বাংলা৭১নিউজ,(কক্সবাজার)প্রতিনিধি: থার্টিফার্স্ট নাইট বা ইংরেজি নববর্ষ বরণে প্রতি বছর পর্যটন শহর কক্সবাজারে লাখো পর্যটকের সমাগম হলেও এবার আশানুরূপ পর্যটক নেই। এ কারণে এমন একটি বিশেষ দিনেও কক্সবাজারের চার শতাধিক হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউসে অর্ধেকেরও বেশি কক্ষ ফাঁকা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা বলছেন, থার্টিফার্স্ট নাইট ঘিরে সৈকতের উন্মুক্তস্থানে বিনোদনমূলক কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন নেই। এছাড়া, আতশবাজি, পটকা ফুটানোসহ কোনো উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান উদযাপনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে প্রশাসনের, যে কারণে এমন অবস্থার তৈরি হয়েছে।
পর্যটন ব্যবসায়ীদের মতে, প্রতি বছর থার্টিফার্স্ট নাইট ও নববর্ষ উদযাপনে কম হলেও লক্ষাধিক পর্যটক ভ্রমণে আসেন দেশের প্রধান অবকাশযাপন কেন্দ্র কক্সবাজারে। কিন্তু এ বছর চিত্র ভিন্ন। এ কারণে তারা হতাশ।
কক্সবাজার কলাতলীর হোটেল কক্সভিউর জেনারেল ম্যানেজার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টা পর্যন্ত তার হোটেলে যা বুকিং আছে ২০ ভাগেরও কম। হোটেলের অর্ধশতাধিক কক্ষের বেশিরভাগই ফাঁকা পড়ে রয়েছে। অথচ অন্য বছর এ দিনে কোনো হোটেলে রুম পাওয়া ভাগ্যের বিষয়।
কলাতলীর হোটেল সী উত্তরার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. ওসমান গনি বলেন, পুরো কক্সবাজারের কোনো হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউসে আশানুরূপ পর্যটক নেই। আমরা মনে করছি, সৈকতের উন্মুক্ত স্থানে কোনো বিনোদনমূলক আয়োজন না থাকা এবং প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞার কারণেই এ অবস্থা।
তিনি বলেন, থার্টিফার্স্ট নাইট এবং বছরের প্রথম দু’দিনে কক্সবাজারে কয়েকলাখ পর্যটকের সমাগম হতো কিন্তু এবারের পরিস্থিতি উল্টো।
কক্সবাজারের পাঁচ তারকা হোটেল কক্সটুডের সিনিয়র রিজারভেশন সুপারভাইজার তাসবিহা জানান, ডিসেম্বর মাসজুড়েই ভালো বুকিং ছিল কিন্তু থার্টিফার্স্ট নাইট এবং নববর্ষ যদি বলি বুকিং ৫০ ভাগেরও কম।
তিনি বলেন, গত বছর রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে একই অবস্থা ছিল আর এবার সবকিছু স্বাভাবিক তবে পর্যটকদের সাড়া নেই। তবে সৈকতের উন্মুক্ত মঞ্চে এবং আউটডোরে কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা বিনোদনের ব্যবস্থা না থাকাই পর্যটক শূণ্যতার কারণ বলে ভাবছেন সবাই।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রাজা শাহ আলম চৌধুরী বলেন, কক্সবাজারের হোটেল-মোটেলে প্রায় সোয়া লাখ পর্যটকের রাত যাপনের ব্যবস্থা রয়েছে। দুই ঈদ ছাড়াও ইংরেজি নববর্ষের শেষ দিন অর্থ্যাৎ থার্টিফার্স্ট নাইটে সবচেয়ে বেশি পর্যটকের ভিড় হয় এখানে। এসময় হোটেলে কক্ষ বরাদ্দ পাওয়া কঠিন বিষয়। কিন্তু এবার আমরা ভিন্ন চিত্র দেখছি। বিষয়টি নিয়ে সরকারের ভাবা উচিত।
তিনি বলেন, উচ্ছৃঙ্খলতা ও জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠানের ওপর পুলিশের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে ঘরোয়া অনুষ্ঠানের উপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। কিন্তু আশানুরূপ পর্যটক না থাকায় হোটেলগুলোতে ইনডোর আয়োজনও এবার কম।
কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, সৈকতের উন্মুক্ত স্থানে এবার কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন নেই, তবে অনেক হোটেল-মোটেলে ইনডোর আয়োজন করছে। সবমিলে পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় টুরিস্ট পুলিশ কাজ করছে।
তিনি বলেন, থার্টিফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে সমুদ্রসৈকত ছাড়াও আশপাশের যেসব পর্যটক কেন্দ্র রয়েছে সেখানেও টুরিস্ট পুলিশের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। কোনো পর্যটকের ভ্রমণের আনন্দ যেন মলিন না হয়, আমরা সে চেষ্টা করে যাচ্ছি।
বাংলা৭১নিউজ/এসআর