বাংলা৭১নিউজ,হিলি প্রতিনিধি: দু‘বেলা যার পেটে ভাত জুটতো না, দু‘মুঠো চালের জন্য বর্ষার কাদায় হাঁটতে হয়েছে মাইলের পর মাইল, অর্ধাহারে-অনাহারে কাটাতে হয়েছে দিনের পর দিন, সেই ক্ষিরবালা আজ জীবনের শেষ সময়ে এসে পেলেন মাথা গোঁজার ঠাঁই। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া ক্ষিরবালার মুখে এক চিলতে হাসি দেখে মনে হলো পৃথিবীর সবচেয় খুশি তিনি।
মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার ২নং কাটলা ইউনিয়নকে শতভাগ ভিক্ষুক মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ভিক্ষাবৃত্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা ব্যক্তিদের নানা ভাবে সহায়তা করা হয়েছে। দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মো: মাহমুদুল আলম ভিক্ষুক মুক্ত ঘোষণা করেন। এ সময় বিরামপুর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ২নং কাটলা ইউনিয়ন চত্বরে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো: নাজির হোসেন।
সভায় ওই ইউনিয়নের ২৬ জন ভিক্ষুককে বিভিন্ন ভাবে সহায়তা কর হয় যাতে তারা ভিক্ষাবৃত্তি থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেন। তাদের মধ্যে ছয় জন ভিক্ষুককে ব্যাটারি চালিত ভ্যান, ছয় জনকে থাকার ঘর, ছয় জনকে বিধবা ভাতা, তিন জনকে বয়স্ক ভাতা এবং দুই জনকে কৃষি প্রণোদনা প্রদান করা হয়। বাকি ভিক্ষুকদের নাতি-নাতনিকে শিক্ষা বৃত্তি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মো: মাহমুদুল আলম বলেন, বাংলাদেশ নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের সকল গ্রামকে শহরে পরিণত করার কাজ চলছে। সরকারের লক্ষ্য হলো দেশে কোনো মানুষ যেন ভিক্ষাবৃত্তি না করে। তাই পর্যায়ক্রমে এই ইউনিয়নের মতো সারাদেশকেই ভিক্ষুক মুক্ত করা হবে।
এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: তৌহিদুর রহমান, উপজেলা চেয়ারম্যান মো: খায়রুল আলম রাজু, থানার ওসি মনিরুজ্জামান মনির সহ ওই ইউনিয়নের ২৬ জন ভিক্ষুক, ইউপি সদস্য।
বাংলা৭১নিউজ/এমএম