বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: নৌ শ্রমিকদের ডাকা লাগাতার কর্মবিরতিতের কার্যত: অচল হয়ে পড়েছে নৌপথ। ফলে ভোগান্তির শিকার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নৌপথ ব্যবহার করা মানুষ। ভাটা পড়েছে জরুরী মালামাল বহনেরও। নৌপথে চাঁদাবাজি, শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ ও নৌ শ্রমিকদের বেতন ভাতা পুন:নির্ধারণসহ ১১ দফা দাবিতে গতরাত ১২টার পর থেকে এ কর্মসূচি শুরু করে তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে বলেও জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জানান, আজ সকাল থেকে লক্ষ্মীপুরে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে লাগাতার কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী কর্মবিরতির কারণে ভোর থেকে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীর হাট ঘাট থেকে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার কোন নৌযান ছেড়ে যায়নি। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
মজুচৌধুরীর লঞ্চ ঘাট থেকে দক্ষিনাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ চলাচল করে এ নৌ-রুট দিয়ে।
তাদের একমাত্র যাওয়ার পথ হল এটি।
আন্দোলনরত নৌ শ্রমিকরা জানান, নৌযান শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত, সমুদ্র ভাতা ও রাত্রিকালীন ভাতা পুন:নির্ধারণসহ ১১ দফা দাবিতে ২০১৮ সালের ২৭শে সেপ্টেম্বর একইভাবে কর্মবিরতি দেয়া হয়েছিল। এরপর সরকার ও মালিকপক্ষ কয়েকটি সভা করে দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দেয়ায় কর্মবিরতি স্থগিত করা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও দাবি আদায় না হওয়ায় আবারও কর্মবিরতির ঘোষণা দেয় নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন। শ্রমিকরা বলছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের দাবি মেনে না নেয়া হবে, ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা।
অপরদিকে যাত্রীরা জানায়, হঠাৎ ধর্মঘটে বেকাদায় পড়েছেন তারা। লঞ্চ না ছাড়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে চরম বিপাকে পড়তে হয়েছে। পাশাপাশি ঘাটে কোন খাবার হোটেল ও টয়লেট না থাকায় আরো বড় ধরনের দূভোর্গের শিকার হতে হয় যাত্রীদের। শীঘ্রই লঞ্চ চলাচলের দাবি করেছেন তারা।
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, দেশব্যাপী নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটে অংশ হিসেবে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়িতে অবস্থিত নৌ-বন্দরেও নৌযান কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। সোমবার রাত ১২ টা ১ মিনিট থেকে ১১ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেছেন নৌযান শ্রমিকরা।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- নৌ-পথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতি বন্ধ, ২০১৬ সালের ঘোষিত বেতন স্কেলের পূর্ণ বাস্তবায়ন, শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস দেয়া ও হয়রানি বন্ধ, নদীর নাব্যতা রক্ষা, নদীতে প্রয়োজনীয় মার্কা, বয়া ও বাতি স্থাপন।
অনির্দিষ্টকালের এ ধর্মঘটের ফলে বাঘাবাড়ি ঘাটে অবস্থানরত কোনো জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করা হয়নি। এমনকি বাঘাবাড়ি বন্দর থেকে কোথাও কোনো জাহাজ ছেড়ে যায়নি।
বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ন সম্পাদক আব্দুল ওয়াহাব মাষ্টার বলেন, বাঘাবাড়িতে কেন্দ্রের ডাকা কর্মবিরতি সর্বাত্মকভাবে পালিত হচ্ছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে নদীতে নৌ-যানে শ্রমিকরা আন্দোলন করছেন।
চাঁদপুর প্রতিনিধি জানান, ১১ দফা দাবিতে দেশব্যাপী চলছে শ্রমিকদের নৌ শ্রমিকদের কর্মবিরতি। সোমবার রাত ১২টায় এই কর্মবিরতি শুরু হয়।
জানা গেছে, শ্রমিকদের এই কর্মবিরতির ফলে চাঁদপুর থেকে নারায়নগঞ্জ ও ঢাকা রুটে কোনো লঞ্চ ছেড়ে যায়নি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে চাঁদপুর ও দক্ষিণাঞ্চলের লক্ষ্মীপুর, রায়পুর, নোয়াখালীসহ বেশকিছু এলাকার মানুষ চাঁদপুর-ঢাকা-নারায়নগঞ্জ নৌরুটে লঞ্চে যাতায়াত করে। ভোরে চাঁদপুর নৌ টামিনালে এসে অনেক মানুষ পড়েছে বিপাকে।
বাংলা৭১নিউজ/এস.বি