বাংলা৭১নিউজ, এম এস এমরান কাদেরী, বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম চট্টগ্রাম-কানুুুনগোপাড়া পদুয়া সড়কে ইট বালির বেন্ডিস দিয়ে ভাঙ্গন ঠেকাতে কাজ করছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ)। কয়েক মাস আগে ২ দফায় প্রায় ১ (এক) কোটি ৪ লক্ষ টাকার সংস্কার কাজ শেষ হতে না হতেই সওজ কতৃক ইট বালির এ বেন্ডিসের ঘটনায় যাত্রী ও এখানকার জনসাধারণের মধ্যে সংস্কার কাজ ও সওজের তদারকি নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, বোয়ালখালী উপজেলার গোমদন্ডী ফুলতল আরাকান সড়ক হতে কানুনগোপাড়া পদুয়া সড়কের প্রায় অংশে ভাঙ্গনসহ বড় বড় র্গতের সৃষ্টি হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ও যাতায়াতকারীদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। ঘটছে প্রতিনিয়ত ছোট বড় র্দুঘটনা। এ সড়কের দু পাশে অসংখ্য জায়গায় খালের ও পুকুর-খাইয়ের ভাঙ্গনে রাস্তার বেশ কিছু অংশে ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে। ফলে যে কোন সময় এসব ভাঙ্গন কবলিত জায়গায় বড় ধরণের র্দুঘটনার আশংকা করছেন এলাকাবাসী। দীর্ঘদিন এসড়কের দিকে নজর না দিলেও হঠাৎ সড়ক ও জনপদ বিভাগ সচেতন হয়ে ভাঙ্গন কবলিত জায়গায় ইট বালির বেন্ডিস দিয়ে খালের ভাঙ্গন ঠেকানোর ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সওজের এসব কান্ড কারখানা দেখে এলাকাবাসী ও যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে জানান তারা। জানা যায়, এ সড়কে গত জুন মাসের শেষের দিকে ২য় দফায় সংস্কার কাজের জন্য ৪২ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। সওজের নির্লিপ্ততায় ও সহযোগীতায় টিকাদারি ও সাব টিকাদারির প্রতিষ্ঠান মাঝে মাঝে লিপস্টিক লাগিয়ে ৪২ লক্ষ টাকা জায়েয করে নেয়। এর আগে ১৭ সালের শেষের দিকে গোমদন্ডী ফুলতল আরাকান সড়ক হতে কানুনগোপাড়া পর্যন্ত এ পদুয়া সড়কের সংস্কারের জন্য ১ম দফায় ৬০ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। স্থানীয় সাংসদের সহযোগীতায় ৬/৭ মাসের মাথায় ২ দফায় প্রায় ১ (এক) কোটি ৪ লক্ষ টাকার বরাদ্ধ দিলেও সংস্কার কাজে র্দুনীতিবাজ ও নাম স্বর্বস্ব টিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সংস্কার কাজের দায়িত্ব দেয়ায় এবং সওজ কতৃপক্ষে অবহেলা ও নির্লিপ্ততায় যেমন খুশি তেমন সাজের কাজ করেছে। ফলে ৩ মাস না যেতেই সড়কের এমন করুন হালের সৃষ্টি হয়েছে। র্দুনীতিযুক্ত এ কাজের স্বচ্ছ তআরকি না করায় গত কয়দিন ধরে সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ)’র কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা সড়ক বাঁচাতে ইট বালির বেন্ডিস দিতে শুরু করেছে।
এদিকে পদুয়া সড়কটির পূর্বাঞ্চল (কানুনগোপাড়া-কড়লডেঙ্গা) পর্যন্ত— সড়কে যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় বন্ধের উপক্রম। র্দীঘদিন কোন ধরণের সংস্কার কাজ না করায় সড়কের কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। সরেজমিন দেখা যায়, সড়কে সৃষ্ট গর্তে পড়ে মালবাহী ট্রাক, যাত্রীবাহী টেক্সি টেম্পোসহ প্রায় সব যানবাহন বিকল হচ্ছে হর হামেশাই। এতে সময় অসময়ে বিভিন্ন স্থানে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া সড়কটির প্রায় অংশে বর্ষায় পানিতে ডুবে গিয়ে জনদুর্ভোগ বাড়িয়ে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে। পার্শ্ববর্তী ছন্দারিয়া খালের ভাঙনে অলি বেকারি থেকে বাদুরতলা ছবুরের দোকান পর্যন্ত দুই কিলোমিটার সড়কের এক পাশ খালে গিলে খাচ্ছে।
এছাড়া সড়কের সৃষ্ট গর্তে প্রায় সময় যানবাহন দুর্ঘটনায় পড়ে উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ব্যবসায়ী হাবীবুর রহমান সুমন, চট্টগ্রাম পলিটেকিèক্যালের ছাত্র মো. আনিসুর রহমান বলেন, এ সড়কে অটোরিক্সা, টেম্পো যোগে প্রতিদিন যাতায়াত করা যে কতবড় ঝুঁকিপূর্ণ তা একমাত্র ভুক্তভোগীরা জানেন। সংশিষ্টরা জানান, সড়কটি স্থায়ীভাবে টিকিয়ে রাখতে হলে পাকা প্রতিরোধক দেয়াল দরকার। তবে জনদুর্ভোগ কমাতে দ্রুত সময়ে সংস্কারের বিকল্প নেই বলে তাদের দাবি। এদিকে দীর্ঘদিনেও সড়ক বিভাগ ও উপজেলা পরিষদ কর্তৃক কোনো সংস্কারের উদ্যোগ না নেওয়ায়
জনমনে অসন্তোষ বিরাজ করছে। উপজেলা পরিষদ থেকে সংস্কারের কোনো পরিকল্পনা আছে কি না জানতে চাইলে বোয়ালখালী পজেলা প্রকৌশলী সুজিত কুমার বলেন, অন্য বিভাগের কোনো সড়কে আমরা কোনো ধরনের সংস্কার বা উন্নয়ন কাজে হাত দিতে পারি না। এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে দোহাজারী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল মিয়া বলেন, সড়কটি একনেকে পাশ হয়েছে। তিনি বলেন, প্রায় ১০ কোটি টাকার বরাদ্দ দেয়া আছে। অর্থ ছাড় পেলে পরবর্তী প্রক্রিয়া আরম্ভ হবে। সড়কটির বর্তমান চিত্র আমাদের নজওে আছে। আপদকালীন বরাদ্দ দিয়ে কিছু কাজ করা হচ্ছে। বড় ধরনের ভাঙ্গন রোধের চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব মঈন উদ্দিন খান বাদল বলেন, বড় ধরনের বাজেটে সড়কটি সংস্কারের লক্ষে টেন্ডার প্রক্রিয়া চলমান। শীঘ্রই তা দৃশ্যমান হবে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস