভাতা পেতে শুরু করেছি মাত্র।
অপরদিকে একই গ্রামের বয়স্ক ভাতা প্রাপ্ত জিয়াউল হক কাজীর বাড়ির দরজায় কড়া নাড়লে তিনি হাস্যজ্জল মুখে বেরিয়ে এসে কুশল বিনিময় করে জানান, আল্লাহর রহমতে এ বারেই বয়স্কভাতার তালিকা ভুক্ত হয়ে প্রথম বারের টাকা উত্তোল করেছি। আমার দুটি ছেলে, দুজনই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত আছেন। কিছু জমাজমিও চাষাবাদ করি। সব নিয়ে বেশ ভাল আছি। একই গ্রামের ফকির পাড়ার বয়স্ক ভাতা প্রাপ্ত আলহাজ আবুল হোসেনের বাড়িতে গিয়ে সাক্ষাত করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আল্লাহর রহমতে ১৯৯৯ সালে হজ্ব পালন করেছি। এক মাত্র ছেলে আব্দুল কাদের মাদ্রাসা শিক্ষক । নিজস্ব ১০-১২ বিঘা জমি চাষাবাদ করি। এবারেই প্রথম বয়স্ক ভাতার টাকা পেয়েছি।
ওই ইউনিয়নের সংরক্ষিত ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য নুরবানু খাতুন জেলা প্রশাসক বরাবরে এবং সমাজসেবা অধিদপ্তরসহ স্থানীয় প্রশাসনকে অবগত করে বিগত ২৮ মে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার উপকারভোগিদের তালিকা প্রণয়নে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ করেছেন। কিন্তু প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় নিয়ম বহিঃর্ভুত ভাবে ধনাঢ়্য ব্যক্তিরা তালিকা ভূক্ত হলেও হতদরিদ্ররা সরকারের এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ওই গ্রামের হতদরিদ্র স্বামী পরিত্যাক্ত জসিম আকন্দর মেয়ে বৃদ্ধা আবেদা অক্ষেপ করে বলেন, আমরা সহায় সম্বলহীন। ধড়পাকরের লোক নাই। ঐ দোতালার লোকেরা ভাতা পাবে, আমরা পাবনা।
ইউপি চেয়ারম্যান হাইকুল ইসলাম লেবু মোল্লা বলেন, নিয়ম নীতি মেনে তালিকা প্রনয়ন করা হয়েছে। দু একটা ত্রুটি বিচ্চুতি থাকতে পারে। উপজেলা সমাজসেবা অফিসার গওসুল আজম বলেন, ইউনিয়ন কমিটি যাচাই বাছাই করে আমাদের তালিকা পাঠায়। আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করি। তবে নিয়ম বহির্ভূত হলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিব।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস