বাংলা৭১নিউজ,(নেত্রকোনা)প্রতিনিধি: নেত্রকোনার দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী নদীর বালু মহালে সীমানা নির্ধারণ ও বালু উত্তোলন নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এক ইজারাদারের ইজারাকৃত বালু মহালে অন্য ইজারাদারের লোকজনের বালু উত্তোলন, সীমানা লঙ্গন করে অন্যের সীমানায় প্রবেশ করছে।
এ ব্যাপারে ২নং বালু মহালের ইজারাদার মোঃ আলাল মিয়া, ৪ নং বালুঘাটের ইজারাদার মোঃ এমদাদুল হক খান, ৫নং ঘাটের ইজারাদার মোঃ চাঁন মিয়া জেলা প্রশাসক বরাবরে পৃথকভাবে লিখিত অভিযোগ করেন। রবিবার ইজারাদাররা বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।
অভিযোগে জানা গেছে, জেলার দুর্গাপুরের তেরী বাজার ঘাট ও শিবগঞ্জ বাজার ঘাট হতে চৈতাটী পর্যন্ত বালু মহাল ইৎারাপ্রাপ্ত হয়ে বালু উত্তোলন করছিলেন ইজারাদার মোঃ আলাল মিয়া। এরই মধ্যে গত ১৩ জুন ১নং বালু মহাল স্থানীয় সার্ভেয়ার বিতর্কিতভাবে বিভাজন করে দেন। পূর্ব থেকে নির্ধারিত ২নং বালু মহালের ১৫০১ নং দাগের ভুমি নতুন করে ১নং মহালের সাথে সংযুক্ত করায় বিতর্ক দেখা দেয়।
এতে করে ১নং বালু মহালের ইজারাদারের লোকজন ২নং বালু মহালের ভিতরে প্রবেশ করে পূর্ব নির্ধারিত সীমানা নির্ধারনী খুঁটি উপরে ফেলে দেয় এবং বালু উত্তোলন শুরু করে। তাদেরকে একাধিকবার বাঁধা দেয়া হয় এবং স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হলেও প্রশাসন কোন কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ নিয়ে যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা আশঙ্কা করছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এ বছর ১নং বালু মহালের ইজারা মূল্য নির্ধারিত হয় ২৭ কোটি ৫১ লক্ষ টাকা, ২নং বালু মহালের ইজারা মূল্য ১২ কোটি ৪ লক্ষ টাকা, ৪নং বালু মহালের ইজারা মূল্য ২ কোটি ৭১ লক্ষ টাকা আর ৫নং বালু মহালের ইজারা মূল্য ২ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা নির্ধারিত হয়।
উপজেলার গাঁওকান্দিয়া মৌজার উত্তর সীমানা হতে দক্ষিন প্রান্ত পর্যন্ত ৪নং বালুঘাট সরকার থেকে ইজারা নেন মোঃ এমদাদুল হক খান। ওই বালুঘাটে অন্য মহালের লোকজন বালু উত্তোলন করতে চেষ্টা করছে। এতে করে বালু উত্তোলন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। ইজারাদার এমদাদুল হক খান নির্বিঘ্নে বালু উত্তোলনের জন্য জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। অন্যদিকে উপজেলার ঝাঞ্জাইল হতে উত্তর শংকরপুর পর্যন্ত ৫নং বালুঘাটের ইজারা পান উপজেলার গুদারিয়া গ্রামের মোঃ চাঁন মিয়া। তার ইজারাকৃত মহালে একইভাবে অন্য মহালের লোকজন প্রবেশ করে বালু উত্তোলন করছে। তিনিও স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে দুর্গাপুরের ১নং বালু মহালের তদারককারী ফারুক আহম্মেদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাদেরকে ইউএনও এবং সার্ভেয়ার ঘাট বুঝিয়ে দিয়েছে। আমরা অন্যের মহালে প্রবেশ করছি না বা খুঁটি উপরে ফেলি নাই। উল্টো আমাদের মহাল থেকে বালু উঠিয়ে নৌকায় করে নিয়ে যাওয়ার সময় ওই তিন ঘাটের লোকজন আটকানোর চেষ্টা করে। এ ব্যাপারে আমরাও জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা খানম বলেন, বালু মহালের একে অন্যের সীমানায় প্রবেশ করে বালু উত্তোলনের বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি ইজারাদারদের মধ্যে সমন্বয় করে কাজ করার জন্য বলা হয়েছে।
নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সরকারি বিধি মোতাবেক বালু মহাল স্থানীয় ইউএনও ও সহকারী কমিশনার ভূমি উপস্থিত থেকে সংশ্লিষ্ট ইজারাদারকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। অন্যের মহালে অবৈধভাবে কেউ প্রবেশ করে বালু উত্তোলন করলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এবি