টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের শান্তা ইসলাম (২২) নামে এক গৃহবধূকে দক্ষিণ আফ্রিকায় পিটিয়ে ও কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। বাংলাদেশ সময় গতকাল রবিবার রাত একটার দিকে স্বামী সুমন মিয়া তাকে খুন করে পালিয়ে যায় বলে জানা গেছে। শান্তা মির্জাপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের থলপাড়া গ্রামের আব্দুস ছালাম শিকদারের মেয়ে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, পার্শ্ববর্তী বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের খোকা মাস্টারের ছেলে সুমন মিয়া প্রায় ৮ বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাড়ি জমান।
সেখানে লাইটেন বার্গ শহরে ব্যবসা শুরু করেন তিনি। গত এক বছর আগে থলপাড়া গ্রামের চাচাতো মামা আব্দুস ছালাম শিকদারের মেয়ে শান্তা ইসলামকে পারিবারিকভাবে মুঠোফোনে ভিডিও কলে সুমন বিবাহ করেন।
গত প্রায় ছয় মাস আগে শান্তা ইসলামকে স্বামী সুমন মিয়া দক্ষিণ আফ্রিকায় তার কাছে নেন। এর কয়েকদিন পর থেকে তাদের দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। ব্যবসার ধরন বৃদ্ধি করার জন্য সুমন শান্তাকে বাবার (শশুর) কাছ থেকে টাকা নিয়ে দিতে চাপ দিতে থাকেন। এক পর্যায় শারীরিক নির্যাতনও চালানো হয়। বিষয়টি জানার পর কয়েক দফায় সুমনকে সাত লাখ টাকা দেন বাবা ছালাম শিকদার। রবিবারও শান্তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়।
বিকেলের দিকে মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে শান্তাকে না পেয়ে ছালাম শিকদার আফ্রিকায় বসবাসরত তার আত্মীয়দের বিষয়টি জানান। রবিবার স্থানীয় সময় রাত নয়টার দিকে (বাংলাদেশ সময় রাত একটা) আফ্রিকায় বসবাসরত কয়েকজন আত্মীয় সুমনের বাসায় যান। বাসায় গিয়ে তালা দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন তারা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তালা ভেঙ্গে ভেতরে শান্তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন।
শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম ও পেটে ১৪টি চাকুর আঘাতের চিহৃ রয়েছে। পুলিশ লাশের পাশ থেকে চাকু, হাতুরি ও রেঞ্চ উদ্ধার করেছে। পুলিশ শান্তার আত্মীয়দের জানিয়েছেন, তার স্বামী তাকে পিটিয়ে ও চাকুর আঘাতের পর মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে গেছে। পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে।
শান্তার ফুফা মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, সুমন ব্যবসা বৃদ্ধির জন্য বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে দিতে শান্তাকে চাপ দিতো। মাঝে মধ্যে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনও করতো। মেয়ের সুখ-শান্তির কথা চিন্তা করে বিভিন্ন এনজিও এবং লোকজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে কয়েক দফায় সুমনকে সাত লাখ টাকা দিয়েছেন। আইনী পক্রিয়া শেষে আগামী বৃহস্পতিবার অথবা শুক্রবার শান্তার মরদেহ দেশে আসতে পারে বলে আফ্রিকায় বসবারসত আত্মীয়রা তাদের জানিয়েছেন।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ