নরসিংদীর রায়পুরায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের জেরে মো. শফিকুল ইসলাম নামের এক যুবককে গাছে বেঁধে রাতভর পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তারই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পর অভিযুক্ত দুই ভাই আব্দুল মোতালিব ও মাসুম মিয়া এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। রবিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার হাইরমারা ইউনিয়নের দড়ি হাইরমারা দক্ষিণপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শফিকুল ওই এলাকার মৃত মোরশেদ মিয়ার ছেলে।
তিনি পেশায় একজন কুলি ছিলেন। খবর পেয়ে সোমবার সকালে পুলিশ শফিকুলের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
শফিকুলের মা আয়েশা বেগম জানান, তার ছেলে সুমন মিয়ার নামে বাড়িতে একটি মিটার রয়েছে। তিনি টঙ্গীতে বসবাস করেন। বর্তমানে তার সংযোগটি আরেক ভাই মাসুম মিয়া ব্যবহার করে আসছিলেন। পরে একই মিটার থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে চাচ্ছিলেন শফিকুল। তাতে আপত্তি জানান বড় দুই ভাই মোত্তালিব ও মাসুম। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে শফিকুল তার ভাই সুমনের পরিচয় দিয়ে স্থানীয় চরসুবুদ্ধি সাব-জোনাল অফিসে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে আবেদন করেন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লোকেরা গত রবিবার ওই সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করেন। একই সময় মোতালিবের একটি অবৈধ সংযোগ দেখতে পান তারা। পরে তার অবৈধ ও বৈধ দুটি সংযোগই বিচ্ছিন্ন করা হয়। এর জেরে শফিকুলকে বাড়ির আঙিনায় একটি কাঁঠালগাছের সঙ্গে বেঁধে রবিবার রাতভর উপর্যুপরি পিটিয়ে হত্যা করেন মোতালিব ও মাসুম।
শফিকুলের প্রতিবেশীরা জানায়, শফিকুলের স্ত্রী প্রবাসে থাকেন। বাড়িতে তার এক মেয়েশিশু আছে। বড় ভাই মোতালিবের ভয়ে শফিকুলকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসেনি। রাতভর তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘটনার রাতে শফিকুলের মা তার বোনের বাড়িতে ছিলেন। বাড়িতে বড় দুই ভাই মোতালিব ও মাসুমের পরিবার ছিল।
চরসুবুদ্ধি সাব-জোনাল অফিসের এজিএম আব্দুল্লাহ ইবনে আজিজ বলেন, এ ব্যাপারে পূর্বে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। রবিবার সেখানে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। যে দুটি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে তা অবৈধ ছিল।
রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক আতিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘স্থানীয়দের কাছ থেকে জেনেছি বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন নিয়ে ভাইদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। পরে আপন দুই ভাই মিলে শফিকুলকে পিটিয়ে হত্যা করে। নিহতের শরীরে একাধিক আঘাতে চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পাইনি। ‘ জড়িতদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ